পশ্চিম মেদিনীপুর: ফের বড় দায়িত্ব পেলেন বাম নেতা সুশান্ত ঘোষ। সিপিএমের জেলা সম্পাদক পদে নির্বাচিত হলেন তিনি। সমস্ত বিতর্ককে দূরে সরিয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে জেলা সম্পাদক পদে নির্বাচিত হলেন তিনি। দলের একাংশের সম্মতি না থাকলেও প্রথম থেকেই জেলা নেতৃত্বের পছন্দের তালিকায় ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের এই দাপুটে নেতা। তাই শেষ পর্যন্ত তাঁকেই দেওয়া হয় পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব। জানা গিয়েছে, ৬৬ জন জেলা কমিটির সদস্যের মধ্যে ৪১ জনই সুশান্ত ঘোষের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বাম জমানার প্রভাবশালী এই নেতার নাম জড়ায় কঙ্কাল -কাণ্ডে। জেলও খাটতে হয় তাঁকে। এরপর থেকে দলে কোনও বিশেষ দায়িত্ব পাননি তিনি। আগামিদিনে সকলকে একসঙ্গে নিয়ে দলকে আরও মজবুত করার লক্ষ্যেই এগিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন সুশান্ত ঘোষ।
সূত্রের খবর, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের পছন্দের তালিকায় ছিল না সুশান্ত ঘোষের নাম। তবে রবীন দেব সহ বেশ কিছু নেতার সায় ছিল তাঁর পক্ষেই। বিশেষত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নেতাদের বক্তব্য, জেলায় সিপিএম যদি ঘুরে দাঁড়াতে চায় তাহলে সুশান্ত ঘোষের মতো দাপুটে নেতারই প্রয়োজন। জেলা কমিটির ৬৬ জনের মধ্যে ৪১ জনই সুশান্ত ঘোষের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ২১ জন সুশান্ত ঘোষের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং তিনজন ভোটে অংশ নেননি। তরুণ নেতারা সুশান্ত ঘোষকেই চাইছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে একটি সমস্যা রয়েছে। সিপিএমের নতুন নীতি অনুযায়ী, ৬০ বছরের বেশি বয়সী নেতাদের কোনও পদে দায়িত্ব দেওয়া হয় না। তবে সুশান্ত ঘোষের বয়স ৬০ বছরের বেশি।
বাম জমানায় দীর্ঘ দিন ধরে মন্ত্রী ছিলেন সুশান্ত ঘোষ। বরাবরই বিতর্কের শীর্ষে ছিলেন তিনি। বাম জমানার পতন হয় যে বার, সেই বছরেও গড়বেতা থেকে জয়ী হয়েছিলেন সুশান্ত ঘোষ। তবে সেই ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর তাঁর নাম উঠে আসে বেনাচাপড়া কঙ্কাল কাণ্ডে। জেলে যেতে হয় তাঁকে। জেল থেকে বেরনোর পরও দীর্ঘদিন জেলায় ঢুকতে পারেননি তিনি। তাঁর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। আর এবার তাঁর হাতেই থাকবে সেই জেলায় দলের রাশ।
২০০২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পশ্চিম মেদিনীপুরের বেনাচাপড়ায় ৯ জন তৃণমূল কর্মী নিখোঁজ হন। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় তৃণমূল কর্মী শ্যামল আচার্য তাঁর বাবা অজয় আচার্য-সহ ৯ জনের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়। প্রথমে রাজ্য পুলিশ ও পরে সিআইডি সেই মামলার তদন্ত করে। সেই তদন্তে নেমে বেনাচাপড়ায় কঙ্কাল উদ্ধার হয়। ২০১১ সালের ৫ জুন উদ্ধার হয় সেই কঙ্কাল। পরে ১১ অগস্ট তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরের বছর ৩ ফেব্রুয়ারি তাঁর জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট। তবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় না ঢুকতে পারবেন না, দেওয়া হয়েছিল এমন শর্ত। পরে সুপ্রিম কোর্ট সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বেনাচাপড়া ফেরেন সুশান্ত।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: ৩৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাতের নজিরবিহীন নির্দেশ দিল হাইকোর্ট