ডিপ্রেশনের বাংলা জানি মনখারাপ… এই কবিতা অনেকের মনে গেঁথে রয়েছে। হঠাৎ করে যে ধরনের মনখারাপ হয়, তাকে কি সত্যিই ডিপ্রেশন বা অবসাদ বলা যায়? নানা মুনির নানা মতের মতো এ বিষয়েও অনেক কিছু শোনা যায়। শীতকালে অনেকে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। আরও সহজ করে বললে, শীতে অনেকের মন খারাপ হয়। এর কোনও নির্দিষ্ট কারণ কি রয়েছে? উত্তরটা হ্যাঁ। শীতকাল পড়লে বা শীত বাড়লে অনেকের মন খারাপ হয়। অনেকের মধ্যে অবসাদ দেখা দেয়। এই বিষয়টি তরুণ প্রজন্মের কাছে ‘উইন্টার ব্লুজ়’ নামে পরিচিত। আর চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ‘সিজ়ন্যাল অ্যাফেক্টিভ ডিজ়অর্ডার’ বা ‘স্যাড’ (SAD) বলে। প্রতিবছর এই নির্দিষ্ট সময়ে অনেকেই মন খারাপের সমস্যায় পড়েন। কীভাবে এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেবেন? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইন্ডিয়া টু-ডেকে বেঙ্গালুরুর এক হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ডক্টর শিল্পী সারস্বত বলেছেন, ‘SAD, একটি স্বীকৃত মানসিক স্বাস্থ্যজনিত অবস্থা যা বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করছে। এর দ্বারা মুড প্রভাবিত হয়। এনার্জির মাত্রা কমে। দুঃখ হয়। মন খারাপ হয়।’
শীতকালে এই যে মন খারাপ হয়, বিষন্নতা গ্রাস করে, তা থেকে বেরোনর উপায়ও রয়েছে। এক ঝলকে দেখে নিন বিশেষজ্ঞরা এই পরিস্থিতি থেকে বেরোনর জন্য কী উপায় বলছেন —
১. শীতকালে অবসাদ গ্রাস করলে সেই ব্যক্তিকে প্রাকৃতিক আলোতে সময় কাটানোর চেষ্টা করতে হবে। বাড়ির মধ্যে বা রুমে জুবুথুবু হয়ে বসে থাকলে মন খারাপের মাত্রা বাড়ে।
২. শারীরিক দিক থেকে সক্রিয় থাকতে হবে। নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে। যদি বাড়ির বাইরে সহ্যের বাইরের মতো ঠান্ডা না হয়, তা হলে আউটডোর এক্সারসাইজ করা ভালো। শীতে শরীরে সূর্যের আলো লাগলে মন ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৩. একটি স্বাস্থ্যকর দৈনিক রুটিন শীতে মন খারাপকে কাবুতে রাখতে পারে। দৈনিক খাদ্যতালিকায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফল ও সবজি রাখতে হবে।
৪. নিজেকে ঘরকুনো করে রাখবেন না। সামাজিক কর্মকান্ডে অংশ নিতে পারেন। সমাজমাধ্যমে সময় ব্যয় না করে পরিবার, বন্ধু, পরিজনদের সঙ্গে সময় কাটান। অনেক সময় নিজের অনুভতি কারও সঙ্গে শেয়ার করলেও মন অনেক হালকা হয়।
৫. শীতে মন খারাপের অন্যতম মেডিশন যেন মেডিটেশন। নিয়মিত মেডিটেশন করলে একাগ্রতা বাড়ে। মন খারাপ কমে।
৬. পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে গেলে, শীতে খুব বেশি ড্রিপেশন ঘিরে ধরলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডিপ্রেশনের ওষুধ খেলে উপকার মিলতে পারে।