কলকাতা : সরকার মানবিক, তাই চাকরিহারাদের জন্য আইনত যতদূর যেতে হয় যাবে। সোমবার নবান্ন থেকে চাকরি হারানো প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়েছে ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি। সেই চাকরি হারানো শিক্ষকেরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে সোমবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন নবান্ন থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা সেই সব চাকরিহারাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এও উল্লেখ করেছেন, অন্যায় বা দুর্নীতিকে কখনও বরদাস্ত করবেন না তিনি। আদালতের রায়কেও সম্মান জানাচ্ছেন মমতা। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই নজিরবিহীন নির্দেশের পর সোমবারই প্রথম মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আমাকে প্রচুর ছেলেমেয়ে ফোন করছে। অনেকেই আমার কাছে আসছে। মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, ওই চাকরিহারাদের প্রত্যেকের পরিবারে যদি ৬ জন করে সদস্য থাকেন, তাহলে রাতারাতি প্রায় ২ লক্ষ মানুষ রুজি রোজগার হারিয়েছে। তবে এটা বিচারাধীন বিষয় বলেও উল্লেখ করেছেন মমতা। রাজ্য যে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হতে চলেছে, সে কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
যাঁরা রাতারাতি ‘বেকার’ হয়ে গিয়েছেন, তাঁদের প্রতি মমতা বার্তা, ‘ডিপ্রেশনে ভুগবেন না, মানসিক ভারসাম্য হারাবেন না, মন খারাপ করবেন না। আমাদের সরকার মানবিক। আইনি পথে যতদূর লড়তে হয় লড়ব।’ চাকরিহারারা যে মানসিক অবসাদে ভুগছেন, সে খবর আছে বলে উল্লেখ করে মমতা বলেন, অনেকে ডিপ্রেশনে ভুগছেন। কেউ যদি কিছু একটা ঘটিয়ে ফেলে তখন তার দায় কে নেবে? মানুষের জীবনের দাম অনেক।
মূলত প্রশিক্ষণ ছিল না, এমন শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরই চাকরি গিয়েছে। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তবে মমতার দাবি, ওই শিক্ষিকেরা প্রশিক্ষিত নয়, এই তথ্য ভুল। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কেউ দাবি করেছিল, ওরা নাকি ট্রেনিং নেয়নি। কিন্তু সেটা ঠিক নয়। দিল্লির একটা অর্ডার ছিল, চাকরিতে ঢোকার তিন বছরের মধ্যে ট্রেনিং নিতে হবে, সেটা প্রত্যেকের নেওয়া আছে।’ তবে আদালতের নির্দেশকে অসম্মান করছেন না বলে জানিয়েছেন মমতা। তাঁর দাবি, কেউ অন্যায় করলে শাস্তি হবেই।