কলকাতা: প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury) নাকি দল বদলাতে চান। কিন্তু তিনি যেখানে যেতে চান, সেখানে গিয়ে বিশেষ লাভ নেই। তাই তাঁকে সরাসরি ভারতীয় জনতা পার্টিতেই (BJP) আহ্বান জানিয়ে বসেছেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। সদ্য বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ পাওয়ার পরই দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে রাজ্য রাজনীতিতে জন্ম নিয়েছে নতুন জল্পনা। মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে, খোদ অধীরের গড়ে দাঁড়িয়ে দিলীপের এই মন্তব্য নিয়ে জল্পনা চলছিলই। এমন সময় দিলীপের এই মন্তব্যকে সমর্থন করে এই সম্ভাবনা আরও উস্কে দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি।
দিলীপ ঘোষ বর্তমানে রাজ্য বিজেপির কোনও পদাধিকারী নন। তিনি এখন মেদিনীপুরের সাংসদ, পাশাপাশি দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। কিন্তু রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ৭২ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও শিরোনামে উঠে এলেন তিনি। মুর্শিদাবাদে গিয়ে এ দিন তিনি বলেন, “অধীর চৌধুরী ডুবন্ত জাহাজ ছেড়ে যেতে চাইছেন। কিন্তু তিনি যেখানে যেতে চাইছেন সেটাও ফুটো হয়ে গিয়েছে। এখন তাঁর কাছে একটাই ভরসা, ভারতীয় জনতা পার্টি।” দিলীপের এই মন্তব্যই কার্যত রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে।
তবে দিলীপের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপি রাজ্য সহ-সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য আরও বড় ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। সাবেক বিজেপি রাজ্য সভাপতির মন্তব্য নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে প্রাথমিকভাবে তিনি প্রতিক্রিয়া দিতে অস্বীকার করেন, তবে পরে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেন, অধীর বিজেপিতে এলে তাঁদের কোনও অসুবিধা নেই। কারণ, বহরমপুরের সাংসদও আগাগোড়াই বর্তমান রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করে এসেছেন।
রাজ্য বিজেপি সহ-সভাপতিকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি যখন বলে দিয়েছেন, তখন মানুষ যেটা বুঝেছে সেটাই উত্তর।” প্রাথমিকভাবে এইটুকু বলে তিনি থেমে যান। কিন্তু এই নিয়ে রাজ্য বিজেপির কী মতামত, তা জানতে চাওয়া হলে শমীক বলেন, “আমরা তো কুমোরটুলি থেকে মানুষ তৈরি করে আনব না। এই সমাজে দীর্ঘদিন বামফ্রন্টের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন (অধীর), পরবর্তী সময় তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। আজকে তাঁর কাছে কী রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা আছে জানা নেই। কিন্তু তিনি আপসহীনভাবে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে এই সরকারের বিরোধিতা করেছেন। রাজনৈতিক আঙ্গিকে যদি বিচার করা যায়, তবে তাঁর কাছে অন্য কোনও প্ল্যাটফর্ম আছে বলে মনে হয় না।”
শমীকের আরও সংযোজন, “দিলীপ ঘোষ যখন বলেছেন উনি চিন্তাভাবনা করেই বলেছেন। আর ওঁর বক্তব্যকে সমর্থন করাই আমার কাজ। ব্যক্তি অধীর চৌধুরীকে আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখেছি প্রথমে সিপিএম এবং পরে তৃণমূলের বিরোধিতা করতে। কিন্তু তিনি যে রাজনৈতিক দল করেন তার সঙ্গে তৃণমূলের একটা সখ্যতা থাকে। সে ক্ষেত্রে তাঁকে যদি আমরা ডাকি, অসুবিধা নেই তো।”
আরও পড়ুন: BJP North Bengal: দক্ষিণে জল-যন্ত্রণা, উত্তরে জরাতঙ্ক, শুক্রবার থেকেই বৃহৎ আন্দোলনে বিজেপি