Biman Basu: অশীতিপর বিমানের কাঁধেই ফের কেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের দায়িত্ব? নেপথ্যে ৩ কারণ
Biman Basu: একুশের বিধানসভা ভোটে বামেদের ভরাডুবির পর কংগ্রেস ও আইএসএফের সঙ্গে বামেদের জোট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বামফ্রন্টের অন্দরেই। এমনকী, বিরোধিতা এমন জায়গায় পৌঁছেছিল তাতে ফরোয়ার্ড ব্লক বামফ্রন্ট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিল।
কলকাতা: বিমান বসুই হচ্ছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান ( chairman of the Left Front)। সিপিএমের (CPIM) রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে বুধবার সর্বসম্মতিক্রমে বিমান বসুর(Biman Basu) নামেই সিলমোহর পড়ল। এর আগে সিপিআইএমের সর্বস্তরে বয়স নীতির কারণে সমস্ত পদ থেকে সরেছিলেন বিমান। কিন্তু, বামফ্রন্ট পরিচালনায় তাঁর অভিজ্ঞতা এবং ভাবনা-চিন্তার কথা মাথায় রেখে ৮৩ বছরের বিমান বসুর ওপর আস্থা রাখল সিপিএম। সূত্রের খবর অন্য শরিকরা আগেই জানিয়েছিল, বিমানকেই ফ্রন্ট চেয়ারম্যান করা হোক। বাকি ছিল, সিপিআইএমের সম্মতির। আনুষ্ঠানিকভাবে সেই সম্মতিও এল সিপিআইএমের বৈঠকে। তবে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান হিসাবে বিমানের নাম বামফ্রন্টের তরফে অফিসিয়ালি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ঘোষণা করা হবে বলে জানা যাচ্ছে।
কী বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা?
এদিকে অশীতিপর বিমানের কাঁধেই কেন ফের দেওয়া হল এই গুরু দায়িত্ব? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মত, বিমান ছাড়া এই পদের দাবিদার হিসাবে আর কোনও নামই জোরালোভাবে উঠে আসেনি। সূত্রের খবর, এর আগে সিপিএমের নিজস্ব বৈঠকে কয়েকবার সূর্যকান্ত মিশ্রর নাম উঠলেও তা বিশেষ জল পায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে মূলত তিন কারণেই ফের বিমারে কাঁধেই এই দায়িত্ব তুলে দিতে চেয়েছেন বামফ্রন্টের অন্যান্য শরিকরাও। প্রথম বিমান বসুর দীর্ঘদিনের বাম রাজনীতি করার অভিজ্ঞতা, দ্বিতীয়ত সকলকে নিয়ে কাজ করার মানসিকতা ও তৃতীয়ত বামফ্রন্টের প্রতি বিমানের দায়বদ্ধতাই সর্বোপরি বামফ্রন্টে ভাঙন রোধে বিমানের কৌশল এখানে মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বয়স তো সংখ্যা মাত্র!
প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা ভোটে বামেদের ভরাডুবির পর কংগ্রেস ও আইএসএফের সঙ্গে বামেদের জোট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বামফ্রন্টের অন্দরেই। এমনকী, বিরোধিতা এমন জায়গায় পৌঁছেছিল তাতে ফরোয়ার্ড ব্লক বামফ্রন্ট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। সেই সময়, ভাঙন রোধে বড় ভূমিকা নিতে দেখা যায় বিমান বসুকে। এমনকী একুশের নির্বাচনে জোটের ক্ষেত্রে সিপিআইয়ের তরফে সিপিআইয়ের বিরুদ্ধে ‘দাদাগিরির’ অভিযোগও তোলা হয়েছিল। সে সময়েও সকলকে বুঝিয়ে ঘর ভাঙতে দেননি বিমান। বিমানের কারণেই অটুট থেকেছে জোট। সকলকে নিয়ে আলাদা আলাদা করে বৈঠকও করেন। অন্যদিকে বয়স যে তাঁর কাছে একটা সংখ্যা মাত্র তা বারেবারেই বুঝিয়ে দিয়েছেন ৮৩-র বিমান। এই বয়সেও রাজ্যের প্রান্ত থেকে অপ্রান্তে নানা মিটিং মিছিলে ছুটে গিয়েছেন বিমান। এমনকী, ৬ জুলাই জ্যোতি বসু সেন্টার ফর সোশ্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ এর নির্মাণকল্পে রাজারহাট ও চিনারপার্কে অর্থ সংগ্রহেও নামতে দেখা যায় বিমানকে। এ বয়সেও দলের প্রতি তাঁর এই একনিষ্ঠ মনোভাব, পরিশ্রমই তাঁকে ফের একবার বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান হওয়ার দাবিদার করে তুলেছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের একটা বড় অংশের।