Kunal Ghosh: ‘তৃণমূল কোনও হিংসাত্মক প্রতিবাদ সমর্থন করবে না’, শাসক নেতাদের আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার মন্তব্যের আবহে কুণালের সতর্কবার্তা
Kunal Ghosh on SIR: বাংলার মানুষকে কুণালের আবেদন, "পাশাপাশি আমরা বাংলার মানুষকে বলব, জানি আপনারা বিজেপির উপর বিরক্ত। জানি, এর মধ্যে হয়রানি, বাদ দেওয়ার চেষ্টা থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু, যদি কারও কোথাও কোনও সমস্যা বলে মনে হয়, কেউ কোনওরকম আইন বহির্ভূত বিজেপির প্ররোচনায় পা দেবেন না। তৃণমূল কংগ্রেস কোনও হিংসাত্মক প্রতিবাদ সমর্থন করবে না।"

কলকাতা: জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সোমবার বাংলায় বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা শুরুর ঘোষণা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এই ঘোষণার পর কী বলছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস? কমিশন SIR শুরুর ঘোষণা করার পরই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বললেন, নির্ভুল ভোটার তালিকার দাবি তাঁরাই বারবার জানিয়েছেন। তবে এসআইআর করতে গিয়ে বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে আইনগতভাবে প্রতিবাদের হুঁশিয়ারি দিলেন।
এদিন কমিশনের ঘোষণার পর সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল বলেন, “কমিশনের ঘোষণার মধ্যে যে বিষয়গুলি রয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব তা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে দেখছে। কিন্তু, আমরা দুটো জিনিস স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই। এক, নির্ভুল ভোটার তালিকা। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস তা সবসময় চেয়েছে। ফলে আমরা নির্ভুল ভোটার তালিকার সমর্থক। যখন অন্য রাজ্যের ভোটার তালিকা থেকে কপি পেস্ট করে আমাদের রাজ্যে ভোটার তালিকায় বসানো হয়েছিল, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। যেগুলো মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে পরে ধরা পড়ে।”
এরপর তৃণমূলের দ্বিতীয় পয়েন্টের কথা উল্লেখ করে কুণাল বলেন, “একজন বৈধ ভোটার কিংবা একজন বৈধ নাগরিককে যদি বাদ দেওয়া হয় বা হয়রান করা হয়, তাহলে প্রতিবাদ করা হবে। নির্ভুল, স্বচ্ছ ভোটার তালিকার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বলেছিলেন। সেটা করতে গিয়ে বৈধ নাগরিকদের হয়রান করা হলে, বাদ দেওয়া হলে, এক লক্ষ কর্মীকে নিয়ে গিয়ে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতর ঘেরাও করা হবে।”
তৃণমূল নেতারা এসআইআর নিয়ে একের পর এক হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার কথাও বলছেন। এই আবহে বাংলার মানুষকে কুণালের আবেদন, “পাশাপাশি আমরা বাংলার মানুষকে বলব, জানি আপনারা বিজেপির উপর বিরক্ত। জানি, এর মধ্যে হয়রানি, বাদ দেওয়ার চেষ্টা থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু, যদি কারও কোথাও কোনও সমস্যা বলে মনে হয়, কেউ কোনওরকম আইন বহির্ভূত বিজেপির প্ররোচনায় পা দেবেন না। তৃণমূল কংগ্রেস কোনও হিংসাত্মক প্রতিবাদ সমর্থন করবে না। যদি কোথাও কাউকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়, যদি দেখা যায় মানুষকে হয়রান করা হচ্ছে, সেক্ষেত্রে আইনি সাহায্য নিয়ে সাংবিধানিকভাবে যথাযথ প্রতিবাদ হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের উপর আস্থা রাখুন। কারও প্ররোচনায় পা দেবেন না। এমন কোনও পদক্ষেপ করবেন না, যাতে অন্য কোনও সমস্যা হয়। কারও কোনও সমস্যা হলে তৃণমূল কংগ্রেস পাশে থাকবে।” মতুয়া সম্প্রদায়কে কুণালের আবেদন, “মতুয়া সম্প্রদায় বিজেপির প্ররোচনায় পা দেবেন না।”
রাজ্যে ফের তৃণমূল ক্ষমতায় আসবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী বলে কুণাল বলেন, “এসআইআর হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৫০ আসন নিয়ে চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন। আমাদের বুথ কর্মীরা জানেন তাঁদের দায়িত্ব কী। তৃণমূল কংগ্রেস সাংগঠনিকভাবে কতটা প্রস্তুত, বিজেপি ফল বেরলে হাড়ে হাড়ে টের পাবে।” কমিশনকে বার্তা দিয়ে কুণালের বক্তব্য, “নির্বাচন কমিশনের অরাজনৈতিক নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করা উচিত। বিজেপির প্রভাবে কোনওভাবে প্রভাবিত হয়ে যদি কোনও বৈধ ভোটারকে বাদ দিতে চান, তখন সাংবিধানিকভাবে তার প্রতিবাদ হবে।”
কুণালের মন্তব্য নিয়ে খোঁচা দিয়ে বিজেপি মুখপাত্র জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল এখন যে কথা বলছে, তাতে একটা কথাই বলতে পারি, এসআইআর নিয়েও পাল্টি খেল তৃণমূল। গতকাল পর্যন্ত তৃণমূলের অবস্থান ছিল, পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর করতে দেব না। আর আজ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের ঘোষণার পর তৃণমূল বলছে, এসআইআর নিয়ে বিজেপির প্ররোচনায় পা দেবেন না। তার মানে আইন মেনে এসআইআরে অংশ নিচ্ছে। বিজেপি কোনওদিন এসআইআর নিয়ে প্ররোচনা দেয়নি। বিজেপি বলেছে, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী, অবৈধ ভোটারের নাম বাদ দিতে হবে।”
