কলকাতা: গ্রেফতার হয়েছিলেন পেশায় প্রধান শিক্ষক বাবা। কিন্তু গত পাঁচ মাস ধরে দুঁদে তদন্তকারীদের নজর এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন ছেলে। তিনিও মুর্শিদাবাদের সুতির শিক্ষক। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনই হল কাল! ভোট দিতে এসেই সিআইডি-র হাতে গ্রেফতার হলেন শিক্ষক।
ফেব্রুয়ারি মাস। শিক্ষক নিয়োগে ধরপাকড় নিয়ে তখন গোটা রাজ্য তোলপাড়। এই মামলায় তদন্তে নেমেই তদন্তকারী সংস্থার নজরে পড়ে মুর্শিদাবাদের সুতির গোঠা এ আর রহমন হাইস্কুল। বেআইনিভাবে শিক্ষক নিয়োগের ঘটনায় তদন্তকারীদের নজরে পড়ে এই স্কুল। এই স্কুলের শিক্ষক অনিমেশ তিওয়ারির বিরুদ্ধে নথি জাল করে স্কুলে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি আদালতের নজরে আসে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অনিমেশের স্কুলে আসা ও বেতনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন অনিমেশ।
তদন্তে একাধিকবার স্কুলে যান সিআইডি আধিকারিকরা। স্কুলের নথিপত্র খতিয়ে দেখা হয়। সবথেকে উল্লেখ্যযোগ্য ব্যাপার, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই অনিমেশের বাবাই ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। অভিযোগ ওঠে, তিনিই প্রভাব খাটিয়ে ছেলেকে স্কুলে চাকরি করিয়ে দিয়েছেন।
বহরমপুরে জেলা শিক্ষা দফতরেও তদন্ত চালায় সিআইডি টিম। গ্রেফতার হন স্কুলের প্রধান শিক্ষক অর্থাৎ অনিমেশের বাবা। কিন্তু অনিমেশের টিকি ধরতে পারছিলেন না তদন্তকারীরা। গত পাঁচ মাস ধরে তাঁর খোঁজে চলেছে একাধিক তল্লাশি। কিন্তু কোনও সূত্রই পাননি তদন্তকারীরা। কিন্তু হায় রে পঞ্চায়েত নির্বাচন!
বাংলার নির্বাচন, এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচন, গুরু দায়িত্ব! তদন্তকারীদের ভয়ে যেখানে গা ঢাকা দিয়েছিলেন এত মাস, সেখানে গণতান্ত্রিক দেশের এই প্রধান মৌলিক কর্তব্য পালন করতে এসে বিপাকে শিক্ষক। পঞ্চায়েত ভোট দিতে গ্রামের বাড়িতে ফিরতেই সিআইডি-র হাতে গ্রেফতার অনিমেশ তিওয়ারি। জঙ্গিপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
হাইকোর্টের নির্দেশে মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। জেরায় জানা গিয়েছে, অনিমেশ দীর্ঘদিন বিহারে পালিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত ভোট দিতে বাড়িতে আসার খবর পেয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে সিআইডি।