কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে যখন একের পর এক মামলা দায়ের হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টে, তখন শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এক মামলার শুনানি চলাকালীন তিনি সিবিআইকে প্রশ্ন করেন, ‘নিয়োগ দুর্নীতিতে আর কারা জড়িত?’ শুধু তাই নয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, ‘প্রাথমিকে যাঁরা জেলে গিয়েছেন, তাঁরা ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ আর কেউ কি এর পিছনে আছেন? তদন্তের অভিমুখ কি অন্য কারও দিকে যাচ্ছে?’ একইসঙ্গে এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘সিবিআইয়ের কর্তব্য আদালতকে জানানো। হয়ত নির্দেশ দিতে পারি আদালতকে না জানিয়ে তাঁদের জামিন দেওয়া যাবে না।’
প্রাথমিকে ২৬৯ জনের চাকরি চলে যাওয়ার যে মামলা সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে শোনার জন্য বলেছিল, সেই মামলার শুনানি ছিল এদিন। সেখানেই বিচারপতি এই মন্তব্য করেন। এর আগে বৃহস্পতিবারও মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, দুর্নীতির পিছনে আরও কি কেউ যুক্ত? এদিনও সেই একই কথা শোনা যায় তাঁর মুখে। তবে সুর আরও কিছুটা কড়া ছিল এদিন।
সিবিআইয়ের যিনি আইনজীবী তাঁকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি বলেন, ৬ জন এই মুহূর্তে জেলে গিয়েছেন। তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আরও কি কেউ পিছনে আছেন? তদন্তের অভিমুখ নিয়েও প্রশ্ন করেন তিনি। পাশাপাশি কারও নাম না করে এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, নতুন করে কথামৃত শোনাচ্ছেন অনেকেই। এই আদালত আশেপাশে সব কিছু দেখছে। তাঁদের হুঁশিয়ারি, তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত কিন্তু পদক্ষেপ করবে। অর্থাৎ এই মামলা নিয়ে বাইরে যাঁরা মন্তব্য করছেন আদালত যে তা নজরে রাখছে এদিন সে ইঙ্গিতও দেন বিচারপতি।
সিবিআই আগামী সোমবার একটা রিপোর্ট তৈরি করবে। যেখানে আদালতকে তাদের জানাতে হবে এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না। তাঁরা কি কোনও পদাধিকারী? প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ৬ জন এই মুহূর্তে নিয়োগ মামলায় ধৃত। তাঁদের সঙ্গেও কথা বলবে সিবিআই। তাঁদের জেরা করে সিবিআই যে তথ্যই পাবে তা আদালতকে জানাতে হবে।