SSKM: চিকিৎসক দিবসে উপহার দিলেন ডাক্তাররাই, অভিষেকের ‘সঙ্গী’ হুইল চেয়ার পেল নতুন গতি…
IIT Madras: এসএসকেএমের ফিজিক্যাল মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক রাজেশ প্রামাণিক জানান, এই হুইল চেয়ারটির বিশেষত্ব হল, খুব তাড়াতাড়ি নড়াচড়া করা সম্ভব এটা নিয়ে।
কলকাতা: সাঁতার কাটতে গিয়ে ঘাড়ে চোট পেয়ে পঙ্গুত্বের শিকার হন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। এসএসকেএমের ফিজিক্যাল মেডিসিনের চিকিৎসায় অভিষেক ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেও পায়ের শক্তি ফেরেনি। কলকাতার নামজাদা বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক অভিষেকের প্রতিদিনে যাতায়াতে এবার জাদুকাঠি ছোঁয়াল এসএসকেএম। এতদিন যে হুইল চেয়ারে তিনি যাতায়াত করতেন, এবার তাতে আধুনিকতার ছোঁয়া। আইআইটি মাদ্রাসের তৈরি ব্যাটারি চালিত হুইল কার চিকিৎসক দিবসে অভিষেকের হাতে তুলে দিলেন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। হুইল চেয়ার সামনের অংশ দেখলে মনে হবে অত্যাধুনিক বাইক। পিছনের অংশ হুইল চেয়ার। পথে নামলে দুই অংশকে জুড়ে তা একেবারে গতিময় হুইল বাইক।
অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “আমার কাজের জায়গায় যাওয়ার জন্য যতগুলো বাধা ছিল, মনে হচ্ছে এবার সবক’টাই কেটে যাবে। আমাকে এখন একটু হয়ত খাটতে হবে। যেহেতু নতুন জিনিস, নিয়ন্ত্রণে রেখে চালাতে একটু অসুবিধা হচ্ছে, হয়ত একটু অভ্যাস করতে লাগবে। তবে আমার বিশ্বাস যে এটা ব্যবহার করে খুব সহজেই আমি আমার কাজের জায়গায় যেতে পারব। আমার এতদিন স্কুলে যাওয়ার জন্য হয় গাড়ি ভাড়া করতে হত বা অন্য কোনওভাবে যেতে হত। এতে অনেকটা খরচ হয়। আমার বেতন এতটাও নয় যে রোজ গাড়ি ভাড়া করে কাজের জায়গায় যাব। অনেকটা মানিয়ে গুছিয়েই আমাকে চলতে হয়। যেটা পেলাম তাতে মনে হয় ম্যানেজ করতে সুবিধাই হবে।”
এসএসকেএমের ফিজিক্যাল মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক রাজেশ প্রামাণিক জানান, এই হুইল চেয়ারটির বিশেষত্ব হল, খুব তাড়াতাড়ি নড়াচড়া করা সম্ভব এটা নিয়ে। এমনকী ছোটখাটো সিঁড়ি থাকলেও তা পার করা সম্ভব এই হুইল চেয়ারে বসে। একইসঙ্গে সামনের দিকে যে স্কুটার আটকানো হয়েছে, তার জন্য অনেক দূরের রাস্তাও যাওয়া সম্ভব এতে বসেই। ব্যাটারিচালিত এই হুইল চেয়ার একবার চার্জ দিলে ৩০ কিলোমিটার অবধি যাওয়া যাবে। অভিষেক নিজেই এই হুইল চেয়ার চার্জ করে স্কুল কিংবা বাজারদোকান করতে পারবেন।
এসএসকেএমের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আসলে ফিজিক্যাল মেডিসিন রিহাবিলিটেশন ডিপার্টমেন্টে এখন সুযোগ সুবিধা এখন অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। মানুষকে একেবারে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেওয়া অবধি এরা কাজ করছে। অনেকদিন ধরেই হুইল চেয়ার একটু অন্যরকমভাবে ভাবনাচিন্তা হচ্ছিল। যার যেরকম হুইল চেয়ার দরকার, তাকে ঠিক তেমনই যেন হুইল চেয়ার দিতে পারি তা নিয়ে ডাক্তার এবং ফিজিক্যাল মেডিসিনের যাঁরা আছেন, প্যারামেডিক্যাল, সকলকেই সচেতন করার দরকার ছিল। যাঁকে এই হুইল চেয়ারটা দেওয়া হল, তিনি একটা ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ জীবনে সামলেছেন এবং হাসিমুখে সেই লড়াই করে যাচ্ছেন। আমরা সবসময় তাঁর পাশে আছি।”