কলকাতা: ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী। সেখান থেকেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) ভূয়সী প্রশংসা শোনা গেল কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের (Madan Mitra) মুখে। তাঁর কথায়, দলের অন্দরে যদি কোনও দলাদলি থাকে তা মেটাতে পারেন একমাত্র অভিষেকই। একইসঙ্গে মদনের বার্তা, “মেরে নয়, এবার যেন হৃদয়ে নাম লিখে পঞ্চায়েত দখল করতে পারে।”
এদিন মদন মিত্র বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কমানোর কথা বলেছেন। ঠিকই তো বলেছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই পারেন এটা কমাতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর পক্ষে এখন আর এতটা সময় নেই পার্টির ম্যান টু ম্যান, ওয়ার্ড টু ওয়ার্ড দেখবেন। মাঝখানে অভিষেক অসুস্থ ছিলেন ঠিকই। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি অভিষেকই একমাত্র সঠিক মানুষ যিনি সবরকম ঝামেলা থামাতে পারেন।”
একইসঙ্গে মদন মিত্রের বক্তব্য, ঠিক যেভাবে সম্প্রতি দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে পূর্ব মেদিনীপুরে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে দল, সেভাবেই দায়িত্ব দেওয়া হোক দলের পুরনো নেতাদেরও। এদিন মদন মিত্র বলেন, “কুণালকে যেমন হলদিয়া দেওয়া হয়েছে, ১০০ জন পুরনো নেতাকে বেছে নেওয়া হোক। তাঁদের প্রত্যেক পকেটে পকেটে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। জিতে এলে তাঁদের রিওয়ার্ড দেওয়া হোক। রিওয়ার্ড মানে মন্ত্রিত্ব চাই না, হাতে একটা মেমেন্টো দিলেও চলবে। তবে যদি জিততে না পারো তাহলে মাথা তুলে কথা বলবে না। এখন থেকেই চলুক না, চ্যালেঞ্জ নেওয়া যাক না।
মদনকে যদি এরকম দায়িত্ব দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে তিনি যে নন্দীগ্রাম, কাঁথি চান নিজেই জানালেন সে কথা। মদন মিত্র বলেন, “আমাকে যদি কাজের দায়িত্ব দিতে চায় আমি প্রথম দায়িত্ব চাইছি নন্দীগ্রাম, কাঁথি এলাকার। আমায় পূর্ব মেদিনীপুর দেওয়া হোক কিংবা খড়গপুরে দেওয়া হোক। দল বললে আমিও কথা দিচ্ছি রইল ঝোলা চলল ভোলা। আমি দু’মাসের জন্য পড়ে থাকতে চাই। কথায় আছে, হৃদয়ে লেখো নাম, সে নাম রয়ে যাবে। এবার পঞ্চায়েতে মেরে নয়, হৃদয়ে নাম লিখে যেন তৃণমূল পঞ্চায়েত জেতে। আমার দলের কাছে আবেদন, আমি পালতোলা নৌকায় রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে গাইতে পঞ্চায়েত নির্বাচন জিততে চাই।”
যদিও বিরোধীরা মদনের এই বক্তব্যের কটাক্ষ করেছে। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “মদন মিত্র যদি এ উপদেশ দলকে দিতে পারেন, আর সত্যি যদি এটা করাতে পারেন, তাহলে গোটা পশ্চিমবঙ্গের প্রান্তিক মানুষের, গ্রামাঞ্চলের মানুষের হৃদয়ে মদন মিত্রের নাম লেখা থাকবে। কিন্তু এটা হবে না। এটা তো সোনার পাথরবাটি। কাঁঠালের আমসত্ত্ব। এটা যে তৃণমূল কংগ্রেসে সম্ভব নয় তা মদন মিত্রও খুব ভালভাবে জানেন। সে জন্যই এই বক্তব্য রেখেছেন।”