দমদম : কয়েক বছর আগে শিক্ষিকাকে জগ ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল ভাঙড়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের (Arabul Islam) বিরুদ্ধে। এবার একেবারে স্কুলে ঢুকে শিক্ষকের (Teacher) গায়ে তোলার অভিযোগ উঠল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উঠেছে মোবাইল ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে দমদমের (Dum Dum) কুমার আশুতোষ ইনস্টিটিউশন ব্রাঞ্চে। সেখানেই এদিন স্কুলের রসায়নের শিক্ষক জয়ন্ত কুন্ডুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্কুলের পরিচালন কমিটির প্রাক্তন সভাপতি তথা এলাকার তৃণমূল নেতা সৃজন বসুর বিরুদ্ধে। ঘটনার সূত্রপাত কোথায়? সূত্রের খবর, এদিন স্কুলের এক ইংরাজি শিক্ষিকা ক্লাসে দুষ্টুমি করায় এক ছাত্র কান ধরে টিচার্স রুমে দাঁড় করিয়ে দেন। যেখানে ওই ছাত্রকে দাঁড়া করানো হয় তার পিছনেই ইন্দিরা গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও গৌতম বুদ্ধের ছবি ছিল। সূত্রের খবর, কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ওই ছাত্রের ছবি তুলতে যান শিক্ষক জয়ন্ত কুন্ডু। তাঁর এই কর্মকাণ্ডের খবর, মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে গোটা স্কুলে। খবর যায় প্রধান শিক্ষকের কাছে। অভিযোগ, এর খানিক পরেই স্কুলে সদলবদেল চলে আসেন তৃণমূল নেতা সৃজন বসু। অভিযোগ, স্কুলে এসেই ব্যাপক মারধর শুরু করেন জয়ন্ত কুন্ডুকে। যদিও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা। যদি তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন ওই শিক্ষক। সে কারণেই তাঁর সঙ্গে কথা বলছিলেন।
তিনি বলেন, “স্কুলের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন। এটা কী কাম্য একজন শিক্ষকের কাছ থেকে? আমাদের এক অভিভাবক বলেছেন তাঁর সন্তানের ছবি তুলেছেন ওই শিক্ষক। তখনই আমরা এ বিষয়ে জানতে স্কুলে যাই। স্কুলটা তো আমাদের ভালবাসার জায়গা। আর ওনাকে মারধর একদমই করা হয়নি। সব সিসি ক্যামেরায় ফুটেজ আছে। উনি যদি এটা বলে থাকেন তাহলে খুবই দুঃখজনক। ওনার সঙ্গে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। উনি তো আমার সঙ্গে বসে চা খান।”
অন্যদিকে রয়াসনের শিক্ষক জয়ন্ত কুন্ডু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে অসম্মানের প্রসঙ্গে আসছে কেন আমি বুঝছি না। ঘটনাচক্রে ওনার একটা ছবির পিছনে ছেলেটা দাঁড়িয়েছিল। তাই ছেলেটার ছবি তুলতে গিয়ে ওই ছবিও এসে গিয়েছে। তবে ওই ছবিটা তোলা আমার মূল উদ্দেশ্য ছিল না। আর ছবিটা আমি কাউকে পাঠাইনি। তাতেই এক মিনিটের মধ্যে এসব ঘটে গেল। টিফিন শেষ হওয়ার পর আমি আড়াইটের সময় ক্লাস টেনের ক্লাস নিতে যাই। ক্লাস শেষ হতেই আমার উপর আক্রমণ করেন তৃণমূল নেতা সৃজন বসু ও তাঁর দলের ছেলেরা। আমার গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে। মোবাইলও আছাড় মারা হয়েছে। এ ঘটনা কোনওভাবেই কাম্য নয়। ঘটনার পর স্কুলের কোনও শিক্ষকও আমার পাশে দাঁড়াননি। সবাই নিজের সময়মতো বাড়ি চলে গিয়েছেন।” এদিকে শেষ পাওয়া আপডেটে জানা যাচ্ছে ওই শিক্ষকের মোবাইল জমা রয়েছে সিঁথি থানায়। ঘটনার বিষয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীর বসাক লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।