কলকাতা: বিজেপির রাজ্য দফতরে বিক্ষোভ তৃণমূলের। ত্রিপুরায় তৃণমূলের উপর হামলার প্রতিবাদ। ত্রিপুরার আঁচ এসে পৌঁছল শহর কলকাতায়। বিজেপির সদর দফতরে লাগিয়ে দেওয়া হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি।
বিক্ষোভকারী তৃণমূল নেতা বলেন, “বাংলার গণতন্ত্র রয়েছে। আজকে বিজেপির পার্টি অফিসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগিয়ে দিয়ে আমরা প্রমাণ করে দিলাম, তৃণমূল চাইলে বাংলায় বিজেপি পার্টি অফিস নাও খাকতে পারত। প্রয়োজনে বিজেপির পার্টি অফিসও নিয়ে নিতে পারি আমরা। কিন্তু তৃণমূল সেটা করবে না। তৃণমূল গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।” সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে মামলার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে বিপ্লব দেবের নির্দেশে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে ওখানে সভা করতে না পারেন, তার জন্য বিমানবন্দরে মিথ্যা বোমাতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে।”
বিজেপির সদর দফতরের সামনে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তিনি। ত্রিপুরায় তৃণমূলের ওপর হামলার প্রতিবাদের আঁচ এবার শহর কলকাতার বুকে। বিজেপির সদর দফতরের সামনেই তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভ। এরপর তাঁরা মিছিল করে ধর্মতলার উদ্দেশে রওনা দেন। তবে কলেজ স্ট্রিটেই শেষ হয়ে যায় তাঁদের মিছিল।
তৃণমূলের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “বিজেপির পার্টি অফিস তৃণমূল দখল করে নিতেই পারে। সেই সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ তৃণমূল দখলদারিতে বিশ্বাসী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় বলতে গেলে তৃণমূলই ত্রিপুরায় একটি বহিরাগত দল। ওরা আগে ওখানে সংগঠন তৈরি করুক। তারপর তো আন্দোলন। ত্রিপুরায় তো কোনও স্থানীয় তৃণমূল নেতাকে দেখা যায় না। দেখা যায় সায়নী ঘোষ, কুণাল ঘোষেদের। কিন্তু ওঁরা কেন ওখানে গিয়েছেন? ওখানে গুন্ডাবাহিনী পাঠানো হয়েছে। এর আগে পুলিশ গিয়ে আমাদের অফিস ঘেরাও করে দিয়েছে। এখন গুন্ডাবাহিনী পাঠিয়ে করা হয়েছে। ”
সায়নীর পাশে দাঁড়াতে আজই ত্রিপুরা পৌঁছবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তবে সেই আঁচ এবার পৌঁছে গেল দিল্লিতে। ত্রিপুরার ঘটনার জেরে রাজধানীতে আজ একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে ঘাসফুল শিবিরের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছে তৃণমূল। পাশাপাশি, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন সাংসদরা।
ত্রিপুরা যাওয়ার আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ত্রিপুরায় জঙ্গলরাজ চলছে। আইন শৃঙ্খলা নেই। আক্রান্ত সংবাদমাধ্যমও। আমাকে মিছিল করার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। আমরা মাথা নত করব না।”
প্রসঙ্গত, দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর রবিবার বিকেলে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে গাড়ি দিয়ে ধাক্কা মারার চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। ত্রিপুরা পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে। আপাতত তাঁকে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় রাখা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে ত্রিপুরা পুলিশ। জানা গিয়েছে তৃণমূল যুবর সভানেত্রীর বিরুদ্ধে ১২০ বি, ৫০৬, ১৫৩ এবং ৩০৭ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আজ রাতে পুলিশ হেফাজতেই রাত কাটাতে হবে তৃণমূলের যুব নেত্রীকে।
গ্রেফতারির পর বিরক্ত সায়নী জানিয়েছেন, “রাজনৈতিক লড়াই জিনিসটা বিজেপির সিলেবাসে কোনদিনও ছিল না এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না। ক্ষমতার দম্ভে, প্রশাসন ও গুন্ডাবাহিনীকে ব্যবহার করে, ভয় দেখিয়ে ভারতবর্ষের মানুষকে চুপ করিয়ে রাখা যাবে না। গণতন্ত্রকে এভাবে ভুলুণ্ঠিত হতে তৃণমূলের সৈনিকরা দেবে না।”