Abhishek Banerjee: জাপানে গিয়ে বাঙালি আবেগে শান দিলেন অভিষেক?
Abhishek Banerjee: রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, ভারতের অপারেশন সিঁদুরের কথা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে গিয়ে অভিষেকের এভাবে আলাদা করে বাঙালি বিপ্লবীকে শ্রদ্ধার্ঘ জানানো যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, তৃণমূলের রাজনীতিতে বাঙালি আবেগ একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বিভিন্ন ভোটের প্রচারে এই বাঙালি আবেগ ধরা পড়ে।

কলকাতা: অপারেশন সিঁদুর ও সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতের পদক্ষেপের কথা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জাপানে গিয়েছেন তিনি। তারই মাঝে সময় বের করে টোকিয়োতে বাঙালি বীর স্বাধীনতা সংগ্রামী রাসবিহারী বসুর স্মৃতি সৌধে শ্রদ্ধার্ঘ জানালেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর স্মৃতিসৌধটি ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই নিয়ে জাপানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অভিষেক। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, জাপানে গিয়ে বাঙালি আবেগে শান দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
স্বাধীনতা সংগ্রামী রাসবিহারী বসুর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার্ঘ জানানোর পাশাপাশি আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনে রাসবিহারীর উজ্জ্বল অবদান স্মরণ করিয়ে দেন অভিষেক। সুভাষচন্দ্র বসুর নেতাজি হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে মূল কারিগর রাসবিহারী বসু যাতে প্রাপ্য মর্যাদা পান, তা নিয়েও সরব হন তৃণমূল সাংসদ। এদিন ওই স্মৃতিসৌধে মাল্যদান করার পর এক্স হ্যান্ডলে অভিষেক লেখেন, বাংলার এই মহান সন্তানের স্মৃতিসৌধটি অবহেলিত ও ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা হৃদয়বিদারক। এদিন ইয়াসুকুনি মন্দিরে গিয়ে রাধাবিনোদ পালের একটি স্মৃতিস্তম্ভেও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন অভিষেক। রাধাবিনোদ পাল ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক সামরিক ট্রাইব্যুনালে নিযুক্ত তিনজন এশীয় বিচারকের একজন।
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, ভারতের অপারেশন সিঁদুরের কথা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে গিয়ে অভিষেকের এভাবে আলাদা করে বাঙালি বিপ্লবীকে শ্রদ্ধার্ঘ জানানো যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, তৃণমূলের রাজনীতিতে বাঙালি আবেগ একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বিভিন্ন ভোটের প্রচারে এই বাঙালি আবেগ ধরা পড়ে। বিরোধী দলের প্রচারে ভিনরাজ্য থেকে কেউ এলে বহিরাগত বলে সরব হয় রাজ্যের শাসকদল। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের প্রচারে সরকারি কর্মসূচিতে গিয়েও সেই বাঙালি অস্ত্রে শান দিলেন অভিষেক।
বাঙালি বিপ্লবী রাসবিহারী বসু ও রাধাবিনোদ পালকে অভিষেকের এই শ্রদ্ধার্ঘ জানানোর বিষয়টি যে তৃণমূল তুলে ধরতে চাইছে, তা তাদের একাধিক সাংসদের বক্তব্যেই স্পষ্ট। তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক ও সায়নী ঘোষ বলেন, “এই কর্মসূচিগুলি অভিষেকের সরকারি কর্মসূচির অন্তর্গত ছিল না। শত কর্মব্যস্ততার মধ্যেও অভিষেক সময় বের করে বাঙালি বিপ্লবীদের শ্রদ্ধার্ঘ জানাতে পৌঁছে গিয়েছেন। বাংলার প্রতি, বাংলার মাটির প্রতি, বাঙালির জন্য তাঁর যে দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতা তা অটুট রেখে বাংলার গর্বদের বিদেশের মাটিতে সম্মান জানিয়েছেন। আমরা তাঁর জন্য গর্বিত।” তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, বাংলার ছেলে অভিষেক বাঙালি বিপ্লবীদের সম্মান জানালেন।
যদিও এই নিয়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “রাসবিহারী বসুকে কেউ যেন আমাদের চেনাতে না আসেন। অভিষেক শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, এটা ভাল। তিনি রাসবিহারী বসুর স্মৃতিসৌধ ভাল করে সাজানোর কথা বলেছেন, এটাকে সবাই-ই স্বাগত জানাবে। কিন্তু আমরা সারা বছর রাসবিহারী বসুকে নিয়ে কাজ করি। বর্ধমানে বিজেপি জেলা কার্যালয়টির নাম তাঁর নামে। সামনের মাসেই আমাদের দলের তরফে সায়ন্তন বসু জাপান যাচ্ছেন রাসবিহারী বসুর স্মৃতিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে।”

