১ নভেম্বর বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় ভেগান দিবস ( World Vegan Day)। পশু সুরক্ষা এবং নিরামিষ খাবার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেই প্রতি বছর এই দিন পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। দিনটি এমন কিছু মানুষের জন্য স্পেশ্যাল যাঁরা মাছ-মাংস তো দূরের কথা ডিম, পনির, মধু, মেয়োনিজ কিছুই খান না। মূলত প্রাণীর সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও খাবারই তাঁরা খান না (Veganism And Vegan Diet)। এমনকী পশুর চামড়া, উল, সিল্ক থেকে তৈরি কোনও পোশাক, মুক্তোর গয়না কিংবা ঘর সাজানোর জন্য হাতির দাঁতের সামগ্রী এসবও তাঁরা দূরে রাখেন। ১৯৪৪ সালে প্রথম ভেগান সোসাইটি শুরু করেন ডোনাল্ড ওয়াটসন। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে দিনটিকে আর্ন্তজাতিক ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। নিরামিষ খাবার এবং ভেগান খাবারের মধ্যে অনেক ফারাক রয়েছে। নিরামিষাশীরা মাছ, মাংস, ডিম না খেলেও দুধ, পনির এসবই তাঁরা খান। প্রাচীন ভারতেও এই মাছ-মাংস খাবার এতখানি চল ছিল না। নানা নৈতিক কারণে হিন্দু,বৌদ্ধ এবং জৈনদের মধ্যে নিরামিষ খাবারের প্রচলন ছিল। মূলত উদ্ভিদ ভিত্তিক।
জৈন তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথ পাঁচটি মহাব্রতের কথা বলেন। যেখানে জীবের ধর্মই যে পরম সেবা সে কথাই বলা রয়েছে। এছাড়াও প্রাণীহত্যা এই ধর্মে পাপ। তাই কোনও রকম ছোট প্রাণীও যাতে মারা না পরে তার জন্য তাঁরা সব সময় রাস্তায় ঝাড়ু দিয়ে চলতেন। চতুর্থ শতাব্দীর শেষের দিকে তাওয়িজম এবং চাইনিজ বৌদ্ধিজম অনুসারে আমিষ খাবারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। একই সময়ে জাপানেও পশুসামগ্রী বেচাকেনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। প্রাচীন কাল থেকে মিশরে পশুবলি দেওয়ার প্রথা ছিল। মনে করা হত এতে প্রভু সন্তুষ্ট হন। ফেরাউন আখেনাতেন তাতে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। তার যুক্তি ছিল, কোনো মানুষের খুশির জন্য প্রাণী হত্যা পাপের সমতুল্য। এখান থেকেই ভেগানিজমের সূচনা। তবে ভেগান ডায়েট নিয়ে আমাদের মধ্যে কিছু মিথের প্রচলন রয়েছে। যেমন-
প্রোটিনের ঘাটতি– অনেকেরই ধারণা যাবতীয় প্রোটিন থাকে আমিষ আর নিরামিষ খাবারের মধ্যেই। ব্রকোলি, টোফু, মটর, মটরশুঁটি, সামুদ্রিক শৈবাল, ডাল- এই সব ই ভেগান খাবার। আর এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। বরং নিরামিষ খাবারের থেকে বেশি প্রোটিন থাকে এই সব খাবারের মধ্যে।
ওজন কমাতে ভেগান ডায়েট- অনেকেই ভাবেন ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে ভাল হ ভেগান ডায়েট। কারণ ভেগান খাবারে ক্যালোরি কম। এই ধারণাও কিন্তু ভুল। কিছু ভেগান খাবারের মধ্যে ক্যালোরির পরিমাণ যথেষ্ট বেশি থাকে। আর এই সব খাবার খেলে ওজন বাড়বেই।
ভেগানদের মধ্যে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি থাকে- দুধ, পনির এবং দই ক্যালশিয়ামের সবচেয়ে বড় উৎস। কলাই ডাল, পালং শাক, ড্রাই ফ্রুটস, বাদামের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালশিয়াম। এছাড়াও সোয়া দুধ, আমন্ড মিল্কও খেতে পারেন।