কৈলাশের পথে পাড়ি দিয়েছেন মা দুর্গা। আবার এক বছরের অপেক্ষা। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে মা-কে বরণ পর্ব। মহিলারা মেতে উঠেছেন সিঁদুর খেলায়। সিঁদুর খেলার পর বাড়ির বড়দের প্রণাম, কোলাকুলি আমর মিষ্টিমুখ…এটাই বাঙালির বিজয়া। বছরের পর বছর ধরে এই রীতি চলে আসছে। মিষ্টিমুখে এখন বাজার চলতি হরেক মিষ্টি জায়গা করে নিলেও কুচো নিমকি আর নারকেল নাড়ুর ঐতিহ্য এখনও ম্লান হয়ে যায়নি। পুজোর আগে থেকেই বাড়িতে চলত নাড়ু তৈরি। বাড়ির সব মহিলারা একসঙ্গে বসে বানাতেন নারকেল নাড়ু, তিলের নাড়ু, আনন্দ নাড়ু, মোয়া ইত্যাদি। নারকেলের বরফি, ছাঁচে ফেলে সন্দেশ এসবও ছিল। এখন ঝামেলার ভয়ে অনেকেই এসব মিষ্টি তৈরি এড়িয়ে যেতে চান। আর নারকেল নাড়ু এখন বাজারেও কিনতে পাওয়া যায়। যদিও বাজারে তৈরি নাড়ু আর বাড়ির বানানো মিষ্টির মধ্যে ঢের ফারাক রয়েছে।
নারকেল নাড়ু
প্রয়োজন মত গুড় ও কোরানো নারকেল একসঙ্গে করে জ্বাল দিতে হবে। জ্বাল দিয়ে যখন দুটো উপকরণই একসঙ্গে পাক হয়ে যাবে তখন তাতে প্রয়োজন মত এলাচ, কাজু কুচো দিয়ে নাড়াতে হবে কিছুক্ষণ। তারপর নামিয়ে ঠাণ্ডা করে ছোট ছোট বলের আকারে গড়ে নাড়ু বানাতে হবে। থালায় ঢেলে বানিয়ে নিতে পারেন বরফিও।
বালুসাই
প্রথমে ময়দা আর বেকিং সোডা একসঙ্গে চেলে নিতে হবে। ৬ চা চামচ ঘি দিয়ে বেশ সময় নিয়ে দু’হাতের তালু দিয়ে ঘসে ঘসে মেশাতে হবে সেটা । দেখতে অনেকটা ব্রেডক্রাম্ব-এর মতো গুড়ো গুড়ো হবে। তখন টকদই দিয়ে আলতো হাতে মাখাতে হবে। তারপর ঢেকে রাখতে হবে আধ ঘন্টা। আধ ঘন্টা পর একটু মেখে ছোট ছোট লেচি নিয়ে দুই হাতের তালু দিয়ে গোল গোল কাবাবের চ্যাপ্টা আকৃতির মতো বানিয়ে মাঝখানে এক আঙ্গুল দিয়ে একটু গর্ত করে দিতে হবে। তেল হালকা গরম হলে তাতে মিষ্টিগুলো দিয়ে বাদামি করে ভাজতে হবে। খুব অল্প আঁচে উল্টে পাল্টে দুই দিক বাদামি করে নেড়ে নেড়ে ভাজতে হবে। তারপর রসে ডোবতে হবে। হালকা গরম অবস্থাতেই রসের মধ্যে দিতে হবে। আধ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। ব্যাস তৈরি মজাদার বালুসাই।
ল্যাংচা
ছানা বানানোর জন্য একটি কাড়াতে দুধ গরম করতে দিন। দুধ ফুটতে শুরু করলে আচঁ ছোটো করে ভিনিগার দিয়ে দুধ কাটিয়ে ছানা হতে দিন। দুধ কেটে পুরোপুরি ছানা হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে আচঁ বন্ধ করে ছাকনি দিয়ে ছেঁকে নিন। ছানা থেকে ভিনিগারের গন্ধ দূর করতে ঠান্ডা জল দিয়ে ছানা ভালো করে ধুয়ে নিন। কিছুটা ছানার জল চেপে চেপে ছাকনি থেকে বের করে ছানা ঢেকে ২-৩ ঘন্টা রেখে দিন যাতে ছানাটা পুরো জলমুক্ত হয়ে যায়। জলমুক্ত ছানাটি একটি প্লেটে রেখে তাতে ময়দা, সুজি, খোয়া ও বেকিং পাউডার যোগ করুন। হাতের তালু দিয়ে ঠেসে ঠেসে মসৃণ মেখে নিয়ে একটি ডো তৈরি করে ১০ মিনিট রেখে দিন। এই সময় একটি কাড়াতে জল, চিনি ও এলাচ একসাথে ফুটিয়ে খুব ঘন বা খুব পাতলা হবে না এমন রস বানিয়ে নিন। ১০ মিনিট পর ডো থেকে অল্প অল্প করে ছানার মিশ্রণ নিয়ে ল্যাংচার আকার দিন। একটি প্যানে সাদা তেল ও ঘি এক সঙ্গে গরম করে ঢিমে আঁচে ল্যাংচা গুলো গাঢ় লাল করে ভেজে নিন। ভাজা ল্যাংচাগুলো গরম গরম চিনির রসে দিয়ে ঘন্টা চারেক ঢেকে রেখে দিন।