বিধাননগর: মোবাইল গেম নিয়ে কত খবরই আসে। কোথাও মোবাইলে গেমে আসক্তির জেরে আত্মহত্যা আবার কোথাও বিয়ে করতে বসে ছাদনাতলাতেও স্মার্টফোনে ব্যস্ত থাকতে দেখা গিয়েছে। এবার অষ্টাদশী বউকে ফ্রি ফায়ার খেলা নিয়ে বকাঝকা করায় অভিমানে আত্মহত্যা করলেন তিনি। এমনই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল বিধাননগরের দত্তাবাদ এলাকায়।
জানা গিয়েছে, বিয়ের পর পরই স্বামী খেয়াল করেন স্ত্রীর এক অদ্ভু আসক্তি রয়েছে। সর্বদা মোবাইল ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন তিনি। তাঁর প্রিয় ফ্রি ফায়ার গেম। সংসারের কোনও কাজে মন ছিল না তাঁর বলে অভিযোগ। এ নিয়ে রোজকার অশান্তি চলত সংসারে।
মঙ্গলবার সেই মোবাইল গেম নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে তুঙ্গে ওঠে স্বামীর বচসা। আর যার জেরে আত্মহত্যা করল অষ্টাদশী গৃহবধূ! পুলিশ সূত্রে খবর, গত অগস্ট মাসে ট্যাংরার বাসিন্দা পিউ হাজরার (১৮) বিয়ে হয় সল্টলেক দত্তাবাদের বাসিন্দা সঞ্জয় হালদারের। বিয়ের পর থেকেই মোবাইলে ফ্রি ফায়ার গেম খেলা নিয়ে স্বামীর সঙ্গে প্রায়শই বচসা হত তাঁর।
এই খেলা নিয়েই দীর্ঘদিন ধরেই ঝামেলা চলত স্বামী-স্ত্রীর। আর মঙ্গলবার সেই ঝামেলা পৌঁছয় চরমে। বউকে দু’ কথা শুনিয়েছিলেন স্বামী। পাল্টা তিনিও উত্তর দিলে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়ে যায় সামান্য একটা মোবাইল গেম নিয়ে। জানা গিয়েছে, স্বামীর সঙ্গে পিউয়ের ঝামেলা হয় মঙ্গলবার দুপুরবেলা। তার পর স্বামী সঞ্জয় হালদার কাজের সূত্রে বাইরে বেরিয়ে যান।
মৃতার দেবরের কথায়, “দাদা কাজে বাইরে ছিল। আমি আর মা ছিলাম পাশের ঘরে। বৌদি স্নানটান করে ঠাকুরপুজোও করল। খাবার কথা জিজ্ঞেস করতে বলল, দাদা আসুক খাব। তার পর আমি আর মা খেতে বসি। কিন্তু মা বলল বৌদিকে ফোন কর। ফোন করতে বৌদি বলল, আমি গেমটা শেষ করে আসছি খেতে। বৌদির জন্য ভাত বেড়ে রাখা হয়েছিল। আমি আর মা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। তার মধ্যে দাদা ফিরে এসে দেখে এই কাণ্ড!”
সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে চমকে যান সঞ্জয়। দেখেন স্ত্রী গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছেন! তড়িঘড়ি পিউকে উদ্ধার করে বিধাননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে খবর যায় ওই গৃহবধূর বাপের বাড়িতে। তাঁরা জামাইয়ের বিরুদ্ধে বিধান নগর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। মেয়ের মৃত্য়ুর জন্য জামাইকে দায়ী করেছেন তাঁরা। এর পর সঞ্জয় হালদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
আরও পড়ুন: Acid attack: অ্যাসিড হামলায় মৃত্যু, ১৭ বছর পর সাজা ঘোষণা আদালতের