উচ্চশিক্ষিত, পেশায় অধ্যাপক, মৃদু এবং মিষ্টভাষী সুকান্ত মজুমদারকেই (Sukanta Majumdar) নতুন বিজেপি রাজ্য সভাপতি হিসেবে বেছে নিয়েছেন বিজেপির (BJP) কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজনীতিতে সুকান্তর সফর খুব একটা দীর্ঘ নয়। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট আসন থেকে জয়লাভ করার পরই তাঁর প্রচারের আলোয় উঠে আসা। সেখান থেকে আজ রাজ্য বিজেপির প্রধান হলেন সুকান্ত। সদ্যপ্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সুকান্তবাবুর তুলনা করা যায়, তবে হয়তো দু’জনের বেশিরভাগ চারিত্রিক বৈশিষ্টই উত্তর এবং দক্ষিণে অবস্থান করবে। কিন্তু বিজেপির এই পদক্ষেপ যে অত্যন্ত সুচিন্তিত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রথায় ছেদ পড়েছে বটে, তবে বিজেপি উচ্চপর্যায়ের পদ দেওয়ার ক্ষেত্রে আরএসএস থেকে আসা দলীয় কর্মীদের সর্বদাই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ইদানীং দলবদলের যে রেওয়াজ নানা রাজনৈতিক দলে শুরু হয়েছে, সঙ্ঘের শিক্ষাপ্রাপ্ত নেতা-কর্মীরা সেই রাস্তা থেকে দূরেই থাকেই। রাজ্য সভাপতি মনোনীত হওয়ার ক্ষেত্রে এই সঙ্ঘ ফ্যাক্টর যে সুকান্তর পক্ষে গিয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি দীর্ঘ সময় আরএসএস-র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। লোকসভার টিকিট পাওয়ার আগে সক্রিয় রাজনীতিতেও তাঁর উপস্থিতি টের পাওয়া যায়নি। যে কারণে শাখার দীক্ষায় দীক্ষিত এই সাংসদকে রাজ্য সংগঠনের শীর্ষে বসাতে দ্বিধা করেনি বিজেপি।
বিজেপির রাজু বিস্তা বা আলুওয়ালির মতো অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে তোলার কোনও অবকাশই নেই। জন্ম, কর্ম সবই বাংলায় সুকান্তবাবুর। ১৯৭৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর বালুরঘাটেই জন্ম নেন, একটু বড় হওয়ার পর থেকেই যাতায়াত শুরু হয় সঙ্ঘের শাখায়। পড়াশোনা ও অন্যান্য কাজ চললেও সঙ্ঘের সঙ্গে যোগাযোগ অটুট রেখেছিলেন তিনি। স্কুল জীবন শেষ করে উচ্চশিক্ষাও তিনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই গ্রহণ করেন। প্রথমে এমএসসি, ফের বিএড ও শেষে বটানিতে পিএইডডি করে ডক্টরেট উপাধি নেন সুকান্তবাবু। তার পর থেকে শুরু হয় অধ্যাপনা।
আর পাঁচটা পরিবারের মতোই সুকান্তবাবুরও পরিবার ছোট্ট। ২০০৮ সালের ৬ ডিসেম্বর সাত পাকে বাঁধা পড়েন তিনি। স্ত্রী’র নাম কোয়েল মজুমদার চৌধুরী। ছোট দুই সন্তানও রয়েছে সুকান্তবাবু ও কোয়েলদেবীর।
আরও পড়ুন: Bengal BJP President: নতুন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ পেলেন বড় পদ
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে আচমকাই প্রস্তাব আসে বিজেপির টিকিটে লড়ার। সেই মতো রাজিও হয়ে যান তিনি। দাঁড়িয়ে পড়েন তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের বিরুদ্ধে। প্রথমবার নির্বাচনে লড়ে জয়লাভও করেন। ব্যবধান ছিল ৪০ হাজারের বেশি। সেই থেকেই রাজনীতিতে পরিচিত মুখ সুকান্ত। কিন্তু রাজ্য রাজনীতিতে কখনই অগ্রভাগে থেকে সেভাবে রাজনীতি করেননি তিনি। কিন্তু উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র এবং সঙ্ঘের সম্পর্কের সৌজন্যে এখন রাজ্য বিজেপির সর্বেসর্বা তিনি।
আরও পড়ুন: Weather Update: যা দেখলেন ট্রেলর! দু’সপ্তাহের মধ্যেই ধেয়ে আসছে জোড়া ‘চিনা বিপদ’, ভাসতে পারে বাংলা