গত কয়েক বছর ধরে, বিশেষ করে প্যান্ডেমিকের পর থেকে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার বেছে নেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। হলুদ, বেসন এবং অ্যালোভেরার মতো মৌলিক উপাদানগুলির বিশেষ চাহিদা রয়েছে। স্কিনকেয়ারের ক্ষেত্রে কফিও ক্রমবর্ধমান হারে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বেশ কয়েকটি কোম্পানি কফি-ভিত্তিক ক্রিম, লোশন এবং বডি স্ক্রাব নিয়ে আসছে। স্কিনকেয়ার উৎসাহীদের মধ্যে এই প্রোডাক্টগুলোকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষণা বলছে কফি বিনের নির্যাস ত্বকের কোষের শক্তি সংরক্ষণের জন্য দায়ী হতে পারে। এটি রোদে পোড়া এড়াতে এবং সূর্যের অতিরিক্ত এক্সপোজারের ফলে যে লালভাব হতে পারে তা নিরাময় করতেও সাহায্য করে। চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল কমাতেও কফি উপকারি। কফির সাময়িক প্রয়োগে রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধি হয় যা ত্বককে ভেতর থেকে সুস্থ করে তোলে। স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টের ব্র্যান্ড এমক্যাফিনের সিইও তরুন শর্মা জানান যে তাঁরা কফি বিন্স থেকেই তাঁদের প্রোডাক্টগুলো তৈরি করেন।
শর্মা বলেন, “যখন ত্বকের ছিদ্রগুলিতে তেল এবং ধুলো জমে যায়, তখন সেগুলি ছিদ্রকে বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীকালে এই জায়গাগুলো ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন স্থলে পরিণত হয় যা ব্রণের জন্য দায়ী থাকে। কফি নির্যাস এক্ষেত্রে একটি চমৎকার মুখের স্ক্রাব হিসাবে কাজ করে। যা ত্বকের মৃত কোষগুলিকে এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য করে। পাশপাশি জমে থাকা ছিদ্রগুলিকে গভীরভাবে পরিষ্কার করে। যার ফলে কার্যকরভাবে ব্রণের চিকিৎসা করা সম্ভব হয়।”
কসমেটোলজিস্ট পূজা নাগদেব বলেন, “ক্যাফিন ত্বকের জন্য শক্তি বৃদ্ধিকারক হিসেবে কাজ করে। তিনি বলেন যে, আমরা যখন মাস্ক হিসেবে কফি প্রয়োগ করি তখন তা আমাদের মুখের সতেজতা পূরণ করে। কফি ভিটামিন সি এবং ডি ৩ ধারণ করে, যা ত্বকের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর উন্নতিতে সাহায্য করে।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ ইন্দু বল্লানি বলেন, “দিনের একদম শেষের দিকের ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য কুলিং কফি মাস্ক প্রয়োগ করা ত্বকের যত্নের সর্বোত্তম উপায়।”
কফির দুটি জনপ্রিয় রূপ হল আরবিকা এবং রোবস্তা। উচ্চমানের আরবিকা বিন্স রক্ত প্রবাহকে উদ্দীপিত করতে, ত্বকের স্ট্রেচ মার্ক বা বয়সের দাগ ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, রোবস্তা ত্বকের ব্যাকটেরিয়া এবং অমেধ্য দূর করতে সাহায্য করে। এটি রক্ত সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে, যা বার্ধক্য এবং ত্বকের অন্যান্য অবস্থার লক্ষণগুলি হ্রাস করে।
পছন্দসই ফলাফল পেতে কফির সঙ্গে একটি উপযুক্ত বেস ব্যবহার করা একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কফির সঙ্গে ব্যবহার করা যায় এমন কিছু বেস হল মধু, লেবু, চালের গুঁড়া, দুধ, ক্রিম, হলুদ। এই সব আপনার ত্বকের চামড়ার উপর, মুখ এবং ঘাড়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখবেন, এগুলোর মধ্যে যে কোনও একটির পরিমাণ বেশি হলে তা আপনাকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দেওয়া বন্ধ করে দেবে। যদি কেউ কফির মাস্ককে বার বার কোনও নিয়ম না মেনে ব্যবহার করেন, তবেই এমন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আরও পড়ুন: Dark Circle: রান্নাঘরে থাকা আলুই দূর করবে আপনার ডার্ক সার্কেলের সমস্যা! কীভাবে দেখে নিন