কলকাতা: সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় ডি.লিট সম্মানে সম্মানিত করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (CM Mamata Banerjee)। সোমবার সেই অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল বোস বলেন, যোগ্য মহিলা নেত্রী হিসাবে এত বড় সম্মান পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এটা রাজনীতির জন্য নয়। এই সম্মান তিনি রাজ্যের মানুষের কাছ থেকেই পেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তুলে আনেন মনুস্মৃতির শ্লোক। বলেন, “যত্র নারীয়াস্তু পূজ্যন্তে রমন্তে তত্র দেবত। একজন নারী যখন সম্মানিত হন দেবতাও হর্ষিত হন।” চার্চিল, মিল্টন, বাজপেয়ীর উন্নয়নযজ্ঞের সঙ্গে একই সারিতে মমতাকে বসান রাজ্যপাল। রাজনীতির গুরুত্বভার কাঁধে নিয়েও লেখালেখিতে নিজেদের ছাপ রেখেছেন এমন বহু গুণী রয়েছেন। এ প্রসঙ্গেই তুলে ধরেন চার্চিল, মিল্টন, বাজপেয়ীর কথা। রাজ্যপালের বক্তব্য, মিল্টনের লেখার কথা সকলেরই জানা। কিন্তু একইসঙ্গে তিনি ছিলেন একজন ‘স্টেটসম্যান’। দেশের কমনওয়েলথ অ্যাফেয়ার্সে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। যদিও রাজ্যপালের এই বক্তব্যকে সামনে রেখে রাজনৈতিক তরজা শুরু।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করবেন, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের প্রশংসা করবেন এটা হওয়াই তো ভাল। ইদানিং তো মুখ্যমন্ত্রী প্রাক্তন রাজ্যপালেরও প্রশংসা করেন। যে কোনও কারণেই হোক রাজ্যপাল সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর মনোভাব বদলেছে। হয়ত দিল্লির চাপে। হতেই পারে। তবে রাজ্যপালকে আমার এতটুকুই বলার, ডিলিট পেয়েছেন ভাল কথা। উনি কিন্তু পিএইচডিও পেয়েছেন নিজের যোগ্যতায়। যদিও পরে দেখা যায় সেটা ভুয়ো। উনি কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও ডি.লিট পেয়েছেন। সেটাও নিজের যোগ্যতায়। পরে দেখা গেল ডি.লিটের প্রস্তাবক এখন জেলে বসে আছেন।”
বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “একটা সৌজন্য হিসাবে মঞ্চে কেউ কারও সম্পর্কে বলতে পারেন। সেটা নিয়ে রাজনীতি হয় না। উনি হাতেখড়ি নিয়েছেন, শিখছেন। আরও শিখবেন। দেখা যাক কী হয়। রাজ্যপাল কী বললেন বা কী না বললেন, সেটা মানুষ কতটা গ্রহণ করবে সেটা মানুষের উপর নির্ভর করবে। মানুষ ১১ বছরে যে শিক্ষা নিয়েছেন, তা রাজ্যপাল যদি শুনতে না পান বা শুনেও যদি না শোনেন আমাদের কিছু করার নেই।”
এর আগে ২০১৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও সাম্মানিক ডি.লিট. দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রাক্তন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এই সম্মান তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং সামাজিক ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সে বছর এই সম্মান পান তিনি। সে সময় ডি.লিট নিয়ে মমতা বলেছিলেন, এ সাম্মানিক তিনি সাম্মানিক হিসাবেই রাখবেন। কোনওদিন ব্যবহার করবেন না। একইসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, তাঁর জীবন পূর্ণতা পেল। এদিনও ডি.লিট পাওয়ার পর এই সম্মান সাধারণ মানুষের উদ্দেশে উৎসর্গ করেন মমতা। বলেন, তিনি আজীবন সাধারণ মানুষ হয়েই থাকতে চান। এই সম্মান তাঁকে অনুপ্রাণিত করে।