Calcutta High Court: ৩৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাতের নজিরবিহীন নির্দেশ দিল হাইকোর্ট
Calcutta High Court: আইন অনুযায়ী, ২৮ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাতে অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু গর্ভবতী মহিলার শারীরিক পরিস্থিতির জন্য এই অনুমতি দিল হাইকোর্ট।
কলকাতা : ভারতীয় আইন অনুযায়ী, ২৪ সপ্তাহের পর গর্ভপাতে অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে আদালতের নির্দেশে অনুমতি দেওয়া হল ৩৪ সপ্তাহের গর্ভবতী এক মহিলাকে। শারীরিক সমস্যার কারণেই এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট এই নজিরবিহীন নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। গর্ভপাতের জন্য নিজেই আবেদন করেছিলেন ওই মহিলা। তাঁর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী সুতপা সান্যাল। রাজ্য সরকারের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখেই এই গর্ভপাতে অনুমোদন দেয়নি রাজ্য সরকার। এরপরই ওই মহিলা আদালতের দ্বারস্থ হন।
আদালতের নির্দেশে এ ভাবে গর্ভপাত করানোর ঘটনা নতুন নয়। যদিও ৩৪ সপ্তাহ পর এই অনুমতি অনেকটাই নজিরবিহীন। গর্ভবতী মহিলার সম্মত্তি নিয়েই বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা।
কেন এই আবেদন?
উত্তর কলকাতার বাসিন্দা এক মহিলা এই আবেদন জানিয়েছিলেন। বিয়ের পর থেকেই শারীরিক সমস্যা ছিল তাঁর। বেশ কয়েক বছর কেটে গেলেও সন্তান হয়নি তাঁর। অবশেষে অনেক চিকিৎসার পর তিনি গর্ভবতী হন। কিন্তু সন্তান গর্ভে ধারণ করার পর থেকেই শুরু হয় ফের সমস্যা। সময় যত বাড়তে থাকে সমস্যাও তত বাড়তে থাকে।
মামলাকারী বর্তমানে ৩৪ সপ্তাহের গর্ভবতী। বহু বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে তাঁর। যদি না এই মুহূর্তে গর্ভপাত করানো হয়, তাহলে মায়ের জীবনের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। গর্ভস্থ সন্তানেরও শারীর সমস্যা রয়েছে। তাই গর্ভপাতের আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা।
এ দিন বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা সরাসরি মহিলার মতামত জানতে চান। তিনি জানান, গর্ভপাতের ঝুঁকি নিতে রাজি তিনি। এরপরই গর্ভপাতের আর্জি মঞ্জুর করেন বিচারপতি। তবে এর পাশাপাশি গর্ভপাত করার সময় কিছু হলে ওই দম্পতি কাউকে দায়ি করতে পারবে না বলেও নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
কী বলা হয়েছে গর্ভপাত আইনে?
গত বছর গর্ভপাত করানোর সময়সীমায় পরিবর্তন এনেছে কেন্দ্র। এর আগে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের অনুমতি মিললে সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হত। গত বছর তা বাড়িয়ে ২৪ সপ্তাহ করা হয়েছে। ২০২১ সালের গর্ভপাত আইন সংশোধনী অনুযায়ী, ধর্ষিতা, নাবালিকা, শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে অথবা স্বামী মারা গিয়েছেন বা ডিভোর্স হয়েছে, এমন প্রসূতিদের গর্ভপাত করানো যাবে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে। গর্ভস্থ ভ্রূণের বিশেষ ত্রুটি থাকলেও করানো যাবে গর্ভপাত। জীবনের ঝুঁকি থাকলেও এই আইন প্রযোজ্য। সব ক্ষেত্রেই একটি মেডিক্যাল বোর্ড শারীরিক অবস্থা দেখে চূড়ান্ত অনুমতি দেবে।
আরও পড়ুন : Salt Lake Fake Call Center: টেক সাপোর্টের নামে প্রতারণা, তথ্য প্রযুক্তি কেন্দ্রে ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ