কলকাতা: কর্মসূত্রে বাংলার সঙ্গে তাঁর আগে থেকেই যোগ ছিল। নামের পদবির সঙ্গেও যোগ রয়েছে নেতাজির। বাংলার সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর শুরু থেকেই বাংলা ভাষা শেখার প্রতি বেশ আগ্রহী ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। সরস্বতী পুজোর দিন রাজভবনে তাঁর বাংলায় হাতেখড়িও হয়েছিল আনুষ্ঠানিকভাবে। আর এদিন বাংলার নববর্ষের (Bengali New Year) সন্ধেয় রাজভবনের (Raj Bhavan) অনুষ্ঠানে স্পষ্ট বাংলায় বক্তব্য রাখলেন রাজ্যপাল। বললেন, ‘উপস্থিত অতিথিগণ, শুভ নববর্ষ। আমি বাংলাকে ভালবাসি। আমি বাংলার মানুষকে ভালবাসি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে শ্রদ্ধা করি। সুভাষচন্দ্র বসুকে সম্মান জানাই। আমি স্বামী বিবেকানন্দকে সম্মান করি, সত্যজিৎ রায়কে শ্রদ্ধা করি। বঙ্গভূমি আমার দ্বিতীয় বাসভূমি। আমি বাংলার বায়ুতে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে চাই। আমি বাংলার পুত্র রূপে পরিচিত হতে চাই। আমি আমার হৃদয়ে, রক্তে বাংলাকে স্বীকার করব। আমি পবিত্র বাংলার অঙ্গ হতে চাই। চিত্ত যেথা ভয় শূন্য উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত… জয় পশ্চিমবঙ্গ, জয় হিন্দ।’
সংক্ষিপ্ত বক্তব্য হলেও, গোটাটাই স্পষ্ট বাংলায় অনর্গল বলে গেলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। প্রসঙ্গত, এর আগেও রাজ্যপালের মুখে টুকরো টুকরো বাংলা শোনা গিয়েছিল। তবে এবার একেবারে স্পষ্ট উচ্চারণে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাংলায় বলে গেলেন তিনি। বাংলার সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে আসার পর থেকেই বাংলার সঙ্গে একাত্ম্য হয়ে যাওয়ার ইচ্ছার কথা বার বার বুঝিয়েছেন রাজ্যপাল। এদিন আবারও নিজের অবস্থান বুঝিয়ে দিলেন রাজ্যপাল। জানিয়ে দিলেন, বাংলা তাঁর সেকেন্ড হোম এবং বাংলার একজন হয়ে তিনি পরিচিত হতে চান। উল্লেখ্য, এদিনের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে রাজ্যপালের মুখে শোনা গেল, ‘জয় পশ্চিমবঙ্গ’। অতীতে অবশ্য রাজ্যপালের হাতেখড়ি অনুষ্ঠানে তাঁর মুখে ‘জয় বাংলা’ও শোনা গিয়েছিল। তবে এবার সামান্য বদল এনে রাজ্যপাল বললেন, ‘জয় পশ্চিমবঙ্গ’।
এদিন নববর্ষের সন্ধেয় রাজভবনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের ছিল একেবারে বাঙালি সাজ। পাঞ্জাবি পরে একেবারে বাঙালি লুকে রাজ্যপাল। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শিল্পী, কলাকুশলী ও বিশিষ্ট জনরা। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের লেখা একটি কবিতা এদিনের সন্ধেয় পাঠ করলেন উষা উথুপও।
উল্লেখ্য, এদিন রাজভবনের অনুষ্ঠানের জন্য আসন বুক থাকলেও বেশ কিছু সাধারণ মানুষজন ঢুকতে পারেননি বলে অভিযোগ তুলেছেন। মূলত পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তাঁদের। যদিও রাজভবন সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এক্ষেত্রে ভুয়ো প্রোফাইলের তত্ত্ব উঠে আসছে। সংবাদমাধ্যমের ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে বলেও রাজভবন সূত্রে খবর।