রাত পোহালেই দোল (Holi 2022) উৎসব। কিন্তু আপনার রঙ খেলার অনীহা। তারপরেও হাতে রয়েছে শনিবার ও রবিবার। অফিসের এই তিনদিনের ছুটি এভাবে নষ্ট করবেন? শরীরে রঙ লাগানো যদি পছন্দ না করেন, তাহলে মন রঙ লাগাতে ঘুরে আসুন পলাশের দেশে (Purulia)। অনেক দূর ভাবছেন? কলকাতা (West Bengal Tourism) থেকে ঘণ্টা পাঁচেকের রাস্তা বড়ন্তি (Baranti)। এটাই তো সেই ‘পিন্দারে পলাশের বন’, যেখানে আপনি অনায়াসে পালিয়ে যেতে পারবেন।
পুরুলিয়ার ছোট্ট গ্রাম বড়ন্তি। গ্রামবাংলার বসন্ত যে এত সুন্দর এ গ্রামে এলেই আপনি সেটা টের পাবেন। রাঙা মাটির ধুলো ওড়ানো পথ এঁকে বেঁকে চলে গিয়েছে। বসন্তের ছোঁয়া লেগেছে শিমুল, পলাশে। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে ছোট্ট ছোট্ট ঢিলা। আর রয়েছে শান্ত শীতল হ্রদ। আদিবাসীদের এত ছোট্ট গ্রাম হতে পারে আপনার দোলের উইকেন্ড ট্যুর।
হাওড়া চক্রধরপুর এক্সপ্রেসে সোজা পৌঁছে যান আদ্রা জংশন। সেখান থেকে লোকাল ট্রেনে করে চলে আসুন মুরাডি। কিংবা আসানসোল হয়েও পৌঁছে যেতে পারেন মুরাডি। মুরাডি থেকে ৬ কিলোমিটারের বড়ন্তি। বড়ন্তি ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে স্বাগত জানাবে লাল পলাশ। দোলের রঙ শরীরে না লাগলেও, আপনার মনকে ছুঁয়ে যাবে বসন্তের এই রঙ।
মুরাডি থেকে কাঁচা পাকা রাস্তা ছেড়ে ধুলো ওড়ানো রাঙা মাটির পথ ধরে যেতে যেতে চোখে পড়বে আদিবাসীদের গ্রাম। এর মাঝে পথ যেখানে থমকে দাঁড়াবে, আপনার নজর কাড়বে এক শান্ত, শীতল জলাভূমি। এটাই হল বড়ন্তি লেক। যদিও এই জলাভূমির নাম রামচন্দ্রপুর জলাধার।
প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার এক অনবদ্য ঠিকানা বড়ন্তি। পাহাড় বললে একে ভুল হবে। তবে এর মধ্যে দিয়ে ছোট্ট একটা ট্রেক করতে নিতে পারেন। শাল, পিয়াল, পলাশ, আকাশমণি, মহুয়ার ঘন জঙ্গলের মধ্যে হাঁটতে বেশ রোমাঞ্চকর লাগবে। এই পথ ধরেই আপনি নেমে যেতে পারেন পাহাড়ে নীচে। ওখানেই রয়েছে বড়ন্তি গ্রাম। মুরাডি পাহাড়ের পথ ধরে অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারেন বড়ন্তি গ্রামে। হাঁটা পথে সময় লাগে ওই মিনিট পঁয়তাল্লিশ।
কংক্রিটের শহর থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির কোলে হারিয়ে যাওয়ার ঠিকানা বড়ন্তি। জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যখন হাঁটবেন, আপনার কান ব্যস্ত থাকবে পাখিদের কলরব। শীতের শুরু থেকেই নাম না জানা বহু পাখি ভিড় করে বড়ন্তি লেকে। বসন্তের সময় গেলেও দেখা মিলবে তাদের। একাধারে শিমুল, পলাশের মেলা, মাঝে গাঢ় নীল রঙা লেক আর এর মাঝে আকাশে আগুনের ছটা ফেলে সূর্য অস্ত নিচ্ছে। এমন দৃশ্য মিস করলে চলে বলুন তো?
বড়ন্তির এক দিকে রয়েছে বিহারিনাথ পাহাড় আর অন্যদিকে পাঞ্চেত ড্যাম। কাছেই রয়েছে গড়পঞ্চকোট আর জয়চণ্ডী পাহাড়। এখান থেকে অনায়াসে ঘুরে আসতে পারেন কল্যাণেশ্বরী মন্দিরও। একই সঙ্গে ঘুরে নিতে পারেন মাইথনও। দু রাত্রি তিন দিনের এই দোলের ট্রিপে মন ভরে যাবে আপনার।
আরও পড়ুন: ‘নবাবগড়ে’ নবাবি ঢঙে দোল! সপ্তাহান্তের ছুটিতে ঘুরে আসুন মুর্শিদাবাদ
আরও পড়ুন: শান্তিনিকেতন নয়, দোলে এবার ঘুরে আসুন বাংলার ‘প্রাচীনতম’ পাহাড়ে