Unnatural Death: ৬ ফুটের ছেলে ২৫ কেজি ওজন, নাকতলায় কিশোরের রহস্যমৃত্যুতে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য…
Behala: অভিযোগ, বাবা ও সৎ মা ওই কিশোরকে ওষুধের ওভারডোজ় দিত। তার জেরেই এই পরিণতি।
কলকাতা: নাকতলার এক কিশোরের মৃত্যু ঘিরে দানা বাঁধছে রহস্য। বেশ কয়েকদিন ধরে ওই কিশোর হাসপাতালে ভর্তি ছিল। শুক্রবার মৃত্যু হয় তার। স্নেহাংশু সেনগুপ্ত নামে ওই কিশোরের বাবার দাবি, অসুস্থতাই ছেলের মৃত্যুর কারণ। যদিও স্নেহাংশুর পিসতুতো দিদি এই ঘটনায় বিস্ফোরক দাবি করেন। স্নেহাংশুর মা মারা যাওয়ার পর তার বাবা দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। অভিযোগ, বাবা ও সৎ মা ওই কিশোরকে ওষুধের ওভারডোজ় দিত। তার জেরেই এই পরিণতি। যদিও এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন স্নেহাংশুর বাবা শিশিরকুমার সেনগুপ্ত। তিনি জানান, তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী সবসময়ই সন্তানদের নিজের সন্তান হিসাবেই দেখেন। শিশিরবাবুর আগের পক্ষের এক মেয়েও রয়েছে। স্নেহাংশুর দিদি তিনি। তাঁর বক্তব্য, সৎ মায়ের কাছ থেকে সমস্তরকম মানসিক সমর্থন পান তিনি। ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথা কাটাকাটি হলেও তার সঙ্গে মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি ওই তরুণীর।
স্নেহাংশুর কাকিমা ঈশিতা সেনগুপ্ত বলেন, “আজ ১৭ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিল ছেলেটা কেউ জানতাম না। ওই ছেলের খুব মনের জোর। যখন শেষ দেখলাম হাড় জিরজিরে চেহারা। ৬ ফুটের উপরে উচ্চতা, ওজন মেরে কেটে ২৫ কী ২৬ কেজি হবে। ১৬ বছরের একটা ছেলের এমন চেহারা হয়? কীভাবে এটা হল আমাদের জানা দরকার। দিনের পর দিন ছেলেটা বাড়িতে থাকত না। বাবা খোঁজ নেয়নি। আগে বেহালায় এক বাড়িতে থাকত। চার বছর হল নাকতলায় আলাদা থাকছে। এর মধ্যেই সব বদলে গেল। ওই ছেলেকে নিশ্চয়ই কোনও ওষুধপত্র খাইয়ে এসব করেছে। ছেলেটা একটু জেদী ছিল। কিন্তু মা বাবার ভালবাসা পেত না এটাও সত্যি। আমি বলতাম, একটু ভালবাস দেখবে বদলে যাবে। কিন্তু ওরা কোনও যত্নই নেয়নি।” অভিযোগ, স্নেহাংশু ও তার দিদি পর্ণশ্রী থানায় মা, বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগও জানিয়েছিল একটা সময়। কিন্তু ভাইয়ের মৃত্যুর পর একেবারেই অন্য কথা শোনা গেল দিদির মুখে।
দিদি শ্রীপর্ণা সেনগুপ্ত বলেন, “আমার ভাই যেহেতু পিসি, পিসতুতো দিদিদের সঙ্গে বেশি ঘনিষ্ঠ ছিল, তাই মায়ের সঙ্গে সাধারণ সম্পর্ক থাকলেও ততটা গভীর হয়নি। আগে ভুল বোঝাবুঝি থাকলেও আমার আর মায়ের মধ্যে কিন্তু খুবই ভাল সম্পর্ক। কখনও ঝগড়া, অশান্তি হয়, কিন্তু তা বড় করে দেখার মতো নয়। আমি আমার নিজের মায়ের কাছ থেকে যা পাইনি এই মা আমাকে তা দিয়েছে। আমি এখন ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। এরপরই ওদের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ আনব।”
অন্যদিকে স্নেহাংশুর বাবা শিশির সেনগুপ্তর বক্তব্য, “এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। আমার ছেলে যে কোনও ঘুমের ওষুধ বা ড্রাগ নিত আমি জানি না। ওভার ডোজ কীসের তা জানি না। আমি তো দেখিনি কোনওদিন নিয়েছে। প্রথম হাসপাতালে ভর্তি হয় ১০ মে মাঝরাতে। আমি যেতে পারিনি। শরীর ভাল ছিল না। বন্ধু নিয়ে যায় বাঙুরে। শ্বাসকষ্ট হয়, জ্বর। করোনার ভয় পাই। বোনের মেয়ে যখন অভিযোগ করছেন ওভার ডোজ দাবি প্রমাণ আছে? ছেলেকে মারতে চাইলে হাসপাতালে রেখে আসার দরকার ছিল কি?” নেতাজি নগর থানার পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য এমআর বাঙুর হাসপাতাল থেকে এসএসকেএমে পাঠিয়েছে।