AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানই কি কাল হল বিজেপির? বাংলায় হারের কারণ নিয়ে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট জমা পড়ল শাহের কাছে

কেন্দ্রীয় নেতাদের আনাগোনা সত্ত্বেও বিজেপির (BJP) ভরাডুবি মানতে পারছে না পদ্ম শিবির। এবার হারের কারণ সন্ধান চলছে খোদ শাহের (Amit Shah) নেতৃত্বে।

'জয় শ্রী রাম' স্লোগানই কি কাল হল বিজেপির? বাংলায় হারের কারণ নিয়ে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট জমা পড়ল শাহের কাছে
ফাইল ছবি
| Updated on: Jun 02, 2021 | 12:55 PM
Share

কলকাতা: ‘ইস বার ২০০ পার’! এটাই ছিল একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির (BJP) স্লোগান। টার্গেট ছিল বাংলায় সরকার গঠন। গত কয়েক বছর ধরে এই লক্ষ্যে বাংলায় আনাগোনা বাড়ছিল কেন্দ্রীয় নেতাদের। আর ভোটের আগে যে ভাবে বাংলার আকাশে মোদী-শাহদের কপ্টার চক্কর কেটেছে, তা থেকেই স্পষ্ট যে বাংলা দখলে কম কাঠখড় পোড়ায়নি গেরুয়া শিবির। শহর ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত গ্রামেও উড়েছে গেরুয়া নিশান। কিন্তু ফলাফলে দেখা গেল, ক্ষমতায় ফিরতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) বিশেষ বেগ পেতে হয়নি। নিজে নন্দীগ্রামে হেরে গেলেও গোটা রাজ্যের নিরিখে পদ্ম শিবির তেমন কোনও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারেনি মমতাকে। ৭৭ টি আসনে জয় পাওয়া বিজেপিকে অক্সিজেন জুগিয়েছে নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) জয়। তাই ভরাডুবির পর থেকে শুরু হয়েছে কারণ অনুসন্ধানের পালা। কোন চালে ভুল হল? সেটা খুঁজে বের করতে এ বার খোদ অমিত শাহের কাছে জমা পড়ল ‘গোয়েন্দা রিপোর্ট’।

বিজেপি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দেওয়া একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে অমিত শাহের (Amit Shah) কাছে। ১২৮ পৃষ্ঠার রিপোর্টে বিজেপির হারের সব সম্ভাব্য কারণ নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আর সেই রিপোর্ট উঠে এসেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বহু বিজেপি বিধায়ক তৃনমূল যেতে পারে‌ বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

কারণ হিসেবে কী কী তুলে ধরা হয়েছে রিপোর্টে?

১. রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে দলবদল করা নেতাদের। বলা হয়েছে, দলবদল করে যারা বিজেপিতে এসেছে, তাদের মধ্যে অনেকেরই ভাবমূর্তি ভালো না। তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। জনপ্রিয়তা কম থাকায়, এদের অধিকাংশই তেমন জনসমর্থন পাননি। সেই সব নেতাদের সাধারণ মানুষ মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। যার জেরে ক্ষতির মুখে পড়েছে বিজেপি।

২. ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনিই কাল হয়েছে বিজেপি, এমনটাও অনুমান করা হয়েছে। রিপোর্ট বলছে, জয় শ্রী রাম ধ্বনি ব্যকফুটে নিয়ে গিয়েছে বিজেপিকে, কারণ বাংলায় রামের পুজোর সে ভাবে প্রচলন নেই। এব্যাপারে অনেকেই বলছেন, বিজেপি বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে নিয়ে সেরকম ভাবে মাথা ঘামায়নি কিংবা মাথা ঘামাতে দেখা যায়নি।

৩. ভোট প্রচারে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ ছাড়াও এসেছেন একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। যোগী আদিত্যনাথ, শিবরাজ সিং চৌহান-সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে আসা হয়েছে। আর অন্য রাজ্যের নেতাদের ভাষা শহর ও গ্রামের মানুষ বোঝেনি বলেই উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।

৪. প্রশ্ন উঠেছে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের নিয়েও। রাজের বিজেপির ৩০ জন নেতার চালচলন নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জেলা স্তরের নেতাদের দুর্নীতি ও বিলাস বহুল জীবন এবং ব্যবহার মানুষ ভালো করে নেয়নি বলেই দাবি। ওই গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, ক্ষমতায় না এসে ক্ষমতার দম্ভ মানুষের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুন: রাজ্যে ভ্যাকসিন বণ্টনে বড় অনিয়মের অভিযোগ, শুভেন্দু বললেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেব’

৫. এমনিতেই বিজেপিকে বহিরাগত তকমা দিয়েছিল তৃণমূল শিবির। এরই মধ্যে ভাষাগত সমস্যা বড় হয়েছে বলে উল্লেখ রিপোর্টে। মানুষ মনে করেছে, বিজেপি মানেই অবাঙালি লোকজন।

এছাড়া, ভোটের সময় দলবদল করা নেতাদের আধিক্যে আরএসএস নিষ্ক্রিয়তাই হারের অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচনে তহবিল ঠিক মতো ব্যবহার করা হয়নি বলেও উল্লেখ, এমনকি বহু প্রার্থী যে টাকা পেয়েছে, তার অধিকাংশই খরচ করেনি। হারের কারণ বুঝতে অমিত শাহের নিজের টিম সমীক্ষা শুরু করেছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।