কলকাতা: কলকাতার পর এবার ওষুধ সঙ্কট তীব্র হচ্ছে জেলাগুলিতেও। জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতে এবার অমিল হতে শুরু করেছে ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম। চরম দুর্ভোগে রোগীরা। ইতিমধ্যেই সূত্রের খবর, হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতর অর্থ সঙ্কটের কথা লিখে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবনকে। তবে এই সঙ্কট আদৌ দ্রুততার সঙ্গে মেটানো সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে স্বাস্থ্যভবনের অন্দরেই। যদি কলকাতার মেডিকেল কলেজগুলিতে ওষুধ সঙ্কট থাকে, চিকিৎসা সরঞ্জামের টাকা না থাকে তা হলে জেলার হাসপাতালগুলিতে সঙ্কট যে আরও তীব্র হবে তা অনুমেয়। সূত্রের খবর, ৪ কোটি ৯৮ লক্ষের উপরে টাকা বকেয়া রয়েছে মেডিসিন ভেন্ডারদের। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই টাকা না মেটানো হলে নতুন করে তারা আর ওষুধ বা চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করতে পারবে না। এরমধ্যেই হুগলি স্বাস্থ্য দফতর সরাসরি জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ডিরেক্টর সৌমিত্র মোহনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তাদের কী পরিস্থিতি।
তবে শুধু হুগলি নয়, স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ কম বেশি সব জেলাতেই বকেয়া জমেছে। বড় জেলাগুলির ক্ষেত্রে গড়ে ৪ কোটি টাকা ভেন্ডারদের বকেয়া রয়েছে। সার্বিকভাবে বকেয়ার পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার আশেপাশে।
ভেন্ডারদের অভিযোগ, এই বকেয়া ২০২১-২২ অর্থবর্ষের নয়। ২০১৯ সাল থেকে এই টাকা তারা পাচ্ছে না। এরপরও কোভিডের সময় সরবরাহ স্বাভাবিক রেখেছে। কিন্তু এবার বকেয়ার পরিমাণ এতটাই বেশি হয়ে গিয়েছে, তাদেরও দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। তাদের পক্ষে আর চিকিৎসা সামগ্রী ধারে সরবরাহ করা সম্ভব নয়। মূলত দু’টি খাত থেকে এর টাকা যায়। এক মিশন ফ্লেক্সিপুল এবং জেএসকে। জেএসকে থেকে শিশুদের কিছু ওষুধ কেনা হয়। মিশন ফ্লেক্সিপুলের মাধ্যমে বিনামূল্যে ওষুধ নীতির যে পরিকাঠামো তা আসে। এই দু’টি খাতেই টাকার টান পড়েছে বলে সূত্রের খবর।
এই সঙ্কটের কারণ হিসাবে উঠে আসছে আরও এক তত্ত্ব। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, বেশ কয়েক বছর ধরে টেন্ডার হয়নি। ফলে যে ভেন্ডাররা পাঁচ, ছয় বছর আগে টেন্ডার পেয়েছিল, যে রেটে তা নিয়েছিল তার তুলনায় এখন কাঁচামালের দাম অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ফলে পুরনো দামে তারা আর ওষুধ দিতে চাইছে না। টানাটানির ভয়ঙ্কর ছবি সর্বত্রই। কলকাতার প্রথম সারির সরকারি মেডিকেল কলেজ এসএসকেএম। এখানেও রোগীর পরিজনেরা স্পষ্ট বলছেন, তাঁরা ওষুধ পাচ্ছেন না।