জলই জীবন। কিন্তু সেই জলের জন্যই আজকাল পয়সা খরচা করতে হয় শহরবাসীকে। তবে এক লিটার জলের দাম ২০ টাকার বেশি নয়। বড়জোর ৩০। কিন্তু সেই জলের বোতলের দাম যখন হাঁকে ৪৪ লক্ষ টাকা! শুনেই অবাক হচ্ছেন তো?৭৫০ এমএল জলের দাম যদি এমন মাত্রাছাড়া হয় তখন মনে হতেই পারে নিশ্চয় দামী হিরে, জহরত মেশানো রয়েছে এই জলে। ২০১০ সালে গিনেস বুক অফ রেকর্ডে এই জলকেই বিশ্বের সবচেয়ে দামী জলের আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ভাবছেন তো কেন এই বোতলটির দাম মাত্রাছাড়া?
সমপ্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানেই দেখা গিয়েছে রিলাায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের ডিরেক্টর নীতা আম্বানি অ্যাকোয়া ডি ক্রিস্টালো ট্রিবুটোর একটি মোডিগ্লিয়ানি বোতল হাতে ধরে আছেন। যদিও পরবর্তীতে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের আইনি দল পরে এই ধরনের দাবি খারিজ করেছে এবং বলেছে যে ছবিটি মর্ফ করা হয়েছে।
কিন্তু কেন এমন আকাশছোঁয়া দাম, জানেন কি?
এই বোতলটি পুরোটাই মুড়ে ফেলা হয়েছে ২৪ ক্যারেট সোনায়। আছে প্ল্যাটিনাম আর ডায়মন্ডও। আর বোতলটি তৈরি করেছেন বিখ্যাত বোতল ডিজাইনার ফার্নান্দো আলতামিরানো। প্রয়াত ইতালীয় শিল্পী অ্যামেডিও ক্লেমেন্টে মোদিগ্লিয়ানিকে শ্রদ্ধা জানাতেই এই বোতল বানিয়েছেন ফার্নান্দো ।২০১০ এর ৪ মার্চ বোতলটি মেক্সিকোতে ৬০ হাজার মার্কিন ডলারে নিলাম হয়। যদিও এই নিলামের পুরো অর্থই দান করা হয় গাছ লাগানোর জন্য।
বলা হয় যে এই জলে মেশানো থাকে একেবারে প্রাকৃতিক ঝর্নার জল। যা নিয়ে আসা হয় ফ্রান্স ও ফিজি থেকে। এছাড়াও এতে মেশানো হয় ৫ গ্রাম ২৩ ক্যারেট সোনার ভস্ম। সঙ্গে থাকে আইসল্যান্ডের হিমবাহের জল। আর এই সোনা যখন প্রাকৃতিক জলের সঙ্গে মেশে তখন তার ক্ষারত্ব যেমন বাড়ে তেমনই কিন্তু বিশ্বের অন্য যে কোনও পানীয়ের থেকেও বেশি শক্তিশালী এই জল। সেই সঙ্গে এর উপকারিতাও অনেক বেশি। এই জল খেলে কোনও দিন কোনও রকম হজমের সমস্যা আসবে না। সেই সঙ্গে এই জলের স্বাদও অন্য জলের থেকে আলাদা।
একেবারে খাঁটি জলের মিশ্রণেই যে এই বিশেষ জল তৈরি তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সেই সঙ্গে এমন জল কিন্তু চাইলেই পাওয়া যায় না। সেই সঙ্গে যখন মিশছে স্বর্ণভস্ম তখন তার দাম যে এমন মাত্রাছাড়া হবে সে তো বলাই বাহুল্য। এছাড়াও সোনা কিন্তু আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। সোনার মধ্যে অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। যে কারণে ক্ষত নিরাময়ে ব্যবহার করা হয় সোনা। কোশ বিভাজনেও সাহায্য করে সোনা। এমন জল খুঁজেও আর পাবেন না, দাবি নির্মাতাদের।