Minakshi Mukherjee: তৃণমূলও দেখতে চায় ‘মীনাক্ষীর ব্রিগেড’, কেন জানেন

Minakshi Mukherjee: এই মুহূর্তে লোকসভা ভোটের আগে তারুণ্যে ভর করে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া সুজন-সেলিম-বিমানরা। তরুণ তুর্কিদের মুখ করেই ব্রিগেডে ঝড় তুলতে মরিয়া সেলিমরা। মীনাক্ষীকে ক্যাপ্টেন করেই প্লেয়িং ইলেভেনের ছকটাও কষে ফেলেছে আলিমুদ্দিন।

Minakshi Mukherjee: তৃণমূলও দেখতে চায় 'মীনাক্ষীর ব্রিগেড', কেন জানেন
বাঁ দিকে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, ডানদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় Image Credit source: Facebook
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 07, 2024 | 12:44 PM

কলকাতা: লোকসভা ভোটের আগে প্রথম ব্রিগেড বামেদের। জাতীয় স্তরে সিপিএম বন্ধু তৃণমূল। অথচ রাজ্যে উলটপূরাণ অবস্থান। এখনও পর্যন্ত এমন কোনও ক্লু পাওয়া যায়নি, যেখানে তৃণমূল-সিপিএম-কে এক সুতোয় গাঁথা যায়। এখনও দোদ্যুল্যমান অবস্থায় ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যত। আসন রফা নিয়েও সেভাবে কোনও কথা এগোয়নি। এই আবহে বামেদের ব্রিগেড। এখানেই সিপিএম-এর সুর কী হতে পারে, ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। তৃণমূলও চাতক পাখির মতো চেয়ে আছে ব্রিডেগ থেকে সিপিএম তথা বামেরা কী বার্তা দেয়। যদি রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে সিপিএম গলার স্বর চওড়া করে, তৃণমূলও আগামিদিনে কৌশল পরিবর্তন করতে পারে বলে ওয়াকিবহালের মত। 

এই মুহূর্তে লোকসভা ভোটের আগে তারুণ্যে ভর করে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া সুজন-সেলিম-বিমানরা। তরুণ তুর্কিদের মুখ করেই ব্রিগেডে ঝড় তুলতে মরিয়া সেলিমরা। মীনাক্ষীকে ক্যাপ্টেন করেই প্লেয়িং ইলেভেনের ছকটাও কষে ফেলেছে আলিমুদ্দিন। এই ব্রিগেড থেকেই কী লোকসভা ভোটের নতুন রণকৌশল সামনে আনবে সিপিএম? সেই জল্পনাও ক্রমেই তীব্র হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ৩ নভেম্বর থেকে রাজ্যজোড়া যে ইনসাফ যাত্রা শুরু করেছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের কর্মী-সমর্থকেরা তা শেষ হয়েছে ২২ ডিসেম্বর যাদবপুরে এসে। ২৯১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার সময় বামেদের মিছিলে বারবার নজরে এসেছে ভারতের জাতীয় পতাকা। যে জাতীয় পতাকা নিয়ে একসময় বারেবারে বিড়ম্বনায় পড়েছেন আলিমুদ্দিনের নেতারা। তবে কী এবার লোকসভা ভোটের মুখে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে বাম শিবির? উঠছে প্রশ্ন।

জাতীতাবাদী ভাবাবেগে জোর? 

এদিনের ব্রিগেডে সমাবেশে মূলত তিন বিষয়কে সামনে রাখতে চাইছেন বাম নেতারা। দেশ বাঁচাও, রাজ্য বাঁচাও, কাজ ও শিক্ষার অধিকার চাই, দুর্নীতিবাজ-দাঙ্গাবাজ হটাও, এই তিন বিষয়কে সামনে রেখেই এদিনের ব্রিগেডে বার্তা দিতে চলেছে ক্যাপ্টেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সোজা কথায় লোকসভা ভোটের মুখে আঞ্চলিক ও জাতীয় রাজনীতিকে মাথায় রেখে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইছেন বাম নেতারা। সে কারণেই দুর্নীতি ও দাঙ্গাকে এক কোটেশনে রাখতে চাইছেন তাঁরা।  

শুধু মীনাক্ষী নন, এদিন বক্তব্য রাখতে দেখা যাবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাস রায়চৌধুরী, ডিওয়াইএফআইয়ের অল ইন্ডিয়া সেক্রেটারি হিমগ্নরাজ ভট্টাচার্য, এ রহিম, ধ্রুবজ্যোতি সাহারা। 

প্রবীণ-নবীন ‘সিনড্রোম’

যেহেতু এটা ছাত্র-যুবর ব্রিগেড সে কারণে এসএফআইয়ের প্রতিনিধি হিসাবে বক্তব্য রাখবেন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যও। শনিবার সন্ধ্যাতেই আবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়িতে যান মীনাক্ষী-কলতানরা। নিয়ে আসেন প্রবীণ কমরেডের আশীর্বাদ। কথা বলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যের। অসুস্থ বুদ্ধর আশা, রবির ব্রিগেড বড় হবে, ভাল হবে। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সে কথা বলেছেন খোদ মীনাক্ষী। এদিকে প্রবীন-নবীন দ্বন্দ্বে যেখানে বিগত কয়েকদিন ধরে জেরবার তৃণমূল, সেখানে এই ছবি সামনে রেখেই বাম নেতারা বলছেন ওসব প্রবীণ-নবীন ‘সিনড্রোম’ আমাদের নেই। 

ফিরহাদের মিরজাফর খোঁচা 

কিন্তু, ইন্ডিয়া জোটে স্বমহিমায় সিপিএমের থাকা মন থেকে মেনে নিতে পেরেছেন তো বাম নেতারা? এই প্রশ্ন তুলছেন বাম শিবিরেরই অনেকের? প্রশ্ন উঠছে নীতিগত, আদর্শগত দিক থেকেও। তবে সেসবে বিশেষ পাত্তা না দিয়ে মমতার তুলোধনায় অনেক ব্যস্ত দেখিয়েছে সেলিমদের। খোঁচা দিয়েছেন কংগ্রেসকেও। সাফ বলেছেন, “কংগ্রেসকে বুঝতে হবে, যদি ২০১১ সালে কংগ্রেস সমর্থন না করত, তাহলে তৃণমূল ক্ষমতায় আসতে পারত না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হিম্মত ছিল না রাইটার্স বিল্ডিয়ে যাওয়ার।” যদিও ফিরহাদ আবার এই সেলিমকেই মীরজাফর বলে কটাক্ষ করেছেন। তীব্র আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “ইন্ডিয়া জোট ভাঙতে চাইছেন। চক্রান্ত করছেন। উনি মীরজাফরের কাজ করছেন।” 

যদিও এত কিছুর মধ্যে ক্যাপ্টেন মীনাক্ষীর আবার স্পষ্ট দাবি, ডিওয়াইএফআই ভোটের রাজনীতিতে থাকে না। তাবলে কী ভোট নিয়ে কোনও ভাবনাই নেই তাঁর? প্রসঙ্গ উঠতেই কৌশলী উত্তরে বলেছিলেন, “যে ইস্যুতে ভোট হওয়া দরকার সেই ইস্যু রাস্তায় আমরা নিয়ে গিয়েছি। মানুষও সেই ইস্যুতেই ভোট দেবে। ভোটের ইস্যু যদি কর্মসংস্থান হয় তাহলে ইনসাফ যাত্রা ও ব্রিগেড সমাবেশের ইস্যুও নিশ্চয় লোকসভার ভোটে প্রভাব বিস্তার করবে।” এখন দেখার এদিন ব্রিগেড মঞ্চ থেকে ঠিক কী বার্তা দেন ক্যাপ্টেন। সেদিকে যে নজর রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসেরও তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু, খোঁচা দিতে ছাড়ছেন না ঘাসফুল নেতারা। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল আবার আক্রমণ শানিয়ে বলছেন, “বিজেপিকে ভোট দিচ্ছে সিপিএম। সিপিএমের ব্রিগেড নতুন নয়। কিন্তু সিপিএমের ব্রিগেড মানেই সিপিএমকে ভোট নয়।”