কলকাতা: রবিবার বিকেলের মধ্যেই জন্ম হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র। ইতিমধ্যেই এই ঝড় নিয়ে একাধিক সম্ভাবনার কথা বলছেন আবহাওয়াবিদরা। মধ্য আন্দামান সাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ শক্তি বাড়াতে শুরু করেছে। শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে যা গভীর নিম্নচাপের রূপ নেবে। এরপরই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তখনই তার নাম হবে অশনি। কোথায় আছড়ে পড়বে অশনি? এই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় কোথায় আছড়ে পড়তে পারে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ১০ মে মঙ্গলবার অন্ধ্র ওড়িশা উপকূলের কাছে পৌঁছতে পারে ঘূর্ণিঝড়। মৌসম ভবনের একেবারে অন্দরের খবর, অশনি নিয়ে বেশ কিছু সম্ভাবনা উঠে এসেছে। প্রথমত, ইয়াসের মতো শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হওয়ার আশঙ্কা কম। কারণ ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরে যমজ ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে। জোড়া লড়াইয়ে শক্তি ক্ষয় হবে দু’টোরই। দ্বিতীয়ত, এখনও অবধি অন্ধ্র প্রদেশ ওড়িশা উপকূলে এই ঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা কম।
১০ তারিখ নাগাদ অন্ধ্র ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি ঘূর্ণিঝড় পৌঁছলেও সেখানেই আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা আপাতত আবহাওয়াবিদরা দেখছেন না। বরং অন্ধ্র ওড়িশা উপকূলের সামনে থেকে উত্তর-পূর্বে বাঁক নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়। তেমনটা হলে প্রথমে ওড়িশা, পরে বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগোতে পারে তা। ফলে বাংলার বিপদ কিছুটা হলেও কম হতে পারে।
অন্যদিকে বাঁক নেওয়ার সময় থেকেই অশনি দুর্বল হতে পারে। যেহেতু উপকূলের খুব কাছাকাছি পৌঁছে যাবে অশনি এবং স্থলভাগের খুব কাছে থাকবে, ফলে উত্তর ভারতের শুকনো হাওয়া এতে মিশবে। শুকনো হাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে ঢুকতেই কাঠামো ভাঙতে শুরু করবে। ফলে যে শক্তি নিয়েই ধেয়ে আসুক না কেন, স্থলভাগে ঢোকার সময় শক্তি হারাবে।
জওয়াদের মতো সাগরেই ঘূর্ণিঝড় তকমা চলে যেতে পারে অশনির। গত ডিসেম্বরে এরকম এক ঘূর্ণিঝড় দেখা গিয়েছিল। শীতকালে বাংলার খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল সে, চোখ রাঙানিও কম ছিল না। কিন্তু সাগরেই দুর্বল হয়ে পড়ে তা। জওয়াদের মতোই এই অশনি সাগরের মধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়ে কি না, সেদিকে নজর রাখছেন আবহাওয়াবিদরা। এখনই এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে যেমন বড় বিপদের সঙ্কেত নেই, একইভাবে খুব হালকা করে নিতেও নারাজ আবহাওয়াবিদরা। উপগ্রহ চিত্রে দিনভর নজর রাখছেন তাঁরা। সামান্য এদিক ওদিক হলেও অনেক কিছু বদলে যেতে পারে। তাই রাজ্য প্রশাসন, ওড়িশার প্রশাসনও প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবীদের ১০ তারিখ থেকে সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে। ১১ মে থেকে ১৩ মে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। বিশেষ করে উপকূলীয় জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া কালবৈশাখী সম্ভাবনাও রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গে। মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে ঝড় বৃষ্টি বাড়ার পূর্বাভাস রয়েছে।