ফেসবুকের ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস, উইকএন্ড গ্রুপগুলোতে সন্ধান চলছে ধোত্রের। কীভাবে যাওয়া যায়, কত খরচ পড়তে পারে এবং হোম-স্টের সন্ধান। পাশাপাশি যাঁরা এর আগে ধোত্রে গিয়েছেন, তাঁদের পোস্টেও বইছে কমেন্ট, লাইকের বন্যা। কিন্তু কেন? শীতের আমেজ বঙ্গে না এলেও, দার্জিলিংয়ের কোলে বসে দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনকন্যাকে। ডিসেম্বরের শেষে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের প্রায় হোটেল, হোমস্টের বুক হাউসফুল। কিন্তু অফবিটের নেশায় বাঙালির মন পড়ে রয়েছে ধোত্রেতে।
সান্দাকফু ট্রেকিং রুটের অন্যতম ডেস্টিনেশন ধোত্রে। মানেভঞ্জনের পর ধোত্রে, চিত্রে, টংলু, টুমলিং, কালাপোখরি পেরিয়ে পৌঁছাতে হয় সান্দাকফু। ট্রেকিং সবার জন্য নয়। কিন্তু তা বলে, ধোত্রে, চিত্রে, টংলু ঘুরে দেখবেন না, তা হয় নাকি। টংলু, টুমলিং পাহাড়প্রেমীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু মন পড়ে থাকে ধোত্রেতে। বাংলার বুকে এমন সুন্দর পাহাড়ি গ্রাম আর দ্বিতীয় নেই বললেই চলে। তাছাড়া শীতকালে তুষারপাতও হয় ধোত্রেতে। সেই কারণেই হয়তো পর্যটকেরা আরও ডিসেম্বরে ছুটে যেতে চান সেই গ্রামে।
প্রায় ৮,৫৩০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত ধোত্রে। এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, ধোত্রের কোলে বসে দেখা মেলে কাঞ্চনজঙ্ঘার। সান্দাকফু ট্রেকিং রুটের সবচেয়ে নিচু পর্যটন কেন্দ্র এই ধোত্রে। কিন্তু এখান থেকে স্লিপিং বুদ্ধার যে অসাধারণ দৃশ্য দেখা যায়, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আর ছবি তোলার জন্যও আদর্শ এই পাহাড়ি গ্রাম। সে বরফে মোড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা হোক রাতে তারায় ভরা আকাশ—ধোত্রে থেকে যে ছবিই তুলবেন, তা হয় অনবদ্য। তাই ফেসবুকের ভ্রমণ সংক্রান্ত গ্রুপে ধোত্রের পোস্ট ভাসে লাভ রিয়্যাক্টে।
ধোত্রের জনসংখ্যা হাতে গোনা। তাই খুব বেশি থাকার জায়গার অপশন নেই। যেহেতু শীতের ছুটিতে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে, তাই আগে থেকে হোমস্টে বুক করে যাওয়াই ভাল। হোমস্টেতে বসে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাবেন। তার সঙ্গে পাবেন বাড়ির বাগানে অরগ্যানিক পদ্ধতিতে চাষ করা ফল ও সবজি। সিঙ্গলিলা জাতীয় উদ্যানের কোলে অবস্থিত হওয়ায় গোটা গ্রাম ঘেরা পাইনে। তার সঙ্গে রং-বেরঙের অর্কিড ও ডেইজি ফুলও রয়েছে। রডোডেনড্রনের গাছ থাকলেও শীতকালে ফুলের দেখা মিলবে না। তার জন্য আপনাকে যেতে হবে মার্চ কিংবা এপ্রিল মাসে।
ডিসেম্বরে ধোত্রেতে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। যদিও ভ্রমণপিপাসু বাঙালি তার তোয়াক্কা করে না। বরং ধোত্রতে দাঁড়িয়ে দার্জিলিং, সুখিয়াপোখরি, টংলুর পাহাড় দেখতে দেখতে ঠান্ডাকে অনুভব করতে বেশ মজাই লাগবে। এছাড়া ডিসেম্বরের ঠান্ডাকে উপভোগ করতে করতে হেঁটে চলে যেতে পারেন টংলু। ধোত্রে থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটারের পথ। মানেভঞ্জন থেকে ধোত্রের দূরত্ব মাত্র ২০ কিলোমিটার। তবে, নিউ জলপাইগুড়ি বা দার্জিলিং থেকে ধোত্রেতে যাওয়ার সরাসরি গাড়িও পেয়ে যাবেন।