কলকাতা: কথা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চাকরি পেলেন কাটোয়ার কেতুগ্রামের রেণু খাতুন। তবে নার্সিংয়ের চাকরি নয়, নন নার্সিং চাকরি করবেন তিনি। বৃহস্পতিবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকেই এ কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা রেণু জেলারই হাসপাতালে চাকরি করবেন। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “কাটোয়ার মেয়েটিকে আমরা কাজে লাগাব। রেণু খাতুনের কাগজপত্র তৈরি করে ফেলা হয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড তাঁকে পূর্ব বর্ধমানে সুপারিশ করেছে। ও স্টাফ নার্সের চাকরি পেয়েছিল গ্রেড ২ তে। তাঁকে জেলাতেই নন নার্সিং কাজে রাখা হচ্ছে। যেহেতু পাশ করেছিলেন নার্সিংয়ে, ওই গ্রেডেই চাকরি করবেন। ২৯ হাজার ৮০০ টাকা বেতন হবে। তবে নার্সিংয়ের কাজ না করে অন্য কাজ করবেন। অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারটা অলরেডি ইস্যু করা হয়ে গিয়েছে।”
একইসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রেণুর হাতের চিকিৎসার ভারও রাজ্য সরকারই নেবে। একইসঙ্গে আইন মেনে পুলিশও যা করার করবে। ইতিমধ্যেই রেণু খাতুনের স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রেণু খাতুনের ঘটনা স্তম্ভিত করেছে গোটা রাজ্যকে। ২০১৭ সালে শের মহম্মদের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রেণুর। বিয়ের পর আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে নার্সিং কোর্স করেন তিনি। এরপর সরকারি চাকরির প্যানেলে নামও আসে তাঁর। স্ত্রীর সরকারি চাকরি পাওয়ার বিষয়টি মানতেই পারেননি তিনি। হয়ত মনে হয়েছিল, বউ চাকরি করতে গেলে হাতের বাইরে চলে যেতে পারেন। হতে পারে, শের মহম্মদের ‘পৌরুষ’ শ্লাঘা আহত হয়েছিল। এরপরই ঠিক করেন স্ত্রীকে শাস্তি দেবেন। রাতে স্ত্রী যখন ঘুমোচ্ছিলেন, তাঁর হাত কেটে নেন। অভিযোগ, শের মহম্মদ যখন এই ঘটনা ঘটান, আরও দু’জন তাঁদের বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমন ঘটনা আলোড়ন ফেলে দেয়।
বুধবার উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতা ফিরে ভবানীপুরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দাঁড়িয়েই তিনি বলেন, “জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই কেতুগ্রামে গিয়েছিলেন। সরকার নির্যাতিতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করছে। মেয়েটি যেহেতু নার্সিং পরীক্ষার প্যানেলে ২২ নম্বরে ছিলেন, সে কথা মাথায় রেখে তাঁকে চাকরি দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এখন তো ওর ডান হাত নেই। তাই যে কাজটা করতে পারে বসে বসে, কথা বলে যে কাজ করা যায় সেই কাজই তাঁকে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে আমরা ওর জন্য আর্টিফিসিয়াল হাতেরও ব্যবস্থা করে দেব।” একদিনের মধ্যেই নবান্ন থেকে রেণুর চাকরির কথা জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।