হরগৌরী বা গঙ্গাযমুনা পদটি ঠিক কবে প্রচলন হয়েছিল তা জানা যায় না। তবে এই রেসিপি বাংলার বহু প্রাচীন (Bengali Authentic Recipe) একটি রেসিপি। এই পদে মাছটি যেহেতু একই অঙ্গে দুইটি রূপ ধারণ করে তাই একে হরগৌরী(Horogouri) বা গঙ্গাযমুনা বলা হয়। অতীতে জামাইষষ্ঠীর (Jamaisasthi Recipe) অন্যতম মাছের পদ হত কইয়ের হরগৌরী। কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ীতে বহুযুগ পর্যন্ত জামাইষষ্ঠীর পালনের প্রথা ছিল। জামাইষষ্ঠীর ভোজে অন্যতম পদ থাকত কই মাছের হরগৌরী। আন্দুল রাজবাড়ীতে প্রচলিত ছিল রুই মাছের হরগৌরী। হরগৌরী যে কোন মাছেরই হতে পারে, তবে রুই, বোয়াল, চিতল, ইলিশ, রাইখর ও কই মাছের হরগৌরী বিশেষ জনপ্রিয়। বাংলার বিভিন্ন জমিদার বাড়ী ও বনেদি বাড়ীতে জামাইষষ্ঠী, দুর্গাপুজা ও অন্যান্য বিশেষ অনুষ্ঠানে এই পদটি রান্না হত। হরগৌরী বা গঙ্গাযমুনা বাঙালি হিন্দু রন্ধনশৈলীর অন্তর্গত একটি ঐতিহ্যবাহী মাছের পদ। এই রেসিপি এবছর নিজের জামাইকে ভালবেসে পরিবেশন করতে পারেন। বিচিত্র এই ঐতিহ্যবাহী রেসিপি বানাতে কী কী লাগবে, কীভাবে তৈরি করবেন, তা জেনে নিন…
বাংলার ঐতিহ্যবাহী, অভিনব ও বিচিত্র হরগৌরী রেসিপি বানাতে প্রধান উপাদান মাছ, তবে কই মাছ অগ্রগণ্য। রাইখর মাছের হরগৌরী রান্না করতে গেলে অন্ততপক্ষে সাত-আট ইঞ্চি লম্বা মাছ হলে ভাল। কী কী উপকরণ লাগে, দেখে নেওয়া যাক
উপকরণ
কই মাছ,সর্ষে বাটা, জিরে বাটা, কাঁচালঙ্কা বাটা, কাঁচা লঙ্কা, গুঁড়ো হলুদ, রসুন বাটা, পেঁয়াজ বাটা, তেঁতুলের পাল্প, চিনি, সর্ষের তেল, নুন, জল সামান্য।
পদ্ধতি
প্রথমে কই মাছগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে নুন, হলুদ ও রসুন বাঁটা দিয়ে মেরিনেট করে নেওয়া হয়। তারপর মাছগুলিকে তেলে ভেজে নেওয়া হয়। এরপর সর্ষে বাঁটা, কাঁচা লঙ্কা বাঁটা, আদা বাঁটা হলুদ কষিয়ে নেওয়া হয়। তারপর তাতে জল দিয়ে মাছগুলো ছেড়ে আরও খানিকটা কষানো হয়। তবে মাছগুলি উল্টানো হয় না। এতে মাছের এক পাশটা ঝাল হয়। অন্য পাশের জন্য একটি পাত্রে পেঁয়াজ বাঁটা, আদা বাঁটা, শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো, হলুদ জল দিয়ে কষিয়ে নেওয়া হয়। তারপর তাতে তেঁতুলের রস ও চিনি দেওয়া হয়। খানিক পরে মাখা মাখা হলে তা তুলে প্রথম পাত্রে মাছের উপর ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তারপর মাখা মাখা হলে নামিয়ে নেওয়া হয়। এতে নিচের পাশটা হয় ঝাল ও উপরটা টক।