কলকাতা: মৃতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ১৫। আহত-গুরুতর আহতের সংখ্যা অগণিত। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এমন হিংসাত্মক ভোট এবারের পঞ্চায়েতের আগে দেখেনি রাজ্য। এবারের পঞ্চায়েত ভোটের নির্ষণ্ট ঘোষণা থেকে বাহিনী-কাহিনি সব বিতর্কের কেন্দ্রে থেকেছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। ভোটের দিন টিভি৯ বাংলার মুখোমুখি হয়ে রাজ্য সেই রাজীব সিনহা জানিয়ে দিলেন, ভোট কেমন হয়েছে তা বলার সময় এখনও আসেনি। এদিন ভোটে অশান্তি থেকে বুথে গন্ডগোল, প্রাণহানি সব বিষয় নিয়ে কমিশনের অবস্থান জানিয়েছেন তিনি।
ভোটের দিন অশান্তি নিয়ে কমিশন কী পদক্ষেপ নেবে? এই প্রশ্নের জবাবে রাজীব সিনহা বলেছেন, “হিংসার ঘটানো অপরাধ। এটা নিয়ে মামলা দায়ের হবে। তদন্ত করবে পুলিশ। পুলিশ খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেবে।” রাজ্যের ৬০ হাজারের বেশি বুথে ভোট হচ্ছে। বিভিন্ন বুথ থেকেই আসছে গন্ডগোলের খবর। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, “অভিযোগ ঘন ঘন আসছে। নির্দিষ্ট অঙ্ক বলা মুশকিল। তবে আমাদের কাছে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে ৬০০ মতো বুথের সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। আমাদের কাছে তাড়াতাড়ি খবর আসে। সব সময় কন্ট্রোলরুম খোলা রয়েছে। আমাদের আধিকারিকদের কাছেও ফোন আসছে। খবর পেলেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
ভোটগ্রহণের অর্ধেকের বেশি সময় পেরিয়েছে। প্রাণহানির পাশাপাশি একাধিক অশান্তির খবরও এসেছে। এই ভোট কী আদৌ শান্তিপূর্ণ? এই প্রসঙ্গে রাজীব সিনহা বলেছেন, “ভোট কেমন হয়েছে তা বলার সময় আসেনি। শান্তি না অশান্তি তা এখনও বলা সম্ভব নয়। অনেক অভিযোগ এসেছে। যে অভিযোগ এসেছে তা কতটা সঠিক, খতিয়ে দেখতে হবে। সে গুলি নিয়ে রিপোর্ট তলব করা হচ্ছে।”
শনিবার ভোটের দিনও কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল অফিসার এসেছিলেন কমিশনের অফিসে। যদিও কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে রাজীব সিনহা বলেছেন, “মোতায়েন নিয়ে সমস্যা নেই। আমাদের আপডেট করলেন, কত বাহিনী আসছে বা এসেছে। বাকি ফোর্স কোথায় যাবে তা ঠিক করছে পুলিশ।” যদিও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। আদালতের নির্দেশ অবমাননার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল অফিসারকে চিঠিও দিয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের দিনে এখনও পর্যন্ত ১৫ জন হিংসার বলি হয়েছেন বলে খবর মিলছে। যদিও কমিশনের কাছে মাত্র ৭টি খুনের খবর আছে বলে জানা যাচ্ছে। বাকি মৃত্যুর ব্যাপারে এখনও কিছু জানাচ্ছে না কমিশন। যে সব বুথে ব্যালট বাক্স জলে ফেলা হয়েছে বা ভোট হয়নি, সেগুলিতে পুনর্নিবাচনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। কমিশন সূত্রে খবর, যে সব পোলিং অফিসার ডিউটি ছেড়ে চলে গিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করবে কমিশন।