কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কট এবং তাঁর বাড়ির সামনে পোস্টারিংয়ের ঘটনায় কড়া আদালত। কারা এভাবে পোস্টার দিল, কীভাবে এই পোস্টার ছাপা হল, কোথা থেকেই বা ছাপানো হল জানতে চান হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ। কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে তাও জানতে চায় আদালত। এই ঘটনায় কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে রিপোর্ট তলব করা হল। তিনি রিপোর্ট দিয়ে জানাবেন কীভাবে এই পোস্টার ছাপা হল। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্ট-সহ এই বিষয়ে কোথাও কোনও বিক্ষোভ অবস্থান করা যাবে না, স্লোগান, ব্যানার দেওয়া যাবে না বলে নির্দেশ দিল তিন বিচারপতির বেঞ্চ। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কটের ঘটনায় তিন বিচারপতিকে নিয়ে বিশেষ বেঞ্চ তৈরি করে দেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই বৃহত্তর বেঞ্চে আছেন বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস। তাঁরাই এদিন এই নির্দেশ দেন। রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে লেক থানার কাছ থেকেও। ২ ফেব্রুয়ারি ফের এই মামলার শুনানি হবে।
এভাবে এজলাস বয়কট করে বিক্ষোভ দেখানো, বিচারপতির বাড়ির সামনে পোস্টার দেওয়া কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতির বেঞ্চ এদিন জানায়, কারা সেদিন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁদের শনাক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে শাসকদলের নেতাদের নামও অভিযোগের খাতায় উঠে এসেছে, যাঁরা বিচারপতির বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর মন্তব্য’ করেছিলেন। তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই কড়া পথে হাঁটতে পারে আদালত। মঙ্গলবারের শুনানিতে অন্তত তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে।
তাপস মাইতি নামে একজন ঘটনার দিন রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি লিখে ১১ জন আইনজীবী ও একজন রাজনৈতিক নেতার নাম জানান। বিচারপতির নামে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্যের অভিযোগ রয়েছে ওই নেতার বিরুদ্ধে। এজলাস বয়কটের ঘটনায় নাম রয়েছে ১১ জন আইনজীবীর। প্রথমে এটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হিসাবে গ্রহণ করা হয়। আদালতের নির্দেশেই গঠিত হয় তিন বিচারপতিকে নিয়ে বেঞ্চ। এদিন সেই মামলার শুনানি ছিল।
শুরুতেই রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ডেকে পাঠানো হয় এদিন। জানতে চাওয়া হয়, কী কী ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে এই ফুটেজগুলি খুলতে গেলে একটি সার্টিফিকেট লাগে। এদিন সেই কাগজপত্র জমা দিতে বলে আদালত। ৯ জানুয়ারি থেকে যে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে, তা ১০ জানুয়ারি, ১১ জানুয়ারিও চলে। এমনকী সোমবার বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার সদস্যদের সামনেও পোস্টার নজরে আসে। কলকাতা হাইকোর্টে সেই পোস্টার, ব্যানার মঙ্গলবারও রাখা ছিল। সেগুলিকে হঠিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয় আদালত। এদিন বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আইনজীবী রানা মুখোপাধ্যায় দুঃখপ্রকাশ করেন। তবে তা খুব একটা গুরুত্ব পায়নি। আদালত জানিয়েছে, এগুলো পরে বিচার্য।