কলকাতা: অতি সম্প্রতি যতগুলি ধর্ষণ বা নির্যাতনের ঘটনা ঘিরে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম বাঁকুড়ার তালডাংরার ঘটনা। এক আদিবাসী ছাত্রীকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ ঘিরে নিন্দার ঝড় ওঠে। বুধবারই ওই নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অভিযোগ, নির্যাতিতার পরিবার তাঁকে ফিরিয়ে দেন। শুভেন্দুর মুখের উপর বলে দেন “আমরা রাজনীতি চাই না। পুলিশ প্রশাসন বিষয়টা দেখছে।” এই পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়ায় বিরোধী দলনেতার। যদিও শুভেন্দু দাবি করেন, পুলিশের চাপের মুখে ভয় পেয়েছে ওই পরিবার। তাঁর সঙ্গে কথাও বলেছেন নির্যাতিতার বাড়ির লোক। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে এই প্রসঙ্গ উঠতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এর জবাব দেওয়ার জন্য তাঁর দলের ব্লক সভাপতিরাই যথেষ্ট। বড় জোর দলের মুখপাত্ররা এ নিয়ে বলবেন। মুখ্যমন্ত্রীর উত্তর দেওয়ার প্রশ্নই নেই।
বৃহস্পতিবার নবান্নে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের কারা কোথায় পড়বেন, বিলেত ফেরত শ্রমিকদের জন্যই বা রাজ্য সরকার কী করেছে তা নিয়ে এই সাংবাদিক সম্মেলন ছিল। সেখানেই তালডাংরায় বিরোধী দলনেতার যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্লিজ আমাকে এসব নিয়ে প্রশ্ন করবেন না। এর জন্য আমার ব্লকের নেতা আছেন। এটা রাজনৈতিক সাংবাদিক সম্মেলন নয়। এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তৃণমূল ভবন আছে। তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি বা তৃণমূলের মুখপাত্ররা এর জবাব দেবেন। আমি না।”
প্রসঙ্গত, বুধবার তালডাংরায় নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবার ফিরিয়ে দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে। তাঁরা এদিন ওই ছাত্রীর বাড়ির লোকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানেই শুভেন্দুদের শুনতে হয়, “আপনারা যেমন এসেছেন, তেমনই চলে যান। আমরা এখানে রাজনীতি করতে চাই না। এই বিষয়ে বেশি কথা বলতেও চাই না।” সেই ভিড়ের মধ্যে থেকেই প্রশ্ন আসে, “আপনারা এত কিছু বলেন, কিন্তু এসব বন্ধ করতে পারছেন কোথায়?” শুভেন্দু অধিকারীর জবাব ছিল, ‘এটা সরকার প্রশাসনের বন্ধ করার দায়িত্ব’। এই কথা শুনেই পাল্টা একজন বলেন, “তাই আমরা প্রশাসনের কাছেই গিয়েছি।”
যদিও শুভেন্দু অধিকারী পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “আমরা আসার আগে পুলিশের অনেক কারসাজি হয়েছে। এরা খেটে খাওয়া পরিবার তো। অ্যাডিশনাল এসপি থেকে অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা এসে এখানে একটা ভয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। যাতে মনের কথা মুখে প্রকাশ না পায়। তবে ওই পরিবার আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে। তদন্ত কতটা কী এগোচ্ছে, তারা তা দেখছে। আমি বলে এসেছি, দরকার হলে বলবেন। আমরা জোর করে কিছুই করব না।”
আরও পড়ুন: CM Mamata Banerjee: ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়ারা কে কোথায় পড়বেন ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, চাকরি দুই শ্রমিককেও