Social Media Skin Problem: সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো, রিলস দেখে ত্বকের যত্ন নিচ্ছেন, বিপদ ডেকে আনছেন না তো?

Skin Care Tips: ক্রমাগত প্রসাধনী পণ্য পরিবর্তন, নানা ধরনের প্রসাধনী পণ্যের ব্যবহার আপনার ত্বক, চুলের জন্য কি ঠিক? জানুন ‘সোশ্যাল মিডিয়া স্কিন প্রবলেম’ সম্পর্কে...

Social Media Skin Problem: সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো, রিলস দেখে ত্বকের যত্ন নিচ্ছেন, বিপদ ডেকে আনছেন না তো?
Follow Us:
| Updated on: Aug 04, 2022 | 5:13 PM

মেঘা মণ্ডল

একটা সময় ত্বকের ন্যূনতম যত্ন নেওয়ার অর্থ ছিল সাবান দিয়ে মুখ ধোওয়া আর শীতের দিনে সামান্য কোল্ড ক্রিম। ধীরে-ধীরে প্রসাধনীর বিজ্ঞাপন, বিশেষত টেলিভিশনে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের প্রসাধনীর বিজ্ঞাপন তরুণ প্রজন্মের উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। সেই স্কিন কেয়ারের সংজ্ঞাটাই এখন বদলে দিয়েছে নতুন প্রজন্ম। আর এখান থেকেই তৈরি হয়েছে ‘সোশ্যাল মিডিয়া স্কিন প্রবলেম’। এর পিছনে বড় ভূমিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় ইনফ্লুয়েন্সারদের। ভাবছেন কী এই ‘সোশ্যাল মিডিয়া স্কিন প্রবলেম’? আর এর জন্য কীভাবে দায়ী ইনফ্লুয়েন্সরা? চলুন জানা যাক…

ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবে যে হারে রিলস-এর সংখ্যা বেড়েছে, তাতে কোনওভাবেই এড়ানো যায় না সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের কন্টেন্টের প্রভাব। এই সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের স্টাইল, ফ্যাশন হুবহু ‘কপি-পেস্ট’ করা এখন ট্রেন্ড। এই ইনফ্লুয়েন্সরদের মধ্যে জনপ্রিয়তার শিখরে রয়েছেন বিউটি ব্লগাররা। এই বিউটি ব্লগাররা প্রতিনিয়ত প্রসাধনী পণ্যের রিভিউ, ব্যবহারের পদ্ধতি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। ত্বক ও চুল সম্পর্কিত নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। কখনও ঘরোয়া প্রতিকার, আবার কখনও নামী-দামি ব্র্যান্ডের গুণাবলী হয় তাঁদের রোজের কন্টেন্টের বিষয়। এগুলো চাইলেও এড়িয়ে যেতে পারে না জেন-জ়েড। বরং নতুন প্রজন্ম এই ধরনের কন্টেন্টে দ্বারা ভীষণভাবে ‘ইনফ্লুয়েন্সড’।

Know how skin problem engendered by social media influencers

নতুন প্রজন্মের স্কিন কেয়ার রুটিনে ফেস সিরাম থেকে শুরু করে আইক্রিম, ফেসমিস্ট… সব কিছু রয়েছে। পাশাপাশি তাঁরা নিত্যনতুন পণ্য ব্যবহার করেন। আর তাঁদের প্রভাবিত করছে ওই সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সরাই। তাঁদের তৈরি ভিডিয়ো, রিলস লোভ দেখাচ্ছে সুন্দর ত্বকের। আর এরই পরিণাম ‘সোশ্যাল মিডিয়া স্কিন প্রবলেম’। ত্বকের চরিত্র না জেনেবুঝেই ‘নিখুঁত’ ত্বকের অধিকারী হওয়ার জন্য ঘনঘন প্রসাধনী পণ্যে পরিবর্তন ডেকে আনছে ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি। এরই নাম ‘সোশ্যাল মিডিয়া স্কিন প্রবলেম’।

ক্রমাগত প্রসাধনী পণ্য পরিবর্তন, নানা ধরনের প্রসাধনী পণ্যের ব্যবহার আপনার ত্বক, চুলের জন্য কি ঠিক? এখন যদি আপনি দাবি করেন যে আপনার কাঁচা হলুদ, অ্যালোভেরায় বিশ্বাস বেশি, তাহলে প্রশ্ন: এগুলো যে আপনার ত্বকের জন্য প্রয়োজন, তা জানলেন কীভাবে?

বাজারজাত প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করুন কিংবা কোনও প্রাকৃতিক পণ্যের সাহায্য নিন, সেটা আপনার ত্বকের জন্য উপকারি কি না, সেটা জানা ভীষণ জরুরি। ইন্সটা রিলসের ভরসায় আপনি হয়তো প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে বাড়িতে তৈরি ফেসপ্যাকই ব্যবহার করলেন এবং তারপর দেখলেন আপনার ত্বকের আরও ক্ষতি হয়েছে, তখন কী করবেন? এটাকেই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন ‘সোশ্যাল মিডিয়া স্কিন প্রবলেম’ বলে।

Know how skin problem engendered by social media influencers

এই প্রসঙ্গে TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কৌশিক লাহিড়ির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রতিদিন এমন অনেক রোগী পাই, যাঁরা এই সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করছেন এবং তাঁদের ত্বকের অবস্থা মারাত্মক খারাপ। এরা প্রত্যেকেই তরুণ প্রজন্মের মানুষ।’’

ব্রণ, পিগমেন্টেশন, খুশকি, চুল পড়ার মতো সমস্যাগুলোর জন্য মানুষ ডার্মাটোলিজস্টের সাহায্যের বদলে কেন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েনসের ভিডিয়োর উপর ভরসা রাখছেন? এই প্রসঙ্গে ডঃ লাহিড়ি বলেন, ‘‘এখানে সাধারণ মানুষকে পুরোপুরি দোষ দেওয়া যায় না। আমাদের দেশের জনসংখ্যার তুলনায় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসকের সংখ্যা অনেক কম। সেখানে সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই চটজলদি সমাধান পাওয়া যায়। এই ইনফ্লুয়েন্সর থেকে কন্টেন্টগুলো সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।’’’ বিভিন্ন বিউটি ব্লগার যেভাবে বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন, তা প্রথমত নজরকাড়া। পাশাপাশি তাঁদের দেখানো উপায় সহজেই গ্রহণ করা যায়। কিন্তু এই বিউটি ব্লগাররা কেউই কিন্তু চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ নন—এটা আমরা ভুলে যাই। আর এখান থেকে তৈরি হয় ‘সোশ্যাল মিডিয়া স্কিন প্রবলেম’।

(পরবর্তী পর্ব আগামিকাল)