কলকাতা: এবার থেকে পুলিশের কনস্টেবল পদে আবেদন পত্র জমা দিতে পারবেন রূপান্তরকামীরাও। তাঁরাও কনস্টেবল হতে পারবেন। এমনই সিদ্ধান্ত নিলেন রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। আজ রবীন্দ্র সদনে ট্রান্সজেনডারদের পরিচয় পত্র ও সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে এসে তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কনস্টেবল নিয়োগের একাধিক নিয়ম তৈরি করেছেন। সেই নিয়মের মধ্যে থেকেই ট্রান্সজেন্ডাররা এবার থেকে লেডি কনস্টেবল পদে আবেদন করতে পারবেন। শীঘ্রই এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। রাজ্য সরকারের তরফে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত গত বছরই রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল পুলিশের রূপান্তরকামীদের চাকরিতে সুযোগের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। রূপান্তরকামীদের জন্য বিশেষ সংরক্ষণের কথা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার তা কার্যকরী হল। ২০১৯ এর কেন্দ্রীয় ট্রান্সজেন্ডার অধিকার সুরক্ষা আইন অনুযায়ী বিশেষ বিধি তৈরি করেছে রাজ্য।
রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, চাকরিতে মহিলাদের ক্ষেত্রে যে সংরক্ষণ রয়েছে, তার এক শতাংশ থাকবে রূপান্তরকামীদের জন্য। যে শারীরিক ক্ষমতা পুলিশ কনস্টেবল হওয়ার ক্ষেত্রে মাপকাঠি হিসাবে নির্ধারিত হয়,সেটি রূপান্তরকামীদের জন্য ভিন্ন ভাবে মূল্যায়ন হবে। ঠিক হয়েছে, ঠিক হয়েছে উচ্চতা কিংবা অন্যান্য শারীরিক সক্ষমতার ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে কম এবং মহিলাদের থেকে বেশি হবে রূপান্তরকামীদের জন্য।
শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছে রূপান্তরকামীদের জন্য। কারণ বর্তমানে আর্থ সামাজিক পরিস্থিতিতে এমন অনেক রূপান্তরকামী রয়েছেন, যাঁরা স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পর্যন্ত পান না।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে নালসা রায় দিয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। রূপান্তরকামীদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ বলে মর্যাদা দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, সংবিধানে নাগরিকদের জন্য যে মৌলিক অধিকারের উল্লেখ রয়েছে, তা তৃতীয় লিঙ্গের জন্যও সুনিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে তাঁদের শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সংরক্ষণের বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে। বলাইবাহুল্য, এটি রাজ্য সরকারের প্রশংসনীয় পদক্ষেপ।
এটিএইচবি-র সেক্রেটারি রঞ্জিতা সিনহা বলেন, “আমরা অনেকটা লড়াই করে আজ এই জায়গায় এসেছি। তবে যেভাবে আমাদের মধ্যে বেকারত্বের হার বাড়ছে, তাতে ১ শতাংশ সংরক্ষণ মেনে নেওয়া যায় না। তবুও বলব এটা আশাবাদী। তবে আমরা ভীষণভাবে খুশি, সেটা বলতে পারব না।”