হিন্দু ত্রিত্বের প্রধান দেবতা হলেন বিষ্ণু। এমনকী বিশ্বের রক্ষকও মনে করা হয় তাঁকেই। যে কারণে প্রায় সব পুজোর মন্ত্র-আরাধনাতে বিষ্ণু থাকেন একেবারে উপরে। বিশ্বজুড়েই কদর রয়েছে বৈষ্ণবধর্মের। এমনকী বৈষ্ণবধর্ম হিন্দুধর্মের মধ্যে অনুসরণ করা ঐতিহ্যগুলির মধ্যে একটি। বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাব রয়েছে ভারতের শিল্প-সাহিত্যে। দেশ-বিদেশ জুড়ে রয়েছে বিষ্ণু এবং তাঁর দশ অবতারের মন্দির।
কম্বোডিয়ার আঙ্কোর ভাট হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় মন্দির, যা বিষ্ণুর প্রতি উৎসর্গীকৃত। বিষ্ণুর অন্যান্য বিখ্যাত মন্দিরের মধ্যে রয়েছে পান্ধরপুরের বিঠল মন্দির, বরধরাজ পেরুমল মন্দির কাঞ্চিপুরম, বিশাখাপত্তনমের সিংহাচলম মন্দির, নৈমিসারণ্য বিষ্ণু মন্দির, বাদামি গুহা মন্দির, শিবনামা মন্দির, শিবমন্দির মন্দির প্রমুখ। আছে খজুরাহোর বরাহ মন্দির এবং ভুবনেশ্বরের বিষ্ণু মন্দির। ভারতে প্রায় ১৫ টি মন্দিরে বিষ্ণুর আরাধনা করা হয়। প্রধান আরাধ্য দেবতা তিনিই। তার মধ্যে ধরা রইল বিখ্যাত ৫ মন্দির। ইতিহাসের সাক্ষী হতে অবশ্যই একবার ঘুরে আসুন
বদ্রীনাথ মন্দির- চারধাম যাত্রার অন্যতম ধাম। শ্রীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে নিবেদিত এই মন্দিরটির কথা বহু প্রাচীন শাস্ত্রে ও পুরাণে উল্লেখ রয়েছে। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা আকর্ষণীয় গল্প ও ধর্মীয় বিবরণ। সমুদ্রতল থেকে ৩৩০০ মিটার বা ১০,৮২৬ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত চারধাম মন্দির। চারধামের বাকি মন্দিরগুলি দ্বারকা, পুরী ও রামেশ্বরমের থেকে বদ্রীনাথের পার্থক্য হল যে একমাত্র এই মন্দিরটিই প্রচণ্ড শীতের কারণে বছরে ছয় মাস বন্ধ থাকে। শীতকালে বরফ পড়ে বদ্রীনাথে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। ভাগবত্ পুরাণ, স্কন্দ পুরাণ এবং মহাভারতে উল্লেখ রয়েছে বদ্রীনাথ মন্দিরের। পদ্মপুরাণেও বদ্রীনাথের আশপাশের অঞ্চল পবিত্র ক্ষেত্র বলে উল্লেখ করা আছে।
রঙ্গনাথস্বামী মন্দির, শ্রীরঙ্গম- দক্ষিণ ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত বৈষ্ণব মন্দির হল রঙ্গনাথস্বামী মন্দির। রঙ্গনাথকেই উৎসর্গদ করা হয়েছে এই মন্দিরে। আর এই মন্দির হল সবচেয়ে উঁচু রাজকীয় মন্দির। এর নির্মাণ শৈলী চোখে পড়ার মত।
পদ্মনাভ স্বামী মন্দির- ত্রিবান্দমের পদ্মস্বামী মন্দির খুবই বিখ্যাত এবং পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় একটি পর্যটন কেন্দ্র। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মন্দির হল এই পদ্মনাভ স্বামী মন্দির। কন্যাকুমারীর পেরুমাল মন্দির এবং কাসারগোদের অনন্তপুরম মন্দিরের দক্ষিণ ভারতের হিন্দু বৈষ্ণব ধর্মের পবিত্র স্থান।
ভেঙ্কটেশ্বর মন্দির, তিরুমালা- অন্ধ্রপ্রদেশের এই মন্দির পর্যটকদের অন্যতম প্রিয় একটি পর্যটন কেন্দ্র। সারা বছর এখানে প্রচুর মানুষ আসেন। ভেঙ্কটেশ্বর মন্দির বালাজি মন্দির নামেও পরিচিত। এটিও ভারতের অন্যতম ধনী মন্দির এবং বছরে আয়েরও অঙ্কও হিসেব করা কঠিন।
পুরী- নীলাচল ধাম বলে পরিচিত হলেও জগন্নাথ দেব আসলে বিষ্ণুরই অবতার। এই মন্দিরও বিষ্ণুকেই উৎসর্গ করা হয়েছে। চার ধামের মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাম হল এই জগন্নাথ ধাম। শ্রীকৃষ্ণের আবাসভূমি হিসেবেও পরিচিত পুরী।