ওজন কমানো যে মোটেই সহজ কাজ নয়, তা যাঁরা ডায়েট করছেন তাঁরা হাড়ে হাড়ে টের পান। কারণ ডায়েটের প্রাথমিক শর্তই হল রাশ টানতে হবে লোভে। সেই সঙ্গে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং সময়ে খেতে হবে। কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে ফেলে প্রোটিন, ফাইবার এসব বেশি করে খেতে হবে। যাঁদের নিয়মিত জলখাবারে লুচি-ছোলার ডাল খাওয়ার অভ্যাস তাঁদের য়দি হঠাৎ করেই সকাল হলে একবাটি ওটস ধরিয়ে দেওয়া হয় তাহলে তো অসুবিধে কিছুটা হবেই।
ওটসের স্বাদ তো আর তেলেভাজার মত নয়! এছাড়াও সারাদিনে ফল, জ্যুস, সবজি সিদ্ধ খেয়ে থাকতে অনেকেরই কষ্ট হয়। আর খিদে পেলেই তখন মনে হয় হাতের সামনে যা কিছু রয়েছে সবই একসঙ্গে সাবাড় করে দেবেন। খিদে পেলে প্রথমেই হাত চলে যায় চিপস, চানাচুরের দিকে। তাই য়ে যে টিপস মেনে চলবেন
ফাইবার খান বেশি করে- বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ যাঁরা নিয়মিত ডায়েটের মধ্যে থাকেন তাঁরা প্রতিদিন ফাইবার বেশি করে খান। ফল, শাকসবজি,গোটা দানা শস্য রাখুন। এতে খিদে থাকে নিয়ন্ত্রণে। সেই সঙ্গে জল বেশি করে খান। জুস খান। এতেও কিন্তু খিদে কম পায়। সেই সঙ্গে পেটও থাকে ভর্তি। সময় পেলে খেতে পারেন এক বাটি কর্ন সেদ্ধ। এতেও কিন্তু শরীরের উপকার হয়।
স্যুপ খান- প্রতিদিনের ডায়েটে একবাটি স্যুপ রাখুন। তা হতে পারে শুধু সবজির, কিংবা বানিয়ে নিন সবজি আর চিকেন দিয়ে। এতে পেট ভর্তি থাকে, শরীরের কোনও সমস্যা হয় না। তবে ক্রিম, চিজ দিয়ে বানানো স্যুপ কিন্তু একেবারেই এড়িয়ে চলবেন। ডালের স্যুপ খান। বিভিন্ন ডাল আর সবজি দিয়েও স্যুপ বানিয়ে নিতে পারেন।
স্যালাড খান- দুপুরের খাবারের সঙ্গে অবশ্যই রাখুন। পছন্দের স্যালাড বানিয়ে নিন এক প্লেট। এতেও বেশ অনেকটা সময় খিদে কম পায়। স্যালাডে ক্যালোরির পরিমাণও অনেকটা কম। শসা, পেঁয়াজ, গাজর, টমেটো, লেটুস, ধনেপাতা, মটরশুঁটি, লেবুর রস আর গোলমরিচের গুঁড়ো দিয়ে বানিয়ে নিন এই স্যালাড। অনেক সময় স্যালাডে যোগ করতে পারেন একটা ডিমসেদ্ধ। উপর থেকে ছড়িয়ে দিন অলিভ অয়েল। এতে যেমন পেট ভরে তেমনি কিন্তু অনেকক্ষণ খিদে পায় না। সেই সঙ্গে অনেকটা পরিমাণ ফাইবারও যায় শরীরে।
প্রতিদিন একটা করে লেবু খান- দুপুরের খাবারের পর একগ্লাস ঠান্ডা জলে একটা গোটা পাতিলেবু দিয়ে খান। এচাড়াও খেতে পারেন কমলালেবু। এতে খিদে কম পায় সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি পায় শরীর। রোজ দুপুর কিংবা বিকেলে একবাটি করে আঙুর খেলেও কিন্তু খিদে থাকে নিয়ন্ত্রণে।
ফ্যাট খান- ওজন কমাতে চাইছেন বলেই যে ফ্যাট একেবারে ডায়েট থেকে বাদ দিয়ে দেবেন তা নয়। কিছু ফ্যাট শরীরের জন্য প্রয়োজন। আর তাই লেপটিন অবশ্যই রাখুন খাদ্য তালিকায়। খিদে পেলে যদি পেট খালি রাখেন তাতে কিন্তু আরও বেশি করে চর্বি জমার সম্ভাবনা থেকে যায়। বিভিন্ন বাদাম অল্প করে খান প্রতিদিন। বাদামের মধ্যে থাকা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরের জন্যেও ভাল। এছাড়াও সয়াবিন রাখুন ডায়েটে। প্রতিদিন ৮-১০ টা সোয়াবিন খেতেই পারেন। এতে কিন্তু কোনও সমস্যা হবে না।
খাবার ধীরে খান- অনেকেই খুব দ্রুত খাবার খান। এতে যেমন ভাল করে চিবিয়ে খাওয়া হয় না তেমনই কিন্তু তাড়াতাড়ি খিদেও পেয়ে যায়। বরং খাবার ধীরে ধীরে খান। চিবিয়ে খান। অন্তত ২০ মিনিট সময় খাবারের জন্য রাখুন। এতে হজমও ভাল হবে। সেই সঙ্গে খিদে কম পাবে।