Holi 2022: ‘নবাবগড়ে’ নবাবি ঢঙে দোল! সপ্তাহান্তের ছুটিতে ঘুরে আসুন মুর্শিদাবাদ

Murshidabad: ভাগীরথীর তীরে নবাবী ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে একসঙ্গে নিয়ে বেঁচে রয়েছে মুর্শিদাবাদ।

Holi 2022: 'নবাবগড়ে' নবাবি ঢঙে দোল! সপ্তাহান্তের ছুটিতে ঘুরে আসুন মুর্শিদাবাদ
হাজারদুয়ারি প্রাসাদ, মুর্শিদাবাদImage Credit source: delhi metro times
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 16, 2022 | 3:01 PM

দু’ দিন পরই দোল (Holi 2022)। তারপরই রয়েছে শনিবার ও রবিবার। এমন সুযোগ হাতছাড়া না করাই ভাল। তাছাড়া এখন সেরকম গরম পড়েনি যে আপনি ছোট্ট একটা ট্যুরের কথা ভাববেন না। রঙ খেলা যদি পছন্দ না করেন, তাহলেই এই ছুটিটা কাজে লাগিয়ে ঘুরে আসুন নবাবদের শহরে। না, পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) বাইরে যেতে হবে না। এই বাংলার মধ্যে রয়েছে নবাবগড়। ভাগীরথীর তীরে নবাবী ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে একসঙ্গে নিয়ে বেঁচে রয়েছে মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)।

পশ্চিমবঙ্গের এই শহরের অলি-গলি এখনও কথা বলে ওঠে ইতিহাসের। এক সময় বাংলার নবাবদের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ। অতীতের মুকসুদাবাদই হল আজকের মুর্শিদাবাদ। আপনি যদি এই বাংলার ইতিহাসের খোঁজে থাকেন, দু রাত্রি তিন দিনে অনায়াসে ঘুরে ফেলতে পারবেন মুর্শিদাবাদ। কোথায় যাবেন, খরচ কত- রইল যাবতীয় তথ্য…

ইতিহাস বলছে ১৭২৭ সালে মুর্শি‌দকুলি খানের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ। ভাগীরথীর তীরে গড়ে ওঠা এই শহর সেই সময় ছিল এক সমৃদ্ধ বাণিজ্য কেন্দ্র। এই শহরে পা রাখলে আপনি টের পাবেন সেই সব ইতিহাসের। আর যদি ইতিহাস দিয়েই শুরু করতে হয় মুর্শিদাবাদ ভ্রমণ, তাহলে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র ও মিউজিয়াম হাজারদুয়ারি প্রাসাদে চলে যান। ত্রিতলবিশিষ্ট এই প্রাসাদে রয়েছে এক হাজারটি দরজা, যার মধ্যে ৯০০টি আসল  এবং ১০০টি নকল। নবাব হুমায়ূন জা-এর আমলে ১৮২৯ থেকে ১৮৩৭ সালের মধ্যে তৈরি হয়েছিল এটি। বর্তমানে এটি একটি মিউজিয়াম, যেখানের বিভিন্ন গ্যালারিতে রয়েছে বহু ছবি, অস্ত্রশস্ত্র, পোশাক, বই, পুঁথি, সিংহাসন, ঝাড়বাতি, মার্বেলের মূর্তি, আসবাবপত্র ইত্যাদি। এখানে রাখা প্রতিটি জিনিসের ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক মূল্য কোনও দিক দিয়ে কম নয়। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা অবধি খোলা থাকে হাজারদুয়ারি।

আর হাজারদুয়ারির ঠিক বিপরীতে রয়েছে ইমামবাড়া। সাদা রঙের এই বিশাল প্রাসাদে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। শুধু মহরমের সময়ই এখানে আপনি যেতে পারবেন। তবে এখানে আরেকটি দর্শনীয় বস্তু হল ঘড়ি মিনার। হাজারদুয়ারির মাঠে ইমামবাড়া ও প্রাসাদের মধ্যিখানে রয়েছে এই ঘড়ি মিনার। হাজারদুয়ারির ঠিক উত্তর দিয়ে রয়েছে একটি বড় কামান, যা পরিচিত বাচ্চাওয়ালির তোপ নামে।

মুর্শিদাবাদ শহরের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে নবাব সিরাজ-উদ-দ্দৌলার নাম। আর এই শহর আজও সিরাজ-উদ-দ্দৌলার সময়কার একমাত্র স্মৃতি বহন করে চলেছে, যা হল মদিনা। শোনা যায়, সিরাজ-উদ-দ্দৌলা নাকি নিজে মাথায় করে কারবালা থেকে মাটি নিয়ে এসেছিলেন এই মদিনার জন্য। তাই মুর্শিদাবাদ যখন যাওয়ার প্ল্যান করছেনই তখন বাদ দেবেন না এটা।

মুর্শিদাবাদের আরেকটি জনপ্রিয় স্থান হল কাঠগোলা বাগানবাড়ি। সুন্দর বাগান দিয়ে সাজানো এই প্রাসাদও ইতিহাস বহন করে চলেছে বহু বছর ধরে। আর যদি বাংলার ইতিহাস জানতে আরও আগ্রহী হন তাহলে ঘুরে আসতে পারেন মতিঝিল। এই হ্রদে রয়েছে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা হয় এই শহরের ইতিহাস। হাতে সময় থাকে তাহলে মুর্শিদাবাদ থেকে ঘুরে আসতে পারেন কাশিমবাজার রাজবাড়ি।

কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন-

শিয়ালদহ থেকে হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেসে চড়ে পৌঁছে যেতে পারেন মুর্শিদাবাদ। এরপর একটি টোটো বা গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে ঘুরে দেখুন এই নবাবদের শহর। হাজারদুয়ারি প্রাসাদের আশে-পাশেই পেয়ে যাবেন প্রচুর হোটেল। জনপ্রতি এখানে থাকা খাওয়া মিলিয়ে প্রতিদিন খরচ ১০০০-১২০০ টাকা।

আরও পড়ুন: শান্তিনিকেতন নয়, দোলে এবার ঘুরে আসুন বাংলার ‘প্রাচীনতম’ পাহাড়ে