আমরা ভারতীয়রা মিষ্টি খেতে এতটাই পছন্দ করি যে, আমরা সবসময় মিষ্টি খাওয়ার অজুহাত খুঁজি। উৎসব হোক বা জন্মদিন, কর্মসংস্থান বা বিবাহ উদযাপনের সুখ, আমাদের প্রতিটি উৎসব “মুখ মিষ্টি করুন” না বললে অসম্পূর্ণ মনে হয়। অতএব, আমাদের দেশের প্রতিটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতেও এমন কিছু বিশেষ মিষ্টি রয়েছে, যার স্বাদ ও রন্ধনপ্রণালী সত্যি অতুলনীয়।
হিমালয়ের ছায়ায় অবস্থিত উত্তরাখণ্ড একটি প্রাকৃতিকভাবে আশীর্বাদপ্রাপ্ত গন্তব্য এবং এটি বেশ কয়েকটি কম পরিচিত মিষ্টির আবাসস্থল। এই ডেজার্টগুলি আপনার ভিজে জল আনবেই এবং এগুলি দেশীয় উপাদানগুলি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। তাহলে আসুন জানা যাক, উত্তরাখণ্ডের মিষ্টি সম্পর্কে।
সিনগাল হল উত্তরাখণ্ডের এক জনপ্রিয় মিষ্টি। এই সুস্বাদু মিষ্টিটি প্রস্তুত করার জন্য কলা, দই, দুধ, সুজি, চিনি এবং এলাচ পাউডার ব্যবহার করা হয়। এগুলিকে একসঙ্গে একটি পুরু ব্যাটারে মিশ্রিত করা হয়। এই নরম, স্পঞ্জি এবং সুস্বাদু মিষ্টিকে সেল রুটিও বলা হয় এবং এটি চা বা পাহাড়ি স্টাইলের আলুর তরকারির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়।
বাল মিথাই, এটি উত্তরাখণ্ডের আলমোরা জেলার একটি বিশেষত্ব। বাল মিথাই খোয়া ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। এর ওপর ছোট ছোট সাদা চিনির বল দিয়ে প্রলেপ দেওয়া হয়। এই মিষ্টির স্বাদ আশ্চর্যজনক এবং যাঁরা মিষ্টি ভালবাসেন তাঁরা বাল মিথাইকেও নিঃসন্দেহে ভালবাসবেন।
এমন কিছু কিছু মিষ্টি রয়েছে যা দেশ জুড়ে বিভিন্ন নামে ডাকা হলেও আদতে তারা এক। এরকমই একটি মিষ্টি হল আরসা। এই আরসা এক প্রকার ভাজা মিষ্টান্ন, যা কেবল উত্তরাখণ্ডে নয়, বরং সারা দেশে জনপ্রিয়। এই মিষ্টিটি চালের ময়দা, গুড় এবং শুকনো ফল দিয়ে তৈরি করা হয়। উত্তরপ্রদেশে একে বলা হয় পুয়া, আবার বিহার এবং মহারাষ্ট্রে এটিকে আনারসা বলা হয়; অন্যদিকে তামিলদের জন্য এটি অধিরাম।
উত্তরাখণ্ডের একটি বিশেষ মিষ্টি হল সিঙ্গোরি। তেহরির “সিঙ্গোরি” রাজতন্ত্রের যুগ থেকে মিষ্টির একটি বিশেষ পরিচয় পাওয়া যায়। সেসময় রাজা মহারাজাদের এই মিষ্টান্নটি খুব পছন্দ হয়েছিল, সেখান থেকেই এই মিষ্টির নাম সিঙ্গোরি। আজ, বিয়ে হোক বা অন্য কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান, অতিথিদের পাতে অবশ্যই পরিবেশত হয় সিঙ্গোরি।
সিঙ্গোরি একটি বিশেষ ধরণের মিষ্টি, যা মাওয়া থেকে প্রস্তুত করা হয়। এই মিষ্টির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এটি মালু পাতায় মুড়ে পরিবেশিত হয়। উৎসবের মরসুমে এটি বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়। উত্তরাখণ্ডের জঙ্গলে সারা বছর এই মালু গাছ পাওয়া যায়। এই পাতার বিশেষত্ব হল যে এটি দ্রুত নষ্ট হয় না। জঙ্গল থেকে আনার ১৫ দিন পরেও এটি সবুজ থাকে। আর এই পাতার গন্ধই সিঙ্গোরির স্বাদ আরও বাড়িয়ে তোলে।
আরও পড়ুন: বিরিয়ানির শেষপাতে ‘ফিরনি’র গল্প জানেন?
আরও পড়ুন: জানেন কি কোন খাবারগুলি বেনারসের অলিতে গলিতে জনপ্রিয়?