কলকাতা: কোভিডের বাড়বাড়ন্তের জের। দুয়ারে রেশন বিলি আপাতত বন্ধ রাখার আর্জি রেশন ডিলার্স ফেডারেশনের। আঙুলের ছাপ দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও আবেদন জানানো হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীকে গোটা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আবেদন জানিয়ে চিঠি করা হয়েছে রেল ডিলারদের তরফ থেকে।
রেশন ডিলারদের আর্জি
‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ অ্যাসোসিয়েশনে’র পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানানো হয়েছে, যেহেতু কোভিড ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, সেক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করছে। এই পদ্ধতিতে সংক্রমিতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, রেশন কর্মীদের মধ্যেও ছড়াতে পারে সংক্রমণ। দুয়ারে রেশন পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ দেওয়াটা বন্ধ করার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। বস্তুতপক্ষে দুয়ারে রেশন প্রকল্পটাই আপাতত বন্ধ রাখার আর্জি জানাচ্ছেন রেশন ডিলাররা। তাঁদের বক্তব্য, বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর আসতে শুরু করেছে, রেশন কর্মীরা কোভিড পজেটিভ হচ্ছেন।
সরকারের বক্তব্য
সরকারের বক্তব্য, যেহেতু ‘দুয়ারে রেশন’ একটি সামাজিক প্রকল্প। তাই এই বিষয়টি নিয়ে সরকারি উচ্চ স্তরে বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। খাদ্য দফতরের বক্তব্য, ‘লকডাউনের সময়ও রেশন পরিষেবা বন্ধ করা হয়নি। রেশন পরিষেবা চালু না থাকলে সাধারণ মানুষ তো খেতে পারবেন না। আর দুয়ারে রেশন ব্যবস্থা সেদিক থেকে ভাবতে গেলে স্বাস্থ্যকর। কারণ দুয়ারে রেশন প্রকল্পের অধীনে কোনও ব্যক্তিকেই এক জায়গায় বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। তাই জমায়েত হবে না। ১৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে দুয়ারে রেশন প্রকল্প। এই নিয়ে অবশ্য বেশ ভালোই কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। কারণ রেশন ডিলাররা একাধিকবার এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে হেঁটে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এবার কোভিডের কারণ দর্শিয়ে তাঁরা এই প্রকল্প আপাতত বন্ধ রাখার আর্জি জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, করোনার বাড়বাড়ন্ত পরিস্থিতির মাঝে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। সপ্তাহের প্রথম দিন থেকেই গণপরিবহণের পায়ে পড়েছে বেড়ি। লোকাল ট্রেনে আসনের ৫০%-এর বেশি যাত্রী নয়। শহরতলির লাইফলাইন লোকাল ট্রেন বন্ধ হবে সন্ধে সাতটাতেই। তারপর স্টাফ স্পেশাল চালাবে রেল। ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রো। দুই প্রান্তিক স্টেশন থেকে শেষ মেট্রোর সময়সূচি বদল হয়েছে। সাড়ে ৯টার পরিবর্তে শেষ মেট্রো ছাড়বে রাত ৯টায়। মেট্রোয় টোকেন বন্ধ, স্মার্ট কার্ড আবশ্যক।
পাশাপাশি সোমবার থেকে বন্ধ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। পরীক্ষা কি আদৌ হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড বা উচ্চ শিক্ষা দফতর। বন্ধ থাকবে সুইমিং পুল, স্পা, জিম, বিউটি পার্লার, সেলুন, চিড়িয়াখানা-সহ সব পর্যটন কেন্দ্র ও বিনোদন পার্ক। শুরু হচ্ছে নাইল কার্ফু। সোমবার রাত থেকেই শহরের ৩১ জায়গায় নাকা চেকিং। রাত ৯ টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চলবে চেকিং। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এই নাকা চেকিং চলবে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ‘মানুষ করোনা আক্রান্ত হওয়ার আগে না খেয়েই মরে যাবে’, বিধিনেষেধ প্রসঙ্গে দিলীপকে পাল্টা খোঁচা ফিরহাদের