Calcutta High Court : ছুটি মঞ্জুর বোর্ডের, বেতন কাটলেন প্রধান শিক্ষক, হাইকোর্টে ক্যান্সার আক্রান্ত শিক্ষিকা

TV9 Bangla Digital | Edited By: সঞ্জয় পাইকার

May 10, 2022 | 8:41 PM

Calcutta High Court : ২০১৬ এবং ২০১৭ সালের বেতন বৃদ্ধিও আটকে যায় শিক্ষিকার ।

Calcutta High Court : ছুটি মঞ্জুর বোর্ডের, বেতন কাটলেন প্রধান শিক্ষক, হাইকোর্টে ক্যান্সার আক্রান্ত শিক্ষিকা
ফাইল ছবি

Follow Us

শ্রাবন্তী সাহা

ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ছুটি নিয়েছিলেন। স্কুলের হেডমাস্টার তখন লোক পাঠিয়ে খোঁজ নিয়েছিলেন, কেমন আছেন তিনি। কিন্তু, ক্যান্সারের চিকিৎসা সেরে স্কুলে যোগ দেওয়ার পর সেই প্রধান শিক্ষকই (Head Master) তাঁর মাইনে কাটার সুপারিশ করেন। সেইমতো তাঁর ১২ দিনের বেতনও কাটা হয়েছে। এমনকী, প্রধান শিক্ষকের আপত্তিতে ২ বছর বেতন বৃদ্ধিও আটকে গিয়েছে। বোর্ড তাঁর স্পেশাল লিভ মঞ্জুর করার পরও কেন বেতন কাটা হল, তা বুঝতে পারেননি হুগলির তেলেনি পাড়ার মহাত্মা গান্ধী বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের শিক্ষিকা সুনীতা শর্মা। কিছুদিন পর ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ফের ছুটি নিতে হবে। সুনীতা শর্মা আশঙ্কা করছেন, এবার ছুটি নিলে হয়তো পুরো বেতন কেটে নেওয়া হবে। এই আশঙ্কায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। কেন তাঁর ১২ দিনের বেতন কাটা হল, সেটাও জানতে চেয়েছেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে আগামিকাল হাইকোর্টে ডেকে পাঠালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মহাত্মা গান্ধী বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলে ভূগোলের শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন সুনীতা শর্মা। সবকিছু ভালই চলছিল। এমন সময় কয়েকদিনের অসুস্থতা। চিকিৎসা করাতে গিয়ে জানতে পারলেন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। এক লহমায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল মাথায়।

ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ভেলোর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৬ সালের ৩ মে থেকে ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্পেশাল লিভের আবেদন করেন। বোর্ড তাঁর সবেতন ছুটির আবেদন মঞ্জুর করেন। সুনীতা দেবী ক্যান্সারের কেমো নিতে ভেলোরে যান। সেই সময় প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার যাদব লোক পাঠিয়েছিলেন তাঁর বাড়িতে। শিক্ষিকা কেমন আছেন জানতে।

অথচ কাজে যোগ দেওয়ার পর সুনীতা দেবীর ১২ দিনের বেতন কেটে নেওয়া হয়। এমনকী, ২০১৬ এবং ২০১৭ সালের বেতন বৃদ্ধিও আটকে যায়। শিক্ষিকার অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক ডিআই-কে চিঠি লিখে এই বেতন কাটার নির্দেশ দেন।

চিকিৎসার জন্য ফের ছুটি নিতে হবে তাঁকে। সুনীতা দেবীর আশঙ্কা, এবার ছুটি নিলে তাঁর পুরো বেতন আটকে দেওয়া হতে পারে। সেজন্যই চলতি বছরের মার্চে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সুনীতা দেবীর আইনজীবী রণজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বোর্ড সবেতন ছুটি মঞ্জুরের পরও কেন ১২ দিনের বেতন কাটা হল, তা জানতে চান তাঁর মক্কেল।

ওই মামলার শুনানিতে আজ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের আইনজীবীর কাছে বিষয়টির ব্যাখ্যা চান। তখন তাঁর আইনজীবী বলেন, শিক্ষিকার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে। উনি ইচ্ছে করে স্কুলে দেরিতে আসেন। আর ক্যান্সারের বিষয় প্রধান শিক্ষককে জানানো হয়নি।

শিক্ষিকার ক্যান্সারের বিষয়টি প্রধান শিক্ষক জানতেন না, এটা শুনে অবাক হন বিচারপতি। মামলার শুনানির সময় প্রধান শিক্ষককে উদ্দেশ করে কিছুটা কটাক্ষের সুরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, হুগলির তেলেনি পাড়া থেকে হাইকোর্ট মাত্র ঘণ্টা খানেকের রাস্তা। এইটুকু রাস্তা পেরিয়ে এসে হেডমাস্টার মশাই আদালতে নিশ্চয় জানাবেন কী কারণে একজন ক্যান্সারের রোগীর টাকা কেটে নিতে বাধ্য হলেন তিনি।

Next Article