কলকাতা: নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের (Trinamool) সভা। সোমবারের সেই সভায় ছিলেন দলের বিধায়ক, সাংসদরা। রাজ্যস্তরের নেতা, জেলা, ব্লক, এমনকী পঞ্চায়েত স্তরের নেতৃত্বও ছিলেন উপস্থিত। সেখানেই দলের তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বলেন, শুধু গান করবে, কোনও দায়িত্ব নেবে না তা হয় না। দলের বিভিন্ন সেলের ভূমিকা নিয়ে কথা বলছিলেন মমতা। সে সময় কালচারাল সেলের কথা ওঠে। নিষ্ক্রিয় সাংস্কৃতিক সেলের ভূমিকায় সেই সময়ই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কালচারাল সেলটাকে অ্যাক্টিভ করতে হবে। ইন্দ্রনীল করল না।” এরইমধ্যে দর্শকাসন থেকে ইন্দ্রনীল সেন কিছু একটা বলার চেষ্টা করেন। এরপরই কিছুটা বিরক্ত হয়ে মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, “এই শোনো তুমি, রাজ আর বাবুল সুপ্রিয় তিনজনে বসবে। জুন আছে, সোহম আছে। যারা সময় দিতে পারে, পার্টির জন্য ভাবে চার পাঁচজন মিলে বসতে পার না? সুভদ্রা কত বলে কাজ করতে চায়, ওকে যুক্ত কর। করে দেব বলে ব্যস! আরে রাজকে দায়িত্ব দিয়েছি বলে তোমার দায়িত্ব নেই? তুমি গান গাইবে, আর রাজকে দায়িত্ব দিয়েছি বলে সব ওর মাথায় ঠেলে দেবে, বাহ! এটা তো একটা পরিবার। তোমরা একটা সাংস্কৃতিক পরিবার তৈরি কর। টনিকে ডেকে নাও।”
শুধু তাই নয় এদিন ১১ জনের নামও ঘোষণা করেন মমতা, যাঁরা এখনও দলের কর্মসূচির জন্য দলকে সময় দেননি। সেখানে প্রথম নামই দোলা সেনের। নাম রয়েছে দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়েরও। এছাড়াও দেব, মিমি, নুসরত, জুন মালিয়া, চিরঞ্জিত, মনোজ তিওয়ারি, শত্রুঘ্ন সিনহার নাম রয়েছে তালিকায়।
এদিন মমতা বলেন, “৬ তারিখ থেকে বিধানসভা শুরু হবে। শোকপালন হবে ওদিন। ৮ জানুয়ারি থেকে যতদিন বাজেট সেশন হবে প্রত্যেক বিধায়ককে থাকতে হবে। সাংসদরাও থাকবেন। শনিবার, রবিবার দলকে দেবেন। ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য দিতে হবে। জানুয়ারিতে সকলে সময় দিয়েছে।” এরপরই নাম ধরে ধরে মমতা বলেন, “এখনও পর্যন্ত দোলা সেনের সময় দল পায়নি। শত্রুঘ্ন সিনহারটাও আমরা পাইনি। ও অতটা পারবে না। যতটা পারব ওকে ভোটে কাজে লাগাব। নুসরত সময় দেয়নি। দেব, মিমি ওরা একটু ফিল্ম করে, ছাড় দরকার। জুনও দেয়নি সময়। তবে ও তো এলাকায় কাজ করে।”
এরপরই প্রশ্ন তোলেন কেন “সৌগতদা এখনও দেননি? উনি তো খুবই অ্যাক্টিভ। সিএম জাটুয়া অসুস্থ। উনি সুস্থ থাকুন। কল্লোল খাঁ হার্টের সমস্যা থাকা সত্ত্বেও ডাক্তার দেখান না। তুমি কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার প্রেসিডেন্ট হয়েও সময় দাওনি এখনও।” সময় দেননি চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। তাঁর বিষয়টি কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে দেখে নিতে বলেন। মনোজ তিওয়ারি খেলাধূলায় ব্যস্ত থাকেন বলে কিছুটা ছাড় পান নেত্রীর কাছে।
এদিনই তৃণমূল ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির ঘোষণা করে। মূলত সেই কাজের জন্যই দল বিধায়ক, সাংসদদের সময় চেয়েছিল। তিনি বলেন, “তৃণমূলের বড় কাজ হল সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলা। সর্বধর্ম সমন্বয়। এখন প্রচারের থেকে অপপ্রচার বেশি হয়। সেটা রুখতে আপনারও দায় আছে। আমি একদিন আমার কর্মীর সঙ্গে গিয়ে বাড়িতে থাকলে কী সমস্যা? মধ্যাহ্নভোজ করব মানে এলাহি ভোজ নয়। একটা ডাল, একটা তরকারি, একটা ডিমের ঝোল বড় জোর। অথবা গ্রামে কুচো মাছ পাওয়া যায়। আমিও চেষ্টা করব এতে শামিল হওয়ার।” তবে এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো স্পষ্ট বার্তা দেন, দলে ‘ভিজিল্যান্স’ চলবেই। আর তা দলের স্বার্থেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।