উত্তরাখণ্ডের মানা গ্রামকে বলা হত ‘ভারতের শেষ গ্রাম’। কিন্তু এখন মানাই ভারতের প্রথম গ্রাম। গ্রামে ঢোকার পথে যে বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের যে বোর্ড টাঙানো রয়েছে, তাতে ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় লেখা রয়েছে, ভারতের প্রথম গ্রাম মানা। প্রথম হোক বা শেষ, মানা গ্রামের গুরুত্ব কোনওভাবেই কমেনি। বরং, পর্যটন শিল্পে নাম কেড়েছে মানা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে পুরাণেরও যোগ রয়েছে মানা গ্রামের সঙ্গে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, ‘ভারতের প্রথম গ্রাম’ সম্পর্কে কিছু আকর্ষণীয় তথ্য…
১) উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় অবস্থিত মানা গ্রাম। ভারত-তিব্বত বর্ডারে অবস্থিত ‘ভারতের প্রথম গ্রাম’। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০,৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মানা গ্রাম।
২) মানা গ্রাম থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত বদ্রীনাথ। যাঁরা বদ্রীনাথে তীর্থ বা বেড়ানোর উদ্দেশ্যে আসেন, অনেকেই ঘুরে যান মানা গ্রাম। আকারে ছোট হলেও মানায় পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে।
৩) চারদিক তুষারাবৃত পাহাড় আর মাঝে সবুজ উপত্যকা—এই নিয়ে গঠিত মানা গ্রাম। তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকে আপনাকে কখনওই নিরাশ হতে হবে না মানায় এসে।
৪) ইতিহাসের দিকে দিয়েও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে ‘ভারতের প্রথম গ্রামের’। মনে করা হয়, এটি ভারতের অন্যতম পুরনো গ্রাম।
৫) এই মানার সঙ্গে যোগ রয়েছে পুরাণেরও। মনে করা হয়, এই মানা গ্রাম হল পঞ্চপান্ডবদের জন্মস্থান। আবার অনেকের ধারণা, পাণ্ডবরা স্বর্গে যাওয়ার সময় এই গ্রাম অতিক্রম করেছিলেন।
৬) পর্যটনের দিক দিয়েও মানা গ্রাম আপনাকে নিরাশ করবে না। তপ্ত কুন্ড জলপ্রপাত, সরস্বতী নদী এসব ঘুরে দেখতে পারেন মানা গ্রাম থেকে। এছাড়া মানা গ্রামে রয়েছে বেশ কিছু ট্রেকিং রুট। বদ্রীনাথ ছাড়াও আপনি মানা থেকে যেতে পারেন নীলকন্ঠে। নীলকন্ঠকে বলা হয় ‘গাড়োয়ালের রানি’।
৭) যেহেতু মানা গ্রাম ভারত ও তিব্বত সীমান্তের কাছে অবস্থিত, তাই এই পাহাড়ি গ্রামে তিব্বতীদের সংস্কৃতির ছোঁয়াও লক্ষ্য করা যায়। দুই সংস্কৃতির স্থাপত্য, খাবার, সংস্কৃতি সবকিছুই দেখা যায় মানা গ্রামে। এসব দেখতে আরও পর্যটকদের ভিড় হয় ‘ভারতের প্রথম গ্রামে’।
৮) ঋষিকেশ, হরিদ্বার, দেরাদুন—উত্তরাখণ্ডের জনপ্রিয় শৈলশহরগুলো থেকে সহজেই আপনি মানা গ্রামে পৌঁছে যেতে পারেন। মানা প্রায় ২০০ কিলোমিটারের পথ এসব শৈলশহরগুলো থেকে। যে কোনও রেল স্টেশন বা বিমানবন্দর থেকে প্রাইভেট গাড়ি বুক করে আপনি সরাসরি পৌঁছে যেতে পারেন ‘ভারতের প্রথম গ্রামে’।