Weather Alert: ভোগাচ্ছে বর্ষা, নিম্নচাপেও নিরাশা, আশঙ্কায় দক্ষিণবঙ্গ

Weather Alert: জুন মাসে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মিলে গিয়েছে। এবার জুলাইতেও সেই পূর্বাভাস মিলে গেলে বিপদে পড়বেন কৃষকেরা।

Weather Alert: ভোগাচ্ছে বর্ষা, নিম্নচাপেও নিরাশা, আশঙ্কায় দক্ষিণবঙ্গ
বৃষ্টির দেখা নেই দক্ষিণবঙ্গে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 02, 2022 | 7:08 AM

কমলেশ চৌধুরী: জুন জুড়ে দক্ষিণবঙ্গকে ভুগিয়েছে বর্ষা। জুলাইে ভরিয়ে দেবে, এমন আশাও দেখা যাচ্ছে না। বরং, আবহাওয়া দফতরের ইঙ্গিতে ঘুম উড়তে পারে বাংলার কৃষকদের। পূর্বাভাস বলছে, জুলাইতেও স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। প্রশ্ন উঠছে, চাষের জমিতে পর্যাপ্ত জল না থাকলে আমন ধান রোপণের কাজ হবে কী করে? তবে কি রোপণ পিছোবে? শুধু ধান নয়, আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে পাট পচানো নিয়েও।

চলতি বছর গোড়া থেকেই গোলমাল। শীতে বারবার বাধ সেধেছিল বৃষ্টি। অথচ, মার্চ থেকে একেবারে উধাও ঝড়-বৃষ্টি। এপ্রিলে নামমাত্র বৃষ্টি হয়েছে এবার। মে মাসে বর্ষণ কিছুটা বাড়লেও, তাতে লাভ হয়নি। জুনে বর্ষা এসেছে নির্ধারিত সময়ের এক সপ্তাহ পরে। তারপরও গোটা জুন জুড়ে বর্ষা দুর্বল দক্ষিণবঙ্গে। একদিনও ভারী বৃষ্টি হয়নি। ফল? ১ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৮ শতাংশে। যার অর্থ, স্বাভাবিকের প্রায় অর্ধেক বৃষ্টিই হয়নি। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ঘাটতি আরও বেশি। শস্যগোলা বর্ধমানেও ৩৮ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে। আশা ছিল, জুলাই যদি পুষিয়ে দেয়! সেই আশাতেও জল।

জুলাই শুধু বর্ষার দ্বিতীয় মাসই নয়। বর্ষায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় জুলাইতেই। অথচ সেই মাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টির পূর্বাভাস। দক্ষিণবঙ্গের কোথাও অতিবৃষ্টির সম্ভাবনাই নেই। পশ্চিমের সামান্য কিছু জায়গায় স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। বাকি তল্লাটে ঘাটতির পাহাড়ই থাকছে। এমনই ইঙ্গিত নয়াদিল্লির মৌসম ভবনের। বৃষ্টি কম হতে পারে উত্তরবঙ্গের মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরেও।

বৃষ্টি কম হওয়ার বিপদ কোথায়? গ্রীষ্ম, প্রাকবর্ষা, এমনকী বর্ষাতেও যেহেতু পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি, তাই গ্রামের খাল-বিল-নালা কোথাওই প্রায় জল নেই। জল নেই চাষের জমিতে। আমন ধানের রোপণ বা পাট পচানো, দুয়ের জন্য় জল জমে থাকা দরকার। কিন্তু চাহিদা আর জোগানের মধ্যে বিপুল ফারাক।

এই ছবিটা অনেকটাই বদলে যেত, যদি বাংলার দুয়ারে একটা নিম্নচাপ হাজির হত। শুক্রবারই বর্ষার প্রথম নিম্নচাপের বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ৪ জুলাই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের কপাল এতটাই খারাপ, সেই নিম্নচাপও সৃষ্টি হতে চলেছে উত্তর ওড়িশার ওপর। ফলে বেশি বৃষ্টি পাবে পড়শি রাজ্যই। বাংলার তেমন লাভ হবে না।

বাংলার লাভ কবে হতে পারে? মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘প্রথমত নিম্নচাপ ওড়িশা ঘেঁষে সৃষ্টি হতে চলেছে। দ্বিতীয়ত, নিম্নচাপটি হবে দুর্বল। ফলে দক্ষিণবঙ্গে আগামী ৬-৭ দিনে ভাল বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছি না। এখন ঘাটতি কমার আশা না করাই ভাল।’

দক্ষিণবঙ্গে যে ঘাটতি থাকতে পারে, তার ইঙ্গিত বর্ষার গোড়াতেই দিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি বৃষ্টির আভাস দেওয়া হয়েছিল। যদিও বর্ষার চার মাস মিলিয়ে দক্ষিণবঙ্গে ঘাটতির আভাস দিয়েছিলেন আবহবিদরা। ঘাটতির পূর্বাভাস ছিল জুনেও। সেই পূর্বাভাস অক্ষরে অক্ষরে মিলেছে। জুলাইতেও মিলে গেলে মহাবিপদে পড়বেন চাষিরা।