থাইল্যান্ডের দক্ষিণের এই শহরের ঘুম ভাঙে ভোর ৪টেয়। ডিম সাম হল, ভিনটেজ ক্যাফে এবং স্ট্রিট ফুডের দোকানিরা তৈরি করেন ব্রেকফাস্ট। চার দিকে তাকালেই জ্বালানির আগুন আর ধোঁয়া। ম-ম করছে রোস্টেড মাংসের গন্ধ। এক দিকে কাটা শুয়োরের মাংস ঢুকছে জ্বালানিতে, অন্য দিকে ভাত গরম হচ্ছে, আবার কোথাও নুডলস্ সেদ্ধ হচ্ছে। শুয়োরের মাংস কেটে, কুচি-কুচি করে ঝোলানো আছে দোকানের সামনে।
ট্রাঙ্গ শহরে ভোর ৫টা থেকেই ভিড় জমান পর্যটকরা। আপনি শুধু ডিম সাম হলেই কাটিয়ে দিতে পারেন গোটা একটা দিন। ব্রেকফাস্টে পাবেন স্টিম নুডলস্, রাইস পরিজ্, কফি এবং স্যুপ, ক্রিসপি বা ডিপ-ফ্রায়েড ময়দা। ফ্রায়েড শুয়োর এখানে কিলোগ্রাম হিসেবে বিক্রি হয়। বিভিন্ন প্রকার সি-ফুড পাওয়া যায়। থাইল্যান্ডের ট্রাঙ্গ শহরের ব্রেকফাস্টের সুখ্যাতি পৃথিবী জোড়া। কিন্তু কেন এই শহরের ব্রেকফাস্টের কথা এত চর্চিত?
আরও পড়ুন: ইয়ট কোয়ারেন্টাইনের হাত ধরে থাইল্যান্ড পর্যটনে নতুন জোয়ার
খাদ্যপ্রেমী তথা খাদ্য-ঐতিহাসিক খানপুরী জঞ্জিরদাসকের কথায়, “ট্রাঙ্গ শহরের রেস্তোঁরাগুলি বিভিন্ন জায়গার কর্মচারিকে নিয়ে কাজ করেন”। কিন্তু এই ট্রাঙ্গ শহর ব্রেকফাস্টের জন্য উন্মাদ কেন? এর উত্তরে এক খাদ্যবিক্রেতা বলেন, “রাবার ট্রেপার্স, এক ব্যবসায়ী এখানের ২টোর সময় ঘুম থেকে ওঠেন। বাজার থেকে ফেরার সময় লোকজন এসে এখানে খাওয়াদাওয়া করেন। এখানে সবসময় মানুষের আনাগোনা”।
আরও পড়ুন: চাঁদে বেড়াতে যাবেন জাপানের ধনকুবের, সঙ্গে নেবেন আটজনকে
দেশান্তরের সময় এই শহরের খাবারের ওপরে খুব বড় করে প্রভাব পড়েছে। ১৫ শতাব্দিতে চিন-থাইল্যান্ডের ব্যবসা, বাণিজ্য এবং কাজের ধরণের মিলমিশ হয়। এর ফলে হাক্কা, হোক্কেইন এবং তেওঁক চিনের খাদ্যাভ্যাস ধীরে ধীরে মিশে যায় এখানে। তবে পালটে যায় নামটা।
আগে পর্যটকরা চা খেতে আসতেন এই শহরে। এখন ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা অবধি গমগম করে ট্রাঙ্গ। স্কুলের পড়ুয়া, পরিবারের লোকজন, বন্ধু-বান্ধব বা পর্যটক– নানা ধরণের মানুষ আসেন এখানে। এখানকার দোকানগুলো বাঁশ দিয়ে তৈরি কুড়ে ঘরের মতো। যদিও সাধারণ থাই মধ্যাহ্নভোজ এখানে ব্রেকফাস্টের মধ্যেই ধরা হয়। থাইল্যান্ড বেড়াতে গেলেন অথচ ট্রাঙ্গ ঘুরলেন না, তবে আপনার ঘোরা যেন ষোল আনাই বৃথা।