থ্রিফ্ট শপিং এখনও করেননি? থ্রিফ্ট শপিংয়ে পিছিয়ে নেই ভারত

TV9 বাংলা ডিজিটাল : শপিং করতে ভালোবাসেন? মনের মত জিনিস মনের মত দামে কিনতে চান? তাহলে আপনার জন্য  উপযুক্ত ‘থ্রিফ্ট শপিং’ (Thrift shopping )। কারও ব্যবহার করা জিনিস যদি কম দামে আপনি কিনতে চান, তাহলে থ্রিফ্টিং আপনার জন্য পারফেক্ট। ব্যবহার করা জিনিস কেন কিনবেন, সেটা ভাবছেন তো? তাহলে আগে জেনে নিন থ্রিফ্ট শপিং কাকে বলে? […]

থ্রিফ্ট শপিং এখনও করেননি? থ্রিফ্ট শপিংয়ে পিছিয়ে নেই ভারত
থ্রিফ্ট শপিং এক নতুন ট্রেন্ড (সৌজন্যে- TV9 বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক)
Follow Us:
| Updated on: Nov 23, 2020 | 4:47 PM

TV9 বাংলা ডিজিটাল : শপিং করতে ভালোবাসেন? মনের মত জিনিস মনের মত দামে কিনতে চান? তাহলে আপনার জন্য  উপযুক্ত ‘থ্রিফ্ট শপিং’ (Thrift shopping )। কারও ব্যবহার করা জিনিস যদি কম দামে আপনি কিনতে চান, তাহলে থ্রিফ্টিং আপনার জন্য পারফেক্ট।

ব্যবহার করা জিনিস কেন কিনবেন, সেটা ভাবছেন তো? তাহলে আগে জেনে নিন থ্রিফ্ট শপিং কাকে বলে?

উনিশ শতকের শেষ দিকে আমেরিকাতে বিপুল পরিমাণে অভিবাসনের সময় ‘থ্রিফ্ট স্টোর’ চালু হয়েছিল। ১৯১৯ সালে থ্রিফ্ট স্টোর শব্দটির উৎপত্তি হয়। পশ্চিমের দেশগুলিতে থ্রিফ্ট শপিং ও থ্রিফ্ট স্টোর ভীষণ জনপ্রিয়। যদিও গত কয়েক বছরে ভারতেও থ্রিফ্ট স্টোরের সংখ্যা বেড়েছে। থ্রিফ্ট স্টোরে মুলত পাওয়া যায় ব্যবহৃত জামাকাপড়, ঘর সাজানোর জিনিস, ইলেকট্রনিক্স, খেলনা, জুতো ইত্যাদি। যে সকল পণ্য় পুনর্ব্যবহারযোগ্য, সেগুলিই পাওয়া যায় থ্রিফ্ট স্টোরে। কিন্তু থ্রিফ্ট স্টোর থেকে জামাকাপড় কিনতেই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।

এক সময় সেকেন্ড হ্যান্ড জিনিস বিক্রি করে যে টাকা উঠত, তা দিয়ে কোনও প্রতিষ্ঠান বা চার্চের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা হত। বর্তমানে থ্রিফ্ট শপিং এক ধরনের ব্যবসা। লক্ষ্য করা গেছে থ্রিফ্ট শপিংয়ের ক্ষেত্রে টিনএজাররাই বেশি আগ্রহী। বেশিরভাগ থ্রিফ্ট স্টোরগুলি চালান মহিলারা।

সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘোরাফেরার ফাঁকে টুক করে অনলাইন শপিং সেরে ফেলতে আজকাল পছন্দ করেন অজস্র মানুষ। অফলাইন থ্রিফ্ট স্টোর থেকে শপিং তো আছেই, বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও থ্রিফ্ট শপিং করা সম্ভব। ইনস্টাগ্রামে থ্রিফ্ট স্টোর এখন ভীষণ জনপ্রিয়।

কম দামে ভাল জিনিসপত্র কেনাকাটা করে রেট্রো, ভিন্টেজ লুকে নিজেকে দেখতে চাইলে থ্রিফ্ট শপিং করতেই পারেন। ‘সেকেন্ড হ্য়ান্ড’ বলে মুখ না-বেঁকিয়ে বরং সাধ্যের মধ্যে মূল্যবান জিনিস কেনার জন্য থ্রিফ্ট স্টোরের কথা ভাবতেই পারেন। থ্রিফ্ট শপিংয়ের ক্রেতা হিসেবে পুরুষদের থেকে কিন্তু মহিলারাই এগিয়ে রয়েছেন। থ্রিফ্ট স্টোরে কালেকশন কম থাকে বলে প্রতি সপ্তাহে এখানে স্টক ‘রিফ্রেশড’ হয়। বর্তমানে বেশ কয়েকজন পেশা হিসেবে এবং অনেকে পার্ট টাইম কাজ হিসেবেও বেছে নিচ্ছেন থ্রিফ্ট শপিংকে।

আরও পড়ুন:রিভেঞ্জ নিতে এখনও ঘুরতে বেরোননি? রিভেঞ্জ ট্র্য়াভেলে এবার সামিল ভারত  

করোনার জেরে সারাদেশ জুড়ে লকডাউন চললেও থ্রিফ্ট শপিং থেমে থাকেনি। ইন্টারনেটের দৌলতে ইনস্টাগ্রামে থ্রিফ্ট শপিং এখন দারুণ জনপ্রিয়। ইনস্টাগ্রামে থ্রিফ্ট স্টোর খুলে সফল বেশ কয়েকজন তরুণীর মধ্যে অন্য়তম হলেন মণিপুরের বাসিন্দা লুসিল খাবাং। ২৫ মার্চ লুসিল @lulu_thrift_ নামে ইনস্টাগ্রামে অ্য়াকাউন্ট খোলেন, এখন যার ফলোয়ার ৯৫০৩। প্রতি সপ্তাহে নতুন কালেকশনের পোস্ট দেন লুসিল। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১৪,০০০-১৮,০০০ টাকার ‘কালেকশন’ হয় এই মণিপুরি তরুণীর।

চন্ডীগড়ের @aurathriftstore এমনই একটি থ্রিফ্ট স্টোর, যা অক্টোবরে অন্যা এবং অদা লথ গুপ্তা দুই বোন মিলে খুলেছে। তাদের ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ার এখন ১১৯৪। লকডাউনের সময় তারা তাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে তাদের ব্যাক্তিগত পণ্যসামগ্রী সংগ্রহ করে বিক্রি করা শুরু করে।

@kismet.e.kheer থ্রিফ্ট স্টোরের রিয়া চৌধুরি ও লক্ষিতার মতে ইনস্টাগ্রামে থ্রিফ্ট স্টোরের পণ্যের ছবি আকর্ষনীয় হতে হবে।তাহলে ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে। রিয়া ও লক্ষিতা লক্ষ্য করেছেন তাদের ক্রেতাদের প্রায় ৫৪% ১৮-২৪ বছর বয়সী এবং ৩০% ক্রেতা ২৫-৩৪ বছর বয়সী। আগষ্টে শুরু হওয়া এই ইনস্টাগ্রাম থ্রিফ্ট অ্যাকাউন্টের বর্তমানে ফলোয়ার ১৩৫০।

চেন্নাইয়ের শ্রুতি অশোক এপ্রিল মাসে “দি কাইন্ডনেস ফাউন্ডেশন”-কে সাহায্য করার জন্য ইনস্টাগ্রাম পেজ @therelovecloset চালু করে। এই থ্রিফ্ট স্টোর থেকে ৭ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন তিনি। যা ঐ ফাউন্ডেশনের হাতে শ্রুতি তুলে দেন। বর্তমানে এই থ্রিফ্ট অ্যাকাউন্টের ফলোয়ার ৪৩৩৭।

ইনস্টাগ্রামে এরকম প্রচুর থ্রিফ্ট স্টোর রয়েছে। যেখান থেকে সারা ভারতে সেকেন্ডহ্যান্ড পণ্য বিক্রি করা হয়ে থাকে। থ্রিফ্ট স্টোরে পুরনো জিনিস বিক্রি করা হলেও অত্যন্ত যত্নের সাথে সেটি ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়া হয়। যে কেউ থ্রিফ্ট স্টোর খুলে নিজে ব্যবসা করতে পারেন। এর পাশাপাশি কোন প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তাও করতে পারেন। এবার তাহলে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে থ্রিফ্ট শপিং করে নস্টালজিয়ায় গা ভাসাবেন কি না আপনিও একবার ভেবে নিন।