Year Ender 2022: ফিরে দেখা: চাকরি গেল মন্ত্রিকন্যার, জেলে প্রাক্তন মন্ত্রী! শিক্ষা দুর্নীতির অভিযোগে ফালা ফালা বাইশের বাংলা
Kolkata: অক্টোবরে গ্রেফতার হন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য।
কলকাতা: ২০২২ সালের জুলাই মাসটা কেউ বলবে স্মরণীয়, কেউ বলবে কলঙ্কিত। তবে মনে রাখবে ইতিহাস। ২৩ জুলাই সাত সকালে সংবাদমাধ্যমে ব্রেকিং নিউজ, ‘ইডির হাতে গ্রেফতার পার্থ চট্টোপাধ্যায়’। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, যাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিস্ফোরক সব অভিযোগ। যদিও এই ‘জুলাই বিপ্লব’-এর মাটি তৈরি হয়েছে আরও আগেই। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে একের পর এক মামলা হাইকোর্টে আসতে শুরু করে। অযোগ্য প্রার্থীদের টাকার বদলে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এসএসসি, প্রাথমিক পর্ষদের বিরুদ্ধে। টেটে কেলেঙ্কারি, এসএসসিতে দুর্নীতি —কী অভিযোগ নেই! মে মাসে প্রথম রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর নাম উঠে আসে এই মামলায়। তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা স্কুলে পড়াতেন। সেই অঙ্কিতার বিরুদ্ধেই অন্যায়ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে যান ববিতা সরকার নামে এক চাকরি প্রার্থী। ববিতার বক্তব্য ছিল, অঙ্কিতা যে চাকরি করেন, তার দাবিদার ববিতা। দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শেষে অঙ্কিতা ‘অযোগ্য’ প্রমাণিত হন আদালতে। ববিতার চাকরি ফেরাতে হয় মন্ত্রী-কন্যাকে। যদিও বছর শেষে ববিতার এই নিয়োগ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। স্নাতক স্তরে তাঁর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে পাওয়া অ্যাকাডেমিক স্কোর প্রশ্নের মুখে।
অন্যদিকে মামলা করে চাকরি পান প্রিয়াঙ্কা সাউ নামে আরও এক যোগ্য চাকরি প্রার্থী। এসবেরই মধ্যেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ায় স্কুল সার্ভিস কমিশন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন কর্তাদের। ততদিনে তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর একের পর এক নির্দেশ তাঁকে ক্রমেই চাকরিপ্রার্থীদের কাছে ‘মসিহা’ করে তোলে। অগস্টে এসএসসি মামলায় গ্রেফতার হন শান্তিপ্রসাদ সিনহা, অশোক সাহারা।
অক্টোবরে গ্রেফতার হন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় সকলেই এখন জেলে। চাকরি প্রার্থীদের বিক্ষোভ-আন্দোলন-ধরনায় গত কয়েকমাসে দফায় দফায় উত্তাল হয়েছে রাজপথ। ধর্মতলায় ৫০০ দিন পার করেছে চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন। আদালতের নির্দেশে সরু সুতোর উপর ঝুলছে বহু ‘অযোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরির ভবিষ্যৎ। আরও অনেক কিছুই হয়ত দেখা বাকি। তবে যার জন্য এত লড়াই, সেই যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা চাকরি পাবেন তো, প্রশ্ন কিন্তু ঘুরপাক খাচ্ছেই।