কলকাতা: অতিমারি আবহে দ্বিতীয় দুর্গাপুজোর (Durga Puja) সাক্ষী থাকবে বাঙালি। তাই গত বছরের ন্যায়ে এ বছরও বেশ কিছু কোভিড বিধি মেনেই পুজোর আয়োজন করা হবে। ঠিক কেমন বিধিনিষেধ মেনে পুজোর আয়োজন করতে হবে, তার বিস্তারিত তথ্য জানাতে বুধবার নবান্নে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব। নবান্ন (Nabanna) সূত্রে খবর, বৈঠকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে হাজির ছিলেন সমস্ত জেলার জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার। সেই বৈঠকেই একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যসচিব আজকের বৈঠকে অংশ নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের জানিয়ে দেন, সমস্ত পুজো মণ্ডপের ক্ষেত্রে একটা বিষয় মেনে চলতেই হবে। সেটা হল– মণ্ডপের তিন দিন খোলা রাখতে হবে। একই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি মণ্ডপের ভিতরে যাতে প্রচুর পরিমাণে জায়গা থাকে সেই বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে। লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হল, গতবার পুজো পালনের জন্য যে যে গাইডলাইনগুলি জারি করা হয়েছিল, এ বারও সেগুলি বলবৎ থাকছে।
রাজ্যের মুখ্যসচিব আরও একটি বিষয় মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের। তিনি বলেন, এ বারের পরিস্থিতি একেবারেই গতবারের মতো নয়। গত বছর পুজোর সময় অনেক কনটেইনমেন্ট জোন ছিল। সংক্রমণের সংখ্যাও অনেকটা ছিল। এর জেরে মানুষ অনেকেই ভয়ে বেরোননি। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে। একদিকে ব্যাপক হারে টিকাকরণ হয়েছে, তার মধ্যে আবার করোনার গ্রাফ অনেকটাই নীচে নেমেছে। তাই মুখ্যসচিব অনুমান করছেন, এ বার জনসমাগম অনেক বেশি হবে। প্রশাসনকে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে বলেছেন তিনি।
এর পাশাপাশি মাস্কের ব্যবহারও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। টিকাকরণ যতই হোক না কেন, মাস্ক বাধ্যতামূলক করে রাখতেই হবে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এই নিয়ে জোরকদমে সচেতনতা প্রচার চালানোরও নিদান দিয়েছে রাজ্য। মাস্ক বাধ্যতামূলক করতে হবে, এমনকী রাস্তায় রাস্তায় বলতে হবে মাস্ক পরার জন্য। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বৈঠকে এমনটাই বলেন মুখ্যসচিব, খবর নবান্ন সূত্রে। এ দিনের বৈঠকের গতকালকের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শোনানো হয়।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “কোভিড প্রটোকল মেনে পুজোর আয়োজন করা হবে। সরকার গত বছর যা যা ঘোষণা করেছিল, এ বছরেও সবগুলোই বলবৎ থাকবে।” পাশাপাশি পুজো কমিটিগুলিকে তিনি নির্দেশ দেন, “মাস্ক দেবেন, স্যানিটাইজেশনে নজর দেবেন।” যদিও রাতের কলকাতায় ঘুরে পুজো দেখার ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দেওয়া হবে কি না, সেই সংশয় জিইয়ে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “রাতের দিকে যেহেতু বেশি দর্শনার্থী বের হন, তাই রাতের দিকে ছাড় দেওয়ার বিষয়টা নিয়ে আমরা অবশ্যই ভাববো।” তবে ৩০ সেপ্টেম্বর রাজ্যে ভোট মেটার পরই এই নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে আসা হবে বলে জানিয়েছেন নেত্রী।
আরও পড়ুন: রাত জেগে পুজো পরিক্রমা আদৌ সম্ভব? ভোট মিটলে তারপরই জানাবেন মমতা
আরও পড়ুন: বিধানসভা পিছু ৮ থেকে ১০ কোম্পানি বাহিনী! ৩ কেন্দ্রের ভোটেও থাকবে বন্দুকধারী আধাসেনা