কলকাতা: রাজ্যপালের প্রধান সচিব নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরানো হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। রবিবার রাতেই এই খবর সামনে এসেছে। সূত্রের খবর, রাজ্যপাল নতুন টিম তৈরি করছেন। তাই সরানো হচ্ছে নন্দিনীকে। সূত্রের দাবি, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ইচ্ছাতেই সরানো হচ্ছে তাঁর প্রধান সচিবকে। সিভি আনন্দ বোসের আগে পূর্ণ সময়ের রাজ্যপাল ছিলেন জগদীপ ধনখড়। তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যের সংঘাত দেখা গিয়েছিল। কখনও কখনও রাজ্য-রাজভবন তরজা সপ্তমেও পৌঁছেছে। তবে জগদীপ ধনখড় উপরাষ্ট্রপতির ভোটে লড়ার জন্য রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দিতেই সাময়িক সময়ের জন্য এই পদে আসেন লা গণেশন। তাঁর সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল ছিল। এরপর রাজ্যপালের দায়িত্ব নেন সিভি আনন্দ বোস। তাঁর শপথ অনুষ্ঠান থেকেই রাজ্যের সঙ্গে সুসম্পর্কের আভাস মিলেছিল। এরপর সময় যত এগিয়েছে, সে সম্পর্ক নজরে পড়েছে। এ নিয়ে বিজেপির বিস্তর অভিযোগও ছিল। কখনও সরাসরি, কখনও ঘুরিয়ে সে কথা বলেছেন বঙ্গের বিজেপি নেতারা।
সম্প্রতি সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন রাজ্যপাল। সে সময় বিজেপি নেতারা বলেছিলেন, ধীরে ধীরে ভুল ভাঙবে। তাঁদের বক্তব্য ছিল রাজ্যপালকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। বিধানসভার অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণের সময় বিজেপি বিধায়কদের শোরগোল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়। তবে তাল কাটে শনিবার। রাজভবনে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সুকান্ত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন, রাজ্যপাল তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, কোনও দুর্নীতি ও হিংসা মান্যতা পাবে না।
আর এদিনই বীরভূমের ময়ূরেশ্বরে দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ফাঁদে উনি পা দিয়েছেন। রাজ্যপাল ভাল মানুষ। শিক্ষিত লোক। উনি ট্র্যাকে ফিরে আসুন, সঠিক রাস্তায় ফিরে আসুন। গোপাল কৃষ্ণ গান্ধী ও জগদীপ ধনখড়ের দেখানো পথে সাংবিধানের রক্ষক হিসেবে উনি কাজ করুক। আমার বিশ্বাস, উনি ট্র্যাকে আসতে শুরু করেছেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন। উনি আস্তে আস্তে ট্র্যাকে ফিরছেন, এটা আমাদের জন্য ভাল।”
একইসঙ্গে শুভেন্দুকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “সাংবিধানিক পদে রাজ্যপাল বসে আছেন। তাঁর সম্পর্কে আমি কোনও কথাই বলব না। আমি যতবার ওনার সম্পর্কে বলেছি, ততবারই বলেছি ওনার সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী ভুল বোঝাচ্ছেন।” সুকান্তের রাজভবনে যাওয়া এবং শুভেন্দুর মন্তব্যের পাল্টা দেয় তৃণমূল। শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতর। আর এই আবহেই নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরানো হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। এই নিয়ে নতুন করে রাজ্য-রাজনীতি তপ্ত হয় কি না, সেটাই দেখার।